দৈনিকবার্তা-ঢাকা,১৯ আগষ্ট: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন,বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশেই বিচারপতিদের অভিসংশনের ক্ষমতা সংসদের হাতে আছে৷সেটা বাংলাদেশেও ছিল৷ কিন্তু ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান এ আইনটি পরিবর্তন করেন৷ সরকার তার এই ভুল সিদ্ধান্তটাকে সংশোধন করছে মাত্র৷
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলের ওয়াপদা ভবনে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন৷ ১৫ আগস্ট জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের ৩৯তম শাহাদাত্ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় বিদু্যত্ শ্রমিক লীগ৷
বিচারপতিদের অভিসংসনের একটা বিল মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছে৷এটাকে বাকশাল কায়েমের জন্য বিএনপি মহাসচিবের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে, গণতন্ত্রের কথা বলে৷ আপনি মুখে বলবেন গণতন্ত্রের কথা আর পক্ষ নেবেন স্বৈরশাসকের এটা হতে পারে না৷ আপনি যদি বুঝে বলে থাকেন তাহলে,এই দ্বৈতনীতি থেকে বেরিয়ে আসুন৷ আমরা যখন জনগণের ম্যান্ডেটে গঠিত সংসদের হাতে ক্ষমতা দিই, তার বিরোধিতা করেন৷ একসঙ্গে দুই নীতি চলে না৷
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন,যারা কেক কেটে জন্মদিন পালন করে জাতিকে বিভক্ত করেছে তাদের সঙ্গে আর কখনো আলোচনা হতে পারে না৷তিনি বলেন, কালনাগিনির বিষ ছাড়া খালেদা জিয়া আর কিছুই দিতে পারেনি৷ এ কালনাগিনির বিষবাষ্প বাংলার মানুষ আর দেখতে চায় না৷
মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, কয়েকদিন আগে জাতীয় সমপ্রচার নীতিমালার অনুমোদন হয়েছে, তারা এর বিরোধীতা করছে৷হানিফ প্রশ্ন করেন, এটা কি আমরা দিয়েছি? এটা টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ চেয়েছে বলে আমরা দিয়েছি৷ ওই নীতিমালা আমরা করিনি৷ মালিকপক্ষ, সাংবাদিক, শিক্ষক ও এনজিও কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত একটা বোর্ডের মাধ্যমে এ নীতিমালা করা হয়েছে৷
বিচারপতিদের অভিশংসনের একটা বিল মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছে৷ এটাকে বাকশাল কায়েমের জন্য বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব৷ তিনি আবার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করেন! বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে, গণতন্ত্রের কথা বলে৷ আপনি মুখে বলবেন গণতন্ত্রের কথা আর পক্ষ নেবেন স্বৈরশাসকের এটা হতে পারে না৷
জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের নিয়ে আপনারা যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চান, সে স্বাদ বাংলার মানুষ আপনাদের পূরণ করতে দেবে না বলেও স্পষ্ট করেন হানিফ৷
হানিফ বলেন, বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক দেশেই বিচারপতিদের অভিশংসনের অধিকার সংসদের হাতে আছে৷সেটা বাংলাদেশেও ছিল৷কিন্তু ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান এ আইনটি পরিবর্তন করেন৷ আমরা তার এই ভুল সিদ্ধান্ত সংশোধন করছি মাত্র৷
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিদু্যত্ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, যারা বিভিন্ন সময় আমাদের পরামর্শ দেন তাদের দেশেই বঙ্গবন্ধুর খুনীরা আশ্রয় নিয়েছে৷ কিন্তু তারা সে ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না৷
বিদু্যত্ শ্রমিকদের কোম্পানি না করার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুত্ প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেক বার অনেক যায়গা থেকে বলা হয়েছে, আমরা যেন এগুলো (পিডিবি) থেকে পরিবর্তনের দিকে যাই৷ পরিবর্তন করা দরকার৷ কিন্তু প্রশ্ন, আমরা কেন এভাবেই রেখে পরিবর্তন করি না৷ পিডিবি কর্মকর্তা কর্মচারিরা পরিশ্রম করে ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার মেগওয়াট বিদু্যত্ উত্পাদন করতে পারলে আমরা কেন কোম্পানীতে যাব?৷তিনি বলেন, পিডিবিকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করার ষড়যন্ত্র যাতে আর না হয় সেজন্য আপনাদের সজাগ সতর্ক থাকতে হবে৷
জাতীয় বিদু্যত্ শ্রমিক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক আযম খসরু প্রমুখ৷