দৈনিক বার্তা-বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়ার সানত্মাহার পৌর শহরের বশিপুর গ্রামে ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে ঈদগাহ্ থেকে অপহৃত শিশু মাদ্রাসা ছাত্র মেঘদাদের গলিত লাশ উদ্ধার হয়েছে৷ পুলিশ ঘটনার ৭ দিন পর সোমবার দিবাগত রাতে ঘাতক আশিকের দেখানো মতে এলাকার একটি পরিত্যক্ত সিল্ক মিল থেকে ওই লাশ উদ্ধার করে৷ এ ঘটনায় পুলিশ মঙ্গলবার সকালে ঘাতক আশিকের মা তারা বিবি, বড় ভাই তারেক হোসেন, ছোট ভাই রাজা এবং তারেকের স্ত্রী পারম্নল বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে৷ এর পুর্বে সোমবার আটক করা হয় আশিকের বন্ধু একই এলাকার খলিল ড্রাইভারের ছেলে মুক্তার হোসেনকে৷
আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ মোসলেম উদ্দীন জানায়, ঘাতক আশিক শিশু মেঘদাদকে অপহরনের পর বেলা ১২টার দিকে রবি অপারেটরের সিম থেকে ফোন করে ৭ লাখ টাকার মুক্তিপন দাবী করে৷ এই মোবাইলের সুত্র ধরে পুলিশ রবিবার ঘাতক আশিককে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে আসছিল৷ কিন্তু অত্যনত্ম চালাক এই ঘাতক পুলিশকে বিভ্রানত্মিমূলক তথ্য দিয়ে গোলক ধাঁধাঁয় ফেলে দেয়৷ শেষ পর্যনত্ম পুলিশ সু-কৌশলী ভূমিকার আশ্রয় নেয়৷ যে মেয়েকে নিয়ে ঘটনার সুত্রপাত সে মেয়ের সাথে বিয়ে দেয়া এবং আসামীর পরিবর্তে রাজ সাৰী করার টোপ দেয়ার পর সে সত্য কথা বলা শুরম্ন করে এবং লাশ পুঁতে রাখার স্থানের সন্ধান দেয়৷ এর পর সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ ঘাতক আশিককে নিয়ে সানত্মাহার শহরের বাঁশ হাটির উত্তর পাশ্বর্ে অবস্থিত পরিত্যক্ত সিল্ক মিলে অভিযান চালায়৷ আশিকের দেখানো স্থানে দেওয়াল ঘেঁষে পুঁতে রাখা স্থান খুঁড়ে গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়৷
জানা গেছে, ঘাতক আশিক গত ৬ বছর ধরে নির্মম খুনের শিকার মেঘদাদদের বাড়ীতে কাজ করছিল৷ এ সময় মেঘদাদদের প্রতিবেশী এক মেয়েকে একতরফা ভালবেসে প্রেম নিবেদন করলেও মেয়েটি তাতে সাড়া না দেওয়ায় সে উত্যক্ত করা শুরম্ন করে৷ ঘটনা জানতে পারার পর মেঘদাদের বাবা রাসেদুল ইসলাম রম্নবেল কয়েক দফা আশিককে নিষেধ করে৷ কিন্তু সে তা না মেনে উত্যক্ত করা অব্যহত রাখলে ঘটনার প্রায় ৬ মাস পুর্বে আশিককে তাড়িয়ে দেয়৷ এতে সে বেজায় ৰিপ্ত হয়ে উঠে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য৷ অবশেষে সদ্যগত ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে ঈদগাহ্ মাঠ থেকে অপহরণ করে এবং ওই দিন রাতেই শ্বাসরোধ করে খুন করে লাশ পুঁতে রাখে৷এদিকে মঙ্গলবার সকালে এলাকার বিৰুদ্ধ জনতা ঘাতক আশিক এবং ঘনিষ্ট বন্ধু মক্তার হোসেনের বাড়ীতে আগুন এবং নানা ও বোনের বাড়ীতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে৷ আগুনে দু’টি বাড়ীই পুড়ে গেছে৷ আশিকদের পুড়ে যাওয়া বাড়ী থেকে স্থানীয় উদ্ধার কর্মীরা, চুরি-ডাকাতিতে ব্যবহৃত লোহা ও দেয়াল কাটা মেশিন সহ বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করেছে বলে এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে৷ অপর দিকে, অপহরণ ও নির্মম খুনের শিকার মাদ্রাসা ছাত্র মেঘদাদদের বাড়ীতে চলছে এখন শোকের মাতম৷