দৈনিকবার্তা- ঢাকা,১৭আগষ্ট : দেশের ৬৩ জেলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীনের (জেএমবি) সিরিজ বোমা হামলা ঘটনায় করা মামলার বিচার কাজ ৯ বছরেও শেষ হয়নি৷সাক্ষী না পাওয়ার কারণেই এসব মামলার বিচার শেষ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ রেজাউল রহমান৷এদিকে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, দেশে এখন জেএমবির তত্পরতা না থাকলেও আন্তর্জাতিক জঙ্গি চক্র বা রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় যেকোনো সময় আবারো তাদের পুনরুত্থান ঘটতে পারে৷
১৯৯৮ সালে শায়খ আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে ইসলামী আইন বাস্তবায়নের নামে জেএমবি সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল৷ ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩ জেলায় ৬৩৪টি স্থানে একযোগে বোমা হামলা চালায় তারা৷ এ হামলায় দুই জন নিহত হওয়াসহ আহত হয় দুই শতাধিক মানুষ৷ এ ঘটনায় মামলা হয় ১৫৮টি আর এর মধ্যে ১৫৪টি মামলার তদন্তকাজ শেষ হলেও, শেষ হয়নি বিচারকাজ৷ জেএমবি প্রধান শায়খ আব্দুর রহমান ও বাংলা ভাইসহ ৬ জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হলেও দীর্ঘ নয় বছরেও অধিকাংশ মামলার বিচারকাজ শেষ হয়নি৷ সাক্ষীকে খুঁজে না পাওয়ায় এসব মামলা ঝুলে আছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ রেজাউল রহমান৷
রেজাউল রহমান বলেন, বিভিন্ন জেলায় মামলা হওয়াতে সেখানকার পুলিশ প্রশাসন এবং পাবলিক প্রসিকিউটাররা এ মামলাগুলো করছেন৷ কাজেই এটা ওভার অল একটি লিয়াজুর ব্যাপারে ও সমন্বয়ের ব্যাপারে কিছু সমস্যা রয়েছে৷জেএমবিসহ সবধরনের জঙ্গি সংগঠনগুলোর নেটওয়ার্ক ভেঙে দেয়া হয়েছে–জানিয়ে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, সারাদেশে জোরালো মনিটরিং থাকায় জঙ্গিদের তত্পরতা এখন শূন্যের কোঠায়৷ তিনি বলেন, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা হঠাত্ সংগঠিত হতে পারে৷ তবে বড় কোনো ঘটনা ঘটানোর মতো এখন এদের (জঙ্গি) ক্ষমতা নেই বলে আমরা মনে করি৷ ফলে বলা যায়, এখন আইনশৃঙ্খলা পুরোপরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে৷ তবে অনূকুল পরিবেশ, পৃষ্ঠপোষকতা, অনুপ্রেরণা, আর্থিক সহায়তা পেলে আবারও জঙ্গিবাদের উত্থান হতে পারে৷ ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার আরো বলেন,ইতোমধ্যে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তাদের অর্থের জোগানদাতাদেরও খুঁজে বের করা হচ্ছে৷ এদিকে,কৌশলে কর্মী সংগ্রহ করে আবারো সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ জেএমবি),নয় বছর আগে যে সংগঠনটি সারাদেশে একযোগে সিরিজ বোমা হামলা চালিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল৷
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, জেএমবির পলাতক সদস্যরা দেশের বিভিন্ন জেলায় ছদ্মবেশে কর্মী সংগ্রহ করছে৷ কেউ কেউ আবার যোগ দিয়েছেন অন্য কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনে; গত দুই বছরে এসব দলের তত্পরতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বিভিন্ন ঘটনায়৷ র্যাব বলছে, বড় ধরনের নাশকতা চালানোর সক্ষমতা এসব সংগঠনের না থাকলেও বিচ্ছিন্নভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের৷র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান বলেন, আমাদের গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য আছে,আবারো সংগঠনের কর্মী বাড়িয়ে সক্রিয় হতে শুরু করেছে জেএমবির পলাতক সদস্যরা৷ কারাগারে থেকে নেতারা কৌশলে তাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন৷ জিয়াউল আহসান বলেন,মূলত উত্তরের জেলাগুলো জঙ্গি সংগঠনগুলোর কর্মী সংগ্রহের মূল জায়গা৷ এই কর্মী সংগ্রহ অভিযান মূলত ছদ্মবেশে চলে৷ বরাবরের মতোই দেশকে অস্থিতিশীল করতে ভিআইপিদের টার্গেট করতে চায় তারা৷
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ময়মনসিংহের ত্রিশালে নজিরবিহীন এক ঘটনায় পুলিশের প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে এক কনস্টেবলকে খুন করে তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয় জেএমবি সদস্যরা৷ ওই তিন জঙ্গির মধ্যে সালাউদ্দিন সালেহীন ওরফে সানি (৩৮) এবং রাকিবুল হাসান ওরফে হাফেজ মাহমুদ (৩৫) মৃতু্যদণ্ডে দণ্ডিত৷অন্যজন জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমারু মিজান (৩৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত৷
একটি মামলায় হাজিরার জন্য গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে তিনজনকে ময়মনসিংহের আদালতে নেয়ার পথে ছিনতাইয়ের ওই ঘটনা সারা দেশে তোলপাড় তোলে৷ ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন রাকিবুল৷ সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি এবং ২ লাখ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করেও বাকি দুজনের কোনো খোঁজ পায়নি পুলিশ৷ গত বছর আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ও বিইএম নামে দুটি নতুন জঙ্গি সংগঠনের তত্পরতা ধরা পড়ে, কয়েকজন নেতা গ্রেপ্তারও হন৷
রাজধানীতে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান জসীম উদ্দিনের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে দুই মন্ত্রীসহ ১২ জনের নামের একটি তালিকা পাওয়া যায়, যাদের হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে পুলিশের ধারণা৷ ওই তালিকায় কয়েকজন মন্ত্রীর নামও ছিল বলে সে সময় জানিয়েছিল পুলিশ৷ এছাড়া বগুড়ায় বিএমই নামে নতুন একটি জঙ্গি সংগঠনের দুটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা জেএমবির আদলে সংগঠিত হওযার চেষ্টা করছে বলে সে সময় র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়৷এরপর চলতি বছর এপ্রিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ এবং প্রতিকার কমিটির এক সভায় জইশ-ই-মোহাম্মদ, আল্লার দল, হিযবুল মুজাহিদিন, কালেমা-ই-জামাত, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ও হিযবুল মাহাদীর নাম জঙ্গি সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধের তালিকায় উঠে আসে৷ এছাড়া বেশ কয়েকটি সংগঠনের ওপর বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে বলেও সে সময় জানান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল৷নজরদারিতে থাকা ২৪ সংগঠনের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরও ছিল৷
হিযবুত তাহরীর,শাহাদাত-ই-আল হিকমা, জামায়াতে মুজাহেদিন বাংলাদেশ ( জেএমবি), হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজি) ও জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ ( জেএমজেবি)- এই পাঁচটি সংগঠনকে জঙ্গি তত্পরতায় জড়িত থাকায় আগেই নিষিদ্ধ করেছে সরকার৷র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান বলেন, জিএমবি জঙ্গিদের এবার নাশকতার পরিকল্পনা খুব বড় পরিসরে নয়৷ তারা বরং ক্ষুদ্র পরিসরে কিছু ঘটানোর চেষ্টা করছে বলে তথ্য আছে৷তিনি জানান, কারাগারে থাকা জঙ্গিরা যেমন সংগঠনকে সক্রিয় করতে চাইছে, তেমনি পলাতক ও জামিনে থাকারাও আবারো দলে কর্মী সংগ্রহে কাজ শুরু করেছে৷
গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম শনিবার পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, রক্তপাতের মাধ্যমে কথিত ইসলামী বিপ্লব ঘটিয়ে জেএমবি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যেতে চায়৷ তবে বর্তমানে তাদের সাংগঠনিক অবস্থা অনেক দুর্বল৷বড় ধরনের আর্থিক সহায়তা বা পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তারা আবারো সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে৷ ২০০৫ সালে দেশব্যাপী বোমা হামলা চালিয়ে আলোচনায় উঠে আসে জেএমবি৷ ওই হামলায় আল্লাহর দল ও হরকাতুল জিহাদ নামের দুটি সংগঠন তাদের সহায়তা করেছিল বলে জানান মনিরুল ইসলাম৷ তিনি বলেন, কেবল ব্যক্তিগত বিরোধ ও নিজেদের ভেতর কোন্দলের কারণে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন আলাদা নামে পরিচালিত হচ্ছে৷ আবার ব্যক্তিগত সুসম্পকের্র কারণে তারা পরস্পরকে বিভিন্ন সময়ে সহায়তাও করছে৷ নাম আলাদা হলেও সবার উদ্দেশ্যই এক৷ তা হল ‘থিত জিহাদ ঘটিয়ে রক্তপাতের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা৷ র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, জেএমবিসহ সব ধরনের জঙ্গি সংগঠনের তত্পরতা বন্ধে র্যাব ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কঠোর অবস্থানে আছে৷ তাদের প্রতিরোধ এবং পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করা হবে৷
এই র্যাব কর্মকর্তা জানান, নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টায় জেএমবি টাকা পাচ্ছে কোত্থেকে- সেটি এখন খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে৷২০০৫ সালের ১৭ অগাস্ট দেশের ৬৩টি জেলায় একই সময়ে বোমা হামলা চালায় জেএমবি৷ এতে সারাদেশে ২ জন নিহত ও ৫০ জন আহত হন৷ওই ঘটনায় ১৬১টি মামলা হয়, যার ১০২টির রায় ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে৷ এসব রায়ে ১৫ জনকে মৃতু্যদণ্ড ও ১১৮ জনকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে আদালত৷ এছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে ৯৯ জনকে৷অপরাধ প্রমাণ করতে না পারায় আসামিদের মধ্যে ১১৮ জন খালাস পেয়ে গেছেন৷ জামিনে রয়েছেন ৩৫ জন, ৫৩ জন পলাতক৷ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু বলেন, ১৭ অগাস্টের ঘটনায় ৫৯টি মামলা এখনও বিচারাধীন৷ সাক্ষীরা সময় মতো সাক্ষ্য দিলে আশা করছি এ বছরই রায় আসতে পারে৷২০০৬ সালের ২ মার্চ সিলেটের পূর্ব শাপলাবাগ এলাকার সূর্যদীঘল বাড়ি থেকে জেএমবির আমীর শায়খ আবদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব৷ ঘটনার তিনদিন পর সংগঠনের দ্বিতীয় প্রধান সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাইকে গ্রেপ্তার করা হয় ময়মনসিংহের রায়পুর মুক্তাগাছা এলাকা থেকে৷
জেএমবি জঙ্গিরা ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে জেলার সিনিয়র সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাঁড়ের গাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করে৷ ওই মামলার রায়ে মৃতু্যদণ্ড হওয়ার পর ২০০৭ সালের মার্চ ৩০ শায়খ আবদুর রহমান ও বাংলাভাইসহ ছয় শীর্ষ জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হয়৷ র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান,বিভিন্ন সময়ে তাদের হাতে সর্বমোট ৫৮৭ জন জেএমবি জঙ্গি গ্রেপ্তার হয়েছে৷ ঢাকার নিম্ন আদালতের আইনজীবী প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের ও অভিযোগপত্র দেয়ার ক্ষেত্রে এর ৪০ ধারা অনুযায়ী জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমতি নিতে হয়৷কিন্তু আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অনেক ক্ষেত্রে তা না করায় অনেক জঙ্গি জামিন পেয়ে যায়৷ এদিকে, দিনাজপুরেনিষিদ্ধ ঘোষিত ইসলামী জঙ্গী সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন (জেএমবি)সহ বিভিন্ন নামে সক্রিয় ৩০ জন জঙ্গি সদস্যকে পুলিশ খুঁজছে৷এছাড়া জেলার স্পর্শকতর স্থান ও জনবহুল এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং নজরদারি জোরদার করা হয়েছে বলে পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে৷জেলার পুলিশ সুপার রুহুর আমিন জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে পুনরায় বিভিন্ন নামে জঙ্গি সদস্যরা সক্রিয় হয়ে নাশকতামূলক কর্মকান্ড চালানোর চেষ্টা করছে৷
এদিকে, দেশের বিভিন্নস্থানে আইন শৃংখলা বাহিনী সক্রিয় জঙ্গি সদস্যদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে৷ সেই লক্ষ্যেই সারা দেশে জঙ্গী সদস্যদের নাশকতা কার্যক্রম ঠেকাতে নজরদারী বাড়ানো হয়েছে৷জেলার গুরুত্বপূর্ণস্থান রেলওয়ে ষ্টেশন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারী ডিগ্রি কলেজ, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, সদর হাসপাতাল, পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া তাপ বিদু্যত্ কেন্দ্র ও কয়লা খনি এবং মধ্যপাড়া কঠিন শিলা প্রকল্প, হিলিস্থল বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারী বাড়ানো হয়েছে৷ এছাড়াও শহরের পুলিশ, র্যাব সদস্যদের টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে৷ সূত্রটি জানায়, ২০০৫ সালের ১৭ আগষ্ট বেলা ১১ টায় সারা দেশের ন্যায় দিনাজপুর শহরের জঙ্গী সংগঠনের সদস্যরা এক যোগে ১১টি স্থানে ১২টি বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল৷ ওই মামলায় পুলিশ তদনত্ম করে ৮ জন সক্রিয় জঙ্গী সদস্যের বিরম্নদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন৷ মামলাটি দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩ আদালতে দীর্ঘসময় বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়৷
গত ২০১২ সালের ৩১ অক্টোবর ওই আদালতের বিচারক মোঃ গাজী রহমান ৮ জন আসামীর মধ্যে কারাগারে আটক ৭ জনকে খালাসের রায় দিয়ে পলাতক আসামী আফজাল আবেদিনকে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং ১ লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের কারাদন্ডের রায় প্রদান করেন৷এই চাঞ্চল্যকর মামলার কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামী আফজাল আবেদিন শহরের ক্ষেত্রিপাড়া মহলস্নার জয়নাল আবেদিন মধুর পুত্র৷ ঘটনার পর থেকেই সে পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে পলাতক রয়েছে৷ আফজাল ২০০১ সালে জেলা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে সভাপতি পদে ছিল৷ গত ৯ বছরেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি৷ শহরের ক্ষেত্রিপাড়া মহলস্নার একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ২ বছর পূর্বে আফজাল এর পিতা জয়নাল আবেদিন মারা যাওয়ার পর তার দাফন কার্য ও পরবর্তীতে কুলখানিতে এবং প্রায় সময়ই তার বাড়ীতে ও জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন নেতাকর্মীর সাথে আফজালের উপস’িতি দেখা গেছে৷অপরদিকে ওই মামলায় কারাগারে আটক ছিল এবং পরবর্তীতে বিচারে খালাস পেয়েছে এই ৭ জনসহ জেলায় গ্রেফতার হওয়া প্রায় ৩০ জন জঙ্গী সদস্য জেল হাজত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাদেরকে পুলিশ গ্রেফতারের জন্য খোঁজ করে কোন হদিস পাচ্ছে না৷
গত ২০০৩ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যনত্ম জঙ্গি সংগঠনের সাথে জড়িত এ ধরনের আরো ২৩ জন সদস্য জেলার বিভিন্ন থানা থেকে আটক করে সন্ত্রাস দমন আইনে জেল হাজতে আটক ছিল৷ সকলেই জেল হাজত থেকে মুক্তি পেয়ে পুনরায় গাঁ ঢাকা দিয়েছে৷ এদেরকে গ্রেফতারের জন্য আইন শৃংখলা বাহিনী তত্পরতা চালালেও এ পর্যনত্ম কেউ গ্রেফতার হয়নি৷