দৈনিক বার্তা-টিপু সুলতান ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজারে একটি বরযাত্রী বাসের সাথে ট্রেনের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই ৯ জনসহ ১১ জন নিহত হয়েছে৷ এর মধ্যে একই পরিবারের ৩ জন সদস্য নিহত হয়েছে৷ এ সময় আহত হয়েছে অনত্মত ৬০ জন৷ নিহতরা হলেন সুদির (৪০), সুবল (২২),কৌশিক(৮),সুজয়(৩০),কৃষ্ণা,(৩০),বন্যা(৩৫), সঞ্জয় (৩৪),সুদিব(৪০)বিপস্নব(২৫), পর্ন(৩৫),তমা(১৫),সুজা(১৮)৷ গতকাল শুক্রবার ভোর সাড়ে তিন টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে৷ বাসটি কালীগঞ্জের সাকো মথুনপুর গ্রাম থেকে বিয়ের কার্যক্রম শেষে ঝিনাইদহ শৈলকুপার ফুলহরি গ্রামে যাচ্ছিল৷ এ ঘটনার পর থেকে খুলনার সাথে ঢাকা-রাজশাহীগামী সকল ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে৷মথনপুর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দুরে বারবাজার রেলক্রসিং নামক স্থানে আসলে এ ঘটনা ঘটে৷সৌয়দপুর থেকে ছেড়ে ৫১৪ নম্বর ট্রেনটি খুলনা যাচ্ছিল৷
কালীগঞ্জ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, গতকাল শুক্রবার ভোর সাড়ে ৩ টার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার সাকো মথনপুর গ্রামের সুবল বিশ্বাসের মেয়ের বিয়ে শেষে বর যাত্রীবাহী(সাতৰিরা-জ ৪০-০০১৪ নং) বাস বারবাজার রেল লাইন ক্রসিং অতিক্রম করছিল৷ এ সময় সৈয়দপুর থেকে খুলনা গামী সীমানত্ম এঙ্প্রেস ট্রেন বাস টিকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার দুুরে নিয়ে যায়৷বাসটি দুমড়ে মুচড়ে রেল লাইনের উপর ট্রেনের সাথে আটকে যায়৷ এ সময় ঘটনাস্থলেই একই পরিবারে ৩ জন সহ ১১ জন নিহত হয়৷ খবর পেয়ে ঝিনাইদহ, যশোর ,কোটচাদপুর ও কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কমর্ীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত ও নিহতদের উদ্ধার করে৷কোটচাদপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার নজরম্নল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৯ টি মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ৬০ জনকে৷ তাদের যশোর,কালীগঞ্জ,ঝিনাইদহ ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছ্৷ে নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে৷ ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় রেল পশ্চিম অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক আব্দুল আওয়াল ভুইয়া কে আহবায়ক করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদনত্ম কমিটি গঠন করা হয়েছে এ সময় তার সাথে ছিলেন রাজশাহির বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মোশারফ হোসেন৷তদনত্ম কমিকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে৷ তিনি আরো জানান, খুলনা থেকে ২ ঘন্টার পর রিলিফ ট্রেন এসে রেল লাইনের উপর পরে থাকা বাস উদ্ধার করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হবে৷প্রায় সাড়ে ৭ ঘন্টা পর আবার ট্রেন চলাচল শুরম্ন হয় দুপুর একটার পর থেকে৷এঘটনায় আহত হছে তারা হলেন লিটন, রাজ,পঙ্কজ,অনিল,সুজা,সুদেব,দিপক,টিপু,দাউদ,নিমাই,হরি,সনোদ,পল্টু,রেখা,মিঠু,রাজু,অসিত,অজিত,তমাল,উজ্জল,নয়ন,রনি,রবি,বাচ্চু,রিপন,আতিক,চঞ্চল,তোতা,সমির,মজ্নু,মিজান,কামেলা,মনি,শিমুল সহ অনত্মত স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, রেল ক্রসিংয়ে ২ জন গেটম্যান মমিন ও আব্দুর রহমান এগেটের দায়িত্ব পালন করতো৷ রাতে দায়িত্ব ছিল আব্দুর রহমানের কিন্তু তিনি রাতে দায়িত্ব পালন না করে নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিল৷ দায়িত্ব অবহেলার কারনে গেটম্যান আব্দুর রহমানকে আটক করতে পারেনি কিন্তু পুলিশ মোমিন নামের অপর গেটম্যান কে আটক করেছে৷রাতে যখন দূর্ঘটনা ঘটে সে সময় স্থানীয়রা অনেেেকই বাসের যাত্রিদের কাছে থাকা নগদ টাকা,স্বর্ন লংকার সহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়৷বাসে থাকা বৃদ্ধ মহিলা বলেন, বাসটিতে ৭০ থেকে ৭৫ জন নারি,পুরম্নষ ও শিশু ছিল৷ রাতে দূর্ঘটনার বিকট শব্দ শুনে এলাকার মানুষ ছুটে এসে কেউ আহতদের উদ্ধার আবার কেউ লুটপাট করে৷ এলাকাবাসির অভিযোগ রাতে দায়িত্বরত গেটম্যান আব্দুর রহমান থাকলে এঘটনা ঘটতো না৷ শৈলকুপার ফুলহরি গ্রাম থেকে একটি মাইক্রোবাস ও একটি বড় বাস নিয়ে তারা কালীগঞ্জ উপজেলার মথুরাপুর গ্রামে আসে৷বিয়ে করে একসাথে আসার সময় প্রথমে মাইক্রোটিতে থাকা বর ও নব বধু রেল লাইন পার হয়, পিছনে থাকা বাসটি পার হবার সময় দূর্ঘটনা ঘটে৷ রেলষ্টেশন মাষ্টার অফিসের টেলিফোন নিয়ে পাশের একটি বাগানে পালিয়ে থাকে পওে কালীগঞ্জ থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে৷
ঘঁটনার খবর পেয়ে ঘটঁনাস্থলে ছুটে আসেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারম্নল আজীম আনার, ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মো: শফিকুল ইসলাস, এমপি আব্দুল হাই, উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির সিদ্দিকি ঠান্ডু অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামানসহ প্রশাসনের লোকজন৷