দৈনিকবার্তা- ঢাকা,১৭আগষ্ট : মন্ত্রিপরিষদে পাস হওয়া জাতীয় সমপ্রচার নীতিমালা বাংলাদেশের সংবিধান ও গণতন্ত্র বিরোধী বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া৷রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন৷
ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, সংবিধানের ৩৯ নং অনুচেছদে স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার সংরক্ষিত আছে৷ কিন্তু সমপ্রতি যে জাতীয় সমপ্রচার নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে সেটি সংবিধানের এই অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক৷ সুতরাং এটি সংবিধান ও গণতন্ত্র বিরোধী৷
সমপ্রচার নীতিমালার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবৈধ সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে একের পর এক আইন তৈরি করছে৷একইভাবে গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করার জন্য সমপ্রচার নীতিমালা প্রণয়ন করেছে৷তিনি আরো বলেন,আমরা জনগণের কথা বলি এক সময় দেখা যাবে যে আমাদের কথাও তারা প্রচার করতে দিচ্ছে না৷
দেশকে গণতন্ত্রহীন করতে সরকার একের পর এক আইন করছে বলে অভিযোগ করেন ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম ৷এর বিরুদ্ধে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহবানও জানান তিনি৷ একই সঙ্গে ১৫ আগস্ট চাঁদাবাজি করে আওয়ামী লীগ তাদের নেতাকে (শেখ মজিবুর রহমান) অসম্মান করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি ৷
বর্তমান সরকারের আমলে হিন্দু সমপ্রদায়ের মানুষজন বেশি নির্যাতিত ও তাদের সহায়-সম্পদ বেদখল হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি৷তিনি আরো বলেন,এভাবে গোটা প্রশাসনকে তারা দলীয়করণ করে ফেলেছে৷ এই সরকারের আমলে এক হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে৷ অযোগ্য কর্মকর্তাদের প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছে৷ সেজন্য প্রশাসন চলছে না৷
সীমাহীন দুর্নীতি করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই সমপ্রচার নীতিমালা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের ম্যানডেড ছাড়া, ভোট ছাড়া, নির্বাচন ছাড়া ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ছাড়া ক্ষমতা দখল করা সরকার নিজেদের অপকমের্র কথা জনগণের কাছে পৌঁছাতে দেবে না বলেই জাতীয় সমপ্রচার নীতিমালা করেছে৷ এর মধ্য দিয়ে তারা নির্বিঘ্নে ক্ষমতায় থাকতে চায়৷
ব্যারিস্টার রফিক আরো বলেন,এই নীতিমালা যদি আর কয়েক মাস আগে করত তাহলে নারায়ণগঞ্জের ৭ হত্যাকাণ্ডের খবর জনগণ জানতে পারত না৷ কারণ, নীতিমালায় বলা হয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে কিছু লেখা যাবে না৷ অর্থাত্ ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত র্যাব কর্মকর্তাদের বির”দ্ধে কোনো কথা সংবাদপত্র লিখতে পারতো না৷
বিচারকদের অভিসংশন আইনের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোটের্র এই সিনিয়র আইনজীবী বলেন, সংবিধানের ৯৬ নং অনুচেছদে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতায় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ন্যাস্ত করা হয়েছে৷ কিন্তু সরকার এখন এই ক্ষমতা পার্লামেন্টের হাতে ছেড়ে দিতে চায়৷ কারণ, বিচার বিভাগকে দলীয় লোক নিয়োগ দিয়েও সরকার এখন ভরসা পাচ্ছে না৷ তারা মনে করছে হয়তো এই বিচারকরা বিবেকের তারণায় সত্য রায়টি দিয়ে দিতে পারে৷ তাই বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ করতে অভিসংশন আইন পাস করতে যাচেছ৷
জাতীয় মানবাবিধকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ড.রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা দেন বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকন, সহ-দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম,জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য নীব উল্লাহ নবী প্রমুখ৷