দৈনিক বার্তা- ঢাকা,৬আগষ্ট : রেলের উন্নয়নে বাংলাদেশকে ১০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)৷বুধবার এডিবির সঙ্গে এ সংক্রান্ত ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সরকার৷ রেলওয়ে সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম বাস্তবায়নে এ অর্থ ব্যয় করা হবে৷রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে বুধবার এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়৷ এতে সরকারের পক্ষে ইআরডি সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন এবং এডিবির পক্ষে কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজুহিকো হিগুচি স্বাক্ষর করেন৷
চুক্তি স্বাক্ষর শেষে এডিবির কান্ট্রি ডাইরেক্টর হিগুচি বলেন,বিভিন্ন সেক্টর উন্নয়নে এডিবির সহায়তা অব্যাহত থাকবে৷চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এ টাকা দিয়ে রেলওয়ের জন্যে ১৫০টি নতুন কোচ কেনা হবে৷ এর মধ্যে ১০০ মিটারগেজ এবং ৫০টি হচ্ছে ব্রডগেজ কোচ৷দেশের রেল উন্নয়নে সহায়তার অংশ হিসেবে এডিবির অর্থায়নে এগুলো কিনবে সরকার৷ এডিবির অর্থে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলো হচ্ছে, টঙ্গী থেকে সিগনালিংসহ ভৈরব বাজার ডাবল লাইন ট্র্যাক নির্মাণ,রেলওয়ে সেক্টর ইনভেসমেন্ট প্রোগ্রাম-রিফর্ম প্রজেক্ট৷ এছাড়া ঈশ্বরদী ও দর্শনার মধ্যে ১১টি স্টেশনের সিগন্যালিং ব্যবস্থার উন্নতি সাধন এবং পরামর্শক সেবার তত্বাবধান শীর্ষক প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে৷
প্রকল্পটির উদ্দেশ্য-বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান লাইন নেটওয়ার্কের রেল পরিবহনের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশ রেলওয়েতে ৫০টি ব্রডগেজ ও ১০০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ করা৷রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে৷ প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ কোটি ১৬ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার৷ যার মধ্যে এডিবি ঋণ সহায়তা দেবে ১০ কোটি ডলার এবং বাকি ৪ কোটি ১৬ লাখ ১০ হাজার ডলার সরকার নিজস্ব অর্থায়ন করবে৷ এডিবি’র এ ঋণ লন্ডন ইন্টার ব্যাংক অফারড রেট (এলআইবিওআর) ভিত্তিক৷ যা ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ২৫ বছরে পরিশোধ করতে হবে৷এডিবি’র হিসাব অনুযায়ী, তাদের অর্থায়নের প্রকল্পগুলোর ৩৬ শতাংশ বাস্তবায়ন হয় না৷ ফলে এ ঋণ সরকারকেই পরিশোধ করতে হয়৷ এমনটি হওয়ার কারণ কী? এমন এক প্রশ্নের জবাবে সচিব মো.মেসবাহ উদ্দিন বলেন, ১৯৭৩ সাল থেকে এডিবি বাংলাদেশকে ঋণ সহায়তা দিয়ে আসছে৷ প্রথম দিকের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হয়নি৷ তবে ২০০০ সালের পর থেকে এডিবির সহায়তায় প্রকল্পগুলোর শতভাগ বাস্তবায়ন হয়েছে৷যেহেতু এডিবি গড় হিসাবে এ জরিপ করেছে, তাই এ সংখ্যা একটু বেশি মনে হচ্ছে৷ তবে বর্তমানে এডিবির প্রকল্পগুলোর শতভাগ বাস্তবায়ন হয়৷
তাছাড়া, এডিবির সহায়তায় এখনও কিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে৷ যা জরিপে হিসাব করা হয়নি৷ এগুলো সম্পন্ন হলে এ হার আরও অনেক কমে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সচিব৷ ৫০টি ব্রডগেজ ও ১০০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচ সংযুক্ত করার বিশেষত্ব কী-জানতে চাইলে সচিব বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়েতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো স্টেইনলেস স্টিলের বডি সম্বলিত কোচ যোগ করা হচ্ছে৷ যাতে ক্রয় খরচ একটু বেশি পড়লেও রক্ষাণাবেক্ষণ খরচ অনেক কমে যাবে৷এ কোচগুলো আধুনিক সুযোগ সুবিধা সংযুক্ত থাকবে৷ যা ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা হবে বলে জানান তিনি৷