7-murder-in-Narayanganj
দৈনিক বার্তা- নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় শহরের কালীবাজার র‌্যাব-১১ এর কার্যালয়ের সাবেক সদস্য ল্যান্স নায়েক আবদুর রাজ্জাক ও সিপাহি আজম আলী সাক্ষী হিসেবে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মনোয়ারা বেগম ১৬৪ ধারায় তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৬ জন সাক্ষী প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে জবানবন্দি দিলেন। সাক্ষী দেওয়া নায়েক আবদুর রাজ্জাক ও সিপাহি আজম আলী সেনাবাহিনীর সৈনিক।

আদালতে জবানবন্দির বরাত দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, আদালতে জবানবন্দি দেওয়া নায়েক আবদুর রাজ্জাক ও সিপাহি আজম আলী সেনাবাহিনীর সৈনিক। তারা র‌্যাব-১১ এর শীতলক্ষ্যা নদীতে থাকা নৌকায় উপস্থিত ছিলেন।

আরেকটি সূত্র জানায়, ২৭ এপ্রিল সাতজনকে অপহরণ ও হত্যার পর তাদের লাশ র‌্যাব-১১ এর দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। সোমবার আদালতে জবানবন্দি দেওয়া নায়েক আবদুর রাজ্জাক ও সিপাহি আজম আলী নদীতে লাশ বহনকারী ওই দুটি নৌকাতে ছিলেন। নৌকাতে র‌্যাবের চাকরিচ্যুত মেজর আরিফ উপস্থিত ছিলেন বলে তারা জবানবন্দিতে স্বীকার করেছেন। তারা এও জানিয়েছেন, উচ্চপদস্থদের আদেশ মানতেই তারা লাশ বহনকারী ওই দুটি নৌকাতে ছিলেন। এর আগে র‌্যাব-১১ এর দুই সদস্য নৌ-বাহিনীর আবদুস সালাম ও পুলিশের পরিদর্শক আবদুস সামাদ সাতজনকে অপহরণের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আদালতে ১৬৪ ধারায় একই আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন। আবদুস সামাদের নেতৃত্বে একটি টহল দল নাসিক প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও চন্দন সরকারের গাড়ি দুটির গতিরোধ করেছিল। এ ছাড়া অপহরণ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ১৬৪ ধারায় নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম ও তার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা আদালতে বলেছিলেন, তাদের সামনেই র‌্যাব কয়েকজনকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। তবে যাদের তুলে নেওয়া হয়েছে তাদের কাউকেই তারা চেনেন না। তুলে নেওয়ার সময় একজনের ঘাড়ে পিস্তলের আঘাত করতে দেখেছেন তারা। আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির মুখে দাড়ি ছিল (সাতজনের মধ্যে একমাত্র নাসিক প্যানেল মেয়র নজরুলের মুখে দাড়ি ছিল)। ওই সময় একটি মাইক্রোবাস, দুটি র‌্যাবের পিকআপ ও দুটি কার সেখানে ছিল বলে জানান তারা।

প্রসঙ্গত গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম ফতুল্লা মডেল থানায় কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন। নূর হোসেন ইতিমধ্যে ভারতে গ্রেফতার হয়েছেন। অন্যদিকে আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল হত্যার ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় পৃথক মামলা করেন। ইতিমধ্যে র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন এবং লে. কমান্ডার এম এম রানা সাত খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।