Tareq-Partho-Masud-saidyদৈনিক বার্তা: সৌদি আরবে গিয়ে এক ঢিলে তিন পাখি মারছেন জিয়া পরিবারের সদস্যরা৷ ওমরা পালন করতে গিয়ে মা-ছেলের দেখা হয়েছে দীর্ঘ দিন পর৷ সম্ভাব্য আন্দোলনের কৌশল ও দলীয় নীতি-নির্ধারণে আলাপ-আলোচনা সেরে নিয়েছেন৷ এই ফাঁকে খানিকটা রাজনীতিও করছেন৷ এরই ধারাবাহিকতায় মদিনায় জমে উঠেছে তারেক কেন্দ্রিক ইফতার পলিটিক্স৷ মসজিদে নববীতে গত রোববার একসঙ্গে ইফতার করেছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ এবং সাঈদীর পুত্র মাসুদ৷ ২০ দলীয় জোটের প্রভাবশালী এই তিন নেতার একসঙ্গে বসে ইফতার করা নিয়ে শুধু সৌদিপ্রবাসী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদেরই নয়, দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও চলছে নানা গুঞ্জন৷ রাজনৈতিক পর্যবেৰকদের মতে, মদিনায় জমে উঠেছে জিয়া পরিবার ও বিএনপি-জামাতের মিলমেলা৷

জানা যায়, মসজিদে নববীতে আন্দালিব রহমান পার্থ ও সাইদীপুত্র মাসুদ সবসময় তারেক রহমানের পাশে পাশেই ছিলেন৷ শুধু তাই নয়, পার্থ ও মাসুদ সার্বক্ষণিক তারেক রহমানকে সঙ্গ দিয়েছেন৷ ইফতারে সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির সভাপতি আহমেদ আলী মুকিবসহ প্রবাসী বিএনপি নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন৷

২০০৭ সালের ১/১১-এর পর খালেদা-তারেকের আর দেখা হয়নি৷ এর আগে মালয়েশিয়ায় এই সাৰাত্‍ হওয়ার কথা থাকরেও পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে সেই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়৷ পরবর্তীতে দলের চেয়ারপারসন, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সৌদিতে এই মিলনমেলা আয়োজনের সিদ্ধানত্ম হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে৷

জামাত-বিএনপির রাজনৈতিক সম্পর্কের নানা টানাপড়েনের খবর রাজনৈতিক অঙ্গনে ফলাও করে প্রচার হয়ে আসছে অনেক দিন থেকেই৷ তবে জিয়া পরিবারের মিলনমেলায় সাইদীপুত্রের অংশগ্রহণে তাদের সম্পর্ক অটুট থাকছে বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল থেকে ধারণা করা হচ্ছে৷ প্রবাসী রাজনীতিকরা ধারণা করছেন, ঈদের পর বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচির কৌশল নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা করতেই মসজিদে নববীতে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল৷ আর আন্দোলন সফলের লৰ্যে বিএনপির পাশে ছায়ার মতোই থাকছে জামাত৷

তবে প্রবাসীদের এই ধারণার কথা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন জামাত নেতা মাসুদ সাঈদী৷ মোবাইল ফোনে মাসুদ সাঈদী গণমাধ্যমকে জানান, মদিনায় আমাদের একসঙ্গে ইফতার করা ছিল সম্পূর্ণ ‘ফ্রেন্ডলি’৷ তাছাড়া, মসজিদে নববীতে বসে রাজনৈতিক আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না৷ শুধু তাই নয়, ঈদের পরে আন্দোলন নিয়ে সৌদিতে তারেক রহমানের সঙ্গে তাদের জোটগত আলোচনার কোনো পরিকল্পনাও নেই বলেও জানান তিনি৷

বর্তমানে সৌদি আরবে খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, আন্দালিব রহমান পার্থ, মাসুদ সাঈদীসহ ২০ দলীয় জোটের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা অবস্থান করছেন৷ অনেকেই ধারণা করছেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট ঈদের পরে যে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে, তার পরিকল্পনা সৌদি আরবে বসেই করা হবে৷জিয়া পরিবারের মিলনমেলায় সাইদীপুত্রের অংশগ্রহণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, এটা পরিবারে নয়, ইফতারে অংশগ্রহণ৷ ইফতারে যে কেউই অংশগ্রহণ করতে পারে৷ এটাকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করে সমালোচনার কোনো সুযোগ নেই৷

উলেস্নখ্য, গত শনিবার রাতে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে সৌদি বাদশাহর আমন্ত্রণে ওমরাহ পালনের উদ্দেশে সৌদি আরবে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া৷ অপরদিকে লন্ডন থেকে সপরিবারে দুবাই আসেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান৷ সেখান থেকে তার মায়ের সঙ্গে একই ফ্লাইটে মদিনায় আসেন তিনি৷