indexদৈনিক বার্তা: বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের রেসিডেন্ট পারমিট বাতিল করেছে ভারত সরকার। গতকাল এক টুইটার বার্তায় নয়া দিল্লিতে বসবাসরত ৫১ বছর বয়সী এ লেখিকা নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ভারত সরকার আমার রেসিডেন্ট পারমিট বাতিল করেছে। ২০০৪ সাল থেকে যে সুবিধা আমি পেয়ে আসছি, তা বাতিল করে আমাকে দুই মাসের ট্যুরিস্ট ভিসা দেয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত আমার কল্পনারও বাইরে। ১৯৯৪ সাল থেকে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন তসলিমা নাসরিন। ২০০৪ সাল পর্যন্ত ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে তিনি ভারতে থাকতেন। পরে তাকে রেসিডেন্ট পারমিট দেয়া হয়। প্রথমে ছয় মাসের এবং পরবর্তী সময়ে এক বছর করে তাকে রেসিডেন্ট পারমিট দেয়া হতো। রেসিডেন্ট পারমিট নবায়নের জন্য জুন মাসের শেষ সপ্তায় তিনি ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। এর আগে ২৬শে জুলাইও তসলিমা নাসরিন এক টুইটার বার্তায় নিজের হতাশা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি আমার রেসিডেন্ট পারমিটের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য এক মাস আগে আবেদন করেছি। এখন পর্যন্ত ভারতীয় সরকার কোন জবাব দেয়নি। এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি।’ এখন ভারত সরকারের নয়া সিদ্ধান্তের কারণে ১লা আগস্ট থেকে তসলিমা নাসরিনকে ট্যুরিস্ট ভিসায় বসবাস করতে হবে। ২০০৭ সালে আন্দোলনের কারণে কলকাতা ছাড়তে বাধ্য হন তসলিমা নাসরিন। ইউপিএ সরকার তাকে অনেকটা গৃহবন্দি করে রাখলেও রেসিডেন্ট পারমিট বাতিল করেনি। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির সরকার তা বাতিল করলো। এ সিদ্ধান্ত অনেকের কাছেই বিস্ময়কর। কারণ বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত হওয়ার সময় থেকেই নানা ইস্যুতে তসলিমা নাসরিনের পাশে ছিল বিজেপি। এমনকি তাকে কলকাতা থেকে বিতাড়নের জন্য কলকাতার রাজনীতিবিদদের সমালোচনা পর্যন্ত করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। তসলিমা নাসরিনের বিতর্কিত উপন্যাস ‘লজ্জা’ গুজরাটি ভাষায় অনুবাদ হয়। গুজরাট দাঙ্গার নেপথ্যে এ বইয়ের ভূমিকা রয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। ভারত থেকে বিতাড়িত করলে তসলিমা নাসরিন ইউরোপে পাড়ি জমাতে পারেন। আগামী ৭ই আগস্ট তার অক্সফোর্ডে যাওয়ার কথা রয়েছে। এরপর তিনি যাবেন সুইডেনে। তসলিমা নাসরিনের সুইডেনের নাগরিকত্ব রয়েছে। ২৪শে আগস্ট তার ভারতের ফেরার কথা। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে তার ভারত ফেরাও অনিশ্চিত হয়ে পড়লো। নির্বাসিত জীবনে তসলিমা নাসরিন ভারত ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাস করে আসছেন। যদিও ভারতে থাকার ব্যাপারে তিনি তার ইচ্ছার কথা সব সময় জানিয়ে আসছেন। কলকাতাকে নিজের দ্বিতীয় বাড়ি হিসেবে বিবেচনা করেন বহুল আলোচিত-সমালোচিত এ লেখিকা।