দৈনিক বার্তা-ঢাকা,৪আগষ্ট : নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের ঘটনায় সাৰী হিসেবে র্যাব-১১ এর দুই সদস্য আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে৷ সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনোয়ারা বেগমের আদালতে র্যাব-১১ লেন্স নায়েক মো: আব্দুর রাজ্জাক ও সিপাহী মো: আজম এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন তারা৷
৭ খুনের মামলার তদনত্মকারী কর্মকতর্া ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকতর্া(ওসি) মামুনুর রশিদ মন্ডল জানান, ৭ খুনের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলায় সাক্ষী হিসেবে র্যাব-১১ এর দুই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে৷ আদালতে জবানবন্দীর বরাত দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখওয়াত হোসেন খান জানান, সোমবার আদালতে সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দী দিয়েছে লেন্স নায়েক আব্দুর রাজ্জাক ও সেনা বাহিনীর সিপাহী মো: আজম৷
সূত্র দাবি করেছে, ২৭ এপ্রিল সাত জনকে অপহরণ ও হত্যার পর তাদের লাশ নদীতে ফেলার দায়িত্বে র্যাব-১১’র যে সদস্যরা ছিলেন তাদের মধ্যে আবদুর রাজ্জাক ও আজম আলী অন্যতম৷ ৭ জনকে হত্যার পর র্যাব-১১ এর দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে লাশ শীতলৰ্যা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়৷
জবানবন্দীতে নায়েক আব্দুর রাজ্জাক ও সিপাহী আজম আলী নদীতে লাশ বহনকারী ওই দুটি নৌকাতে ছিলেন৷ নৌকাতে র্যাবের চাকরীচু্যত মেজর আরিফ উপস্থিত ছিলো বলে তারা জবানবন্দীতে বলেছেন৷ তারা আরো জানিয়েছেন যে, উচ্চ পদস্থদের আদেশ মানতেই তারা লাশ বহনকারী ওই দুটি নৌকাতে ছিলেন৷
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন ৰোভ প্রকাশ করে বলেন, র্যাবের এই সদস্যদের মামলার আসামী হওয়ার কথা, কিন্তু সেখানে তাদেরকে মামলার সাৰি করা হচ্ছে৷ যা ঠিক হচ্ছে না৷ তিনি মামলার ভবিষ্যত নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করে অবিলম্বে র্যাবের ওই সদস্যদের মামলার আসামী করার দাবি জানান৷ তিনি বলেন, ৭ খুনের ঘটনার পর নূর হোসেন ও তার সহযোগীদের ১১টি অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করা হলে ৯ জমা পড়লেও নূর হোসেনের দুটি জমা পড়েনি৷ কিন্তু প্রশাসন অস্ত্র দুটি উদ্ধার করতে পারেনি৷ গত শুক্রবার মালিবাগ রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা না ঘটলে অস্ত্রটি উদ্ধার হতো না৷ অপর অস্ত্রটির কোন সন্ধান পায়নি পুলিশ৷
প্রসঙ্গত, এর আগে র্যাবের সাবেক কর্মকতর্া লে. কর্ণেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার এম এম রানা, অপরণের ঘটনার তিন প্রত্যৰদশর্ী, র্যাবের দুই সদস্য আব্দুস সামাদ ও আব্দুস সালাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছিল৷
এদিকে, লাইসেন্স বাতিল করা অস্ত্র জমা না দিয়ে অন্যত্র হসত্মানত্মরের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেনের বিরম্নদ্ধে পুলিশ বাদী আরো একটি মামলা দায়ের করেছে৷ সোমবার সকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) অজিত মিত্র বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন৷
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতর্া(ওসি) মো: আলাউদ্দিন জানান, নারায়ণগঞ্জে ৭ জনকে অপহরণের পর খুনের ঘটনায় নূর হোসেনকে দেয়া অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করে তা জমা দেয়ার নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসন৷ কিন্তু নূর হোসেন সেই অস্ত্র জমা না দিয়ে তার শ্যালক নূরে আলমের কাছে হসত্মানত্মর করেন৷ লাইসেন্স বাতিল করা অস্ত্র জমা না দিয়ে অন্যত্র হসত্মানত্মরের অভিযোগে নূর হোসেনের বিরম্নদ্ধে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার মালিবাগ রেলক্রসিংয়ে চট্টগ্রাম থেকে আসা চট্টলা এক্্রপ্রেসের ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া প্রাইভেটকার থেকে গুলিভর্তি পিস্তুল উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ৷ পরে রেলওয়ে পুলিশ দেশের বিভিন্ন থানায় বেতার বাতর্া পাঠালে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ অস্ত্রটি নূর হোসেনের বলে শনাক্ত করেন৷