দৈনিক বার্তা-ঢাকা,৪আগষ্ট : গণমাধ্যমকে সরকারি খাঁচায় বন্দীর ফিকির হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি৷ দলটি বলেছে, জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতার কথা বলে সরকার গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করতে নীতিমালা করছে৷সোমবার সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন৷
রুহুল কবির বলেন, সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা, অনলাইনসহ বিভিন্ন মাধ্যমকে জবাবদিহির আওতায় আনার ধোয়া তুলে সরকার আইন করতে যাচ্ছে৷ টেলিভিশন বন্ধেও নাকি আইন করা হচ্ছে৷ তিনি বলেন, বিএনপি মনে করে গণমাধ্যমকে খাঁচায় পুরতে সরকার সুপরিকল্পিতভাবে এসব করছে৷ এটা বাকশাল কায়েমের একটি ভিন্ন পন্থা৷ তিনি সরকারকে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের সর্বনাশা পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানান৷
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, টেলিভিশন, রেডিওসহ গণমাধ্যমের সকল শাখাকে জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতার আওতায় আনার জন্য সরকার বেশকিছু আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করতে যাচ্ছে৷ টেলিভিশন বন্ধেও নাকি আইন হচ্ছে৷ আমরা মনে করি বিভিন্ন আইন-নীতিমালা করে গোটা গণমাধ্যমকে তারা সরকারি খাঁচায় পুরতে চাচ্ছে৷
বাকশাল আমলের মত সরকার ভিন্ন কৌশলে প্রচার মাধ্যমগুলোকে সরকারি যন্ত্রে পরিণত করার চেষ্টা করছে বলেও উল্লেখ করেন রিজভী আহমেদ৷ তিনি বলেন, সরকার গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের সর্বনাশা পথে এগিয়ে চলেছে৷তিনি বলেন, শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ অবনতি ঘটানো হয়েছে৷
সংবিধানে কালো আইন সংযোজনের মাধ্যমে তারা জনগণের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে৷ এর মাধ্যমে শেখ হাসিনা দেশে দ্বিতীয় বাকশালী রাজত্ব কায়েম করেছেন৷
বর্তমান সরকারকে অপরাধ প্রবণ সরকার আখ্যা দিয়ে রিজভী বলেন, এরকম সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় থাকলে রাষ্ট্রের প্রাণশক্তি বলে আর কিছুই থাকবে না৷ এদের একমাত্র প্রতিশোধক হচ্ছে- ব্যাপক গণ আন্দোলনে তাদের উত্খাত করা৷ আমরা সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছি৷আন্দোলন রুখতে সরকার সারাদেশে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের নতুন করে গ্রেপ্তার করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি৷
বিএনপির এই নেতা বলেন, তোবা গ্রুপের শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে বিএনপি একাত্মতা প্রকাশ করছে৷ শ্রমিকদের দ্রুত সব বকেয়া বেতন পরিশোধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানাচ্ছে বিএনপি৷
রিজভী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফকে মুক্তি না দেওয়ার সমালোচনা করে বলেন, উচ্চ আদালত জামিন দিলেও তাঁকে অন্যায়ভাবে আটক করে রাখা হয়েছে৷ সরকার হত্যা, গুম, খুনের মাধ্যমে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চায় বলেও অভিযোগ করেন তিনি৷তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে৷ক্রসফায়ার এনকাউন্টার ও বন্দুক যুদ্ধ সরকারের একমাত্র অর্জন৷ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতার বাণিজ্য চালাচ্ছে সরকার৷
আওয়ামী লীগ সরকারকে অপরাধ প্রবণ উল্লেখ করে এ সরকার ক্ষমতায় থাকলে রাষ্ট্রের প্রাণশক্তি থাকবে না বলেও উল্লেখ করেন রিজভী আহমেদ৷তিনি বলেন, এ সরকার অবৈধ, অনৈতিক ও অসুস্থ৷ ব্যাপক গণআন্দোলনে উত্খাত করাই তাদের একমাত্র প্রতিষেধক৷পঞ্চদশ সংশোধনী চতুর্থ সংশোধনীর ছায়া উল্লেখ করে রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা চিরদিনের মত ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন পূরণের জন্যই সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী সংযোজন করেন৷
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, সহ-দফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ৷