দৈনিক বার্তা-ঢাকা,৩১জুলাই : আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদার পাকিস্তানি শাখার পরামর্শে চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে আবারো সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশের জেএমবি৷এ কথা জানিয়েছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ন কমিশনার মনিরুল ইসলাম৷বৃহস্পতিবার সকালে আটককৃত তিন জেএমবি সদস্যকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য দেন৷
তিনি বলেন,এ কারণে শিক্ষিত যুবকদের টার্গেট করা হচ্ছে যাতে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সমন্ময় করতে পারে৷ এলক্ষ্যে পাকিস্তানে পালিয়ে যাওয়া জেএমবি সদস্যরা দেশীয়দের প্রতিনিয়ত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে৷আটককৃতরা হলো- দলনেতা শামিন মাহফুজ ওরফে সুমন ওরফে ম্যানরিং মরং (ছদনাম), জাহিদুর রহমান (৩৩) এবং ইসমাইল (৩৩)৷
মনিরুল ইসলাম জানান, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি আবারো সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে৷ তারা আল কায়দার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সমর্থন পাওয়ার জন্য কাজ করছে৷ তবে এখনো তারা সমর্থন বা সেই আদলে সংগঠন দাঁড় করাতে পারেনি৷ যখন তারা মাথা চাড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছে তখনই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে৷ যুগ্ম কমিশনার জানান, বাংলাদেশের কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, এনজিও আদলে জঙ্গি সংগঠন আরসিইউডি আল কায়দার সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করে৷ তার আদলে তারা সংগঠন তৈরীর চেষ্টা করে৷ কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তত্পরতার কারণে তারা তা পারেনি৷ তিনি আরো বলেন,এর আগেও জেএমবি মাওলানা সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে সংগঠিত হয়ে আল কায়েদার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে৷ কিন্তু ওই সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তত্পরতার কারণে তারা তা পারেনি৷ পরবর্তীতে রুহুল আমিন তার ভাগিনা শহিদের নেতৃত্বে আবারো চেষ্টা করে৷
তিনি জানান, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আটকৃতরা ঈদের জামাতে বোমা হামলার পরিকল্পনা করেছিল৷ কিন্তু পুলিশি তত্পরতার কারণে তারা পেরে উঠেনি৷ সর্বশেষ তাদের সায়েদাবাদ থেকে আটক করা হয়৷ মনিরুল ইসলাম জানান, আমাদের নিকট গোয়েন্দা তথ্য ছিল জেএমবির সদস্যরা ঢাকায় অবস্থান করছে৷ তারা যে কোনো সময় হামলা চালাতে পরে৷ এজন্য আমরা গোয়েন্দা তত্পরতা বৃদ্ধি করি৷ তিনি বলেন, তারা জেনেও গিয়েছিল পুলিশ তাদের পর্যবেক্ষণে রেখেছে৷ এ কারণে তারা পেরে উঠেনি৷ আমরা তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি৷ তাদের নিকট যে সকল বিস্ফোরক দ্রব্য ছিল তা দিয়েই এই হামলা করতো৷ এছাড়াও ল্যাপটপেও ছিল হামলার ছক৷
তিনি জানান, শামিন মাহফুজ ছাত্র জীবনে মেধাবী ছাত্র ছিলো৷ সে রংপুর ক্যাডেট কলেজে পড়াশুনা অবস্থায় সেখানে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্তার অভিযোগে সে বহিষ্কৃত হন৷ সে এসএসসি ও এইচএসসিতে বোর্ড স্ট্যান্ড করেন৷ পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজ কল্যাণ বিভাগ থেকে এমএসএস করেন৷ এখানে পড়াশুনা অবস্থায় সে শিবিরের সাথী পদ পান৷ মনিরুল ইসলাম জানান, শামিন মাহফুজ আদিবাসী সমপ্রদায় খুমিদের উপর পিএইচডি করার জন্য বান্দরবনের থানচিতে যান৷ আর সেখানেই জঙ্গলের ভেতর প্রশিক্ষণ ক্যাম্প গড়ে তুলে জেএমবিতে যোগ দেন৷শামিন মাহফুজ এর আগেও একাধিকবার গ্রেফতার হয়৷ বর্তমানে সে দুর্বল জেএমবিকে শক্তিশালী করতে কাজ করছিল৷ এজন্য আল কায়েদার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল৷সেই আদলে সংগঠন দাঁড় করাতে সারাদেশে কর্মী সংগ্রহ করার চেষ্টা করে৷
তিনি জানান,এই তিনজন ছাড়াও বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে৷ আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷ এ সময় উপস্থিত ছিলেন-মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, শেখ নাজমুল আলম, জাহাঙ্গীর আলম মাতব্বর, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ছানোয়ার হোসেন৷