1487394_347730678703024_1093183347_nদৈনিকবার্তা : দুই ধারায় চলছে বরিশাল আওয়ামী লীগ। নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে ক্ষমতাসীন এই দলটি পুরোপুরি বিভক্ত বরিশালে। ’৭৫ পরবর্তী সময় থেকে বরিশালে নৌকার মাঝি সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর হাত থেকে আওয়ামী লীগে পৃথক বলয় সৃষ্টি হয় ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর। সেবার জাতীয় নির্বাচনের রাতেই গোপনে এলাকা ত্যাগ করার পর বরিশাল মহানগরে আলাদা বলয় সৃষ্টি করেন হাসানাতের হাত ধরেই আওয়ামী লীগে আসা সদ্য প্রয়াত এমপি সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণ। গুরু হাসানাতের দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে ৩০টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ নিজের মতো করে গুছিয়ে নেন হিরণ। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৮ বছর পর সদর্পে বরিশাল ফিরলেও মহানগর আওয়ামী লীগকে আর বাগে নিতে পারেননি সাবেক কৃষিমন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাতের পুত্র বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে হাসানাত। জেলা সভাপতি হাসানাত আর সদ্য প্রয়াত মহানগর সভাপতি হিরণের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য হয়ে ওঠে গত বছরের ১৫ জুন অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনের পর। ওই নির্বাচনে পরাজয়ের জন্য হাসানাতকে দায়ী করে দেওয়া হিরণের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে বিভক্তি। মহানগর হাতছাড়া হলেও ১০ উপজেলা নিয়ে গঠিত জেলা আওয়ামী লীগের একক অধিপতি তিনিই। তবে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন সেরনিয়াবাতের দাবি, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ শুধু বরিশাল নয়, পুরো দক্ষিণাঞ্চল আওয়ামী লীগের অভিভাবক। তার নেতৃত্বেই এগিয়ে যাচ্ছে এখানকার আওয়ামী লীগ। মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক নিজামুল ইসলাম নিজামের মতে, হিরণের নেতৃত্বে অনেক দূর এগিয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগ। তার হাতে গোছানো এই সংগঠনের নেতৃত্ব পর্যায়ে এখন দরকার তারই সহধর্মিণী সদর আসনের সদ্য নির্বাচিত এমপি জেবুন্নেছা আফরোজকে। হাসানাতকে পাশ কাটিয়েই বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার পক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম। তার দাবি একমাত্র দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের আর কোনো অভিভাবক নেই। সভানেত্রীর নির্দেশনায় আগামীতে বরিশাল আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী এবং একই সঙ্গে সরকারবিরোধী আন্দোলন মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে চান তিনি। আগে জেলা ও মহানগর একত্রে এক ব্যানারে দলীয় কর্মসূচি পালন করলেও শক্তি বাড়াতে এখন আলাদা কর্মসূচি পালন করছে বলে বিভেদ আড়াল করার চেষ্টা করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস এমপি। তার দাবি মহানগর পৃথক একটি সাংগঠনিক ইউনিট হলেও এখন পর্যন্ত অভিভাবকত্ব হারাননি সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। বরিশাল এখন আর বিএনপির ঘাঁটি নেই দাবি করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউনুস এমপি বলেন, আগামীতে সরকারবিরোধী যে কোনো আন্দোলন মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত এখনকার আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ এক প্ল্যাটফর্মে ছিল এবং আগামীতেও যে কোনো পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধ থাকবে বলে প্রত্যাশা তার। বরিশালে আগামীতে এই দলটি কোন ধারায় এবং কীভাবে পরিচালিত হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।