দৈনিক বার্তা- নিজস্ব সংবাদদাতা, গাজীপুর, ২১ জুলাই : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বন বিভাগের প্রায় সোয়া ৯৫ একর জমি বাংলাদেশ স্কাউটস কতর্ৃপৰ স্থায়ী বন্দোবসত্ম নেওয়ার উদ্যোগে স্থানীয়দের মাঝে অসনত্মোষের সৃষ্টি হয়েছে৷ স্কাউটস কতর্ৃপৰের ওই উদ্যোগের প্রতিবাদে বিৰুদ্ধ এলাকাবাসীর বিৰোভ সমাবেশ করছে৷ তাদের দাবী এ উদ্দ্যোগ বাসত্মবায়ন হলে একদিকে পরিবেশ ও জীব বৈচিত্রের ৰতি সাধন হবে, অন্যদিকে উপকারভোগী ও এলাকাবাসী নানা ভোগানত্মিতে পরবে৷ এব্যাপারে তারা প্রধানমন্ত্রীর হসত্মৰেপ কামনা করেছেন৷
জানাগেছে, বাংলাদেশ স্কাউটস কর্তর্ৃপৰ গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকস্থিত জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সম্প্রসারনের উদ্দ্যোগ নেয়৷ এজন্য স্কাউটস কর্তর্ৃপৰ ২০১০ইং এবং ২০১২ইং সালে মৌচাকের জাতীয় স্কাউট প্রশিৰণ কেন্দ্রের দক্ষিন পাশ্বর্ের কালিয়াকৈর উপজেলাস্থ কৌচাকুড়ি মৌজার ২নং খতিয়ানের আরএস ৩৩১৩ দাগের ১৯.০১ একর, ৩৩৬৩ দাগের ০.৬৩ একর ও ৩৩৬৪ দাগের ৮.৩১ একর এবং গাজীপুর সদরের (মহানগরের ২নং ওয়ার্ড) লোহাকৈর মৌজার ২নং খতিয়ানের আরএস ৩০৬ দাগে ৪.৫১ একর ও ২৯৯ দাগে ৬২.৮৫ একরসহ মোট ৯৫.৩১ একর জমি বন বিভাগের নিকট থেকে স্থায়ী বন্দোবসত্ম নেওয়ার কার্যক্রম শুরম্ন করে৷ প্রসত্মাবিত ওই জমির মধ্যে ১৭.২৯ একর জমিতে স্থানীয় উপকারভোগীদের সম্পৃক্ততায় ১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে ১০বছর মেয়াদী উডলট বাগান সৃজন করেছে বন বিভাগ৷ কিন্তু আদালতে দু’টি মামলা বিচারাধীন থাকায় দীর্ঘ দিনেও বাগানের গাছ কেটে উপকারভোগীদের লভ্যাংশ বিতরন সম্ভব হচ্ছে না৷ স্কাউট কর্তর্ৃপৰের ওই উদ্দ্যোগের বিরম্নদ্ধে সেখানে বসবাসরত প্রায় ৮হাজার পরিবারসহ স্থানীয়রা আপত্তি উত্থাপন করে৷ স্থানীয়দের আপত্তির প্রেৰিতে তত্কালীন ভূমি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি (বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী) অ্যাডভোকেট আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি ওইজমি বংলাদেশ জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে লীজ/হসত্মানত্মর না করে রিজার্ভ এলাকা হিসেবে সংরৰণের জন্য বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে সুপারিশ করে দু’বার ডিও পত্র দেন৷ সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আ.ক.ম মোজাম্মেল হকের সঙ্গে একমত পোষন করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের এক পত্রের প্রেৰিতে প্রধান বন সংরক্ষক (চঃ দাঃ ) মোঃ ইউনুছ আলী স্কাউটস কর্তৃপৰকে সাময়িক এ ব্যবহারের জন্য বনভ্থমি বন্দোবসত্ম প্রদানের প্রয়োজন নাই, এমনকি বনবিভাগের জমি বাংলাদেশ স্কাউটসকে স্থায়ীভাবে ব্যবহারের বরাদ্দ প্রদানের বিষয়টি পুনঃবিবেচনার কোন সুযোগ নাই উলেস্নখ করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পত্র (পত্র নং-প্রবস(প্রঃ)/৪ডি-৯৬(পার্ট-১৩-৩)/২০১২/১০৬, তারিখঃ ১৩-০২-২০১২ইং) দেন৷ ওই পত্রে আরো উলেস্নখ করা হয়, ইতোপূর্বে স্কাউটস কর্তৃপৰ বন বিভাগ থেকে ৮ দশমিক ৬১ একর জমি বন্দোবসত্ম নিয়ে বন সংরক্ষণ না করে সেখানে বহুতল ভবন নিমর্াণ করেছে৷ বাংলাদেশ স্কাউটস কতর্ৃপৰ সেখানে প্রতি ৪বছর পর মাত্র ৩দিনের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্প (জাম্বুরী) হিসেবে আবেদিত জমি ব্যবহার করে৷ সাময়িক এ ব্যবহারের জন্য বনভ্থমি স্কাউটস কর্তৃপৰকে বন্দোবসত্ম প্রদানের প্রয়োজন নাই৷ এর আগেও প্রায় একই মনত্মব্য করে তত্কালীন প্রধান বন সংরক্ষক (চঃ দাঃ ) ইশতিয়াক উদ্দীন আহমদ পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে অপর একটি পত্র (নং- প্রবস(প্রঃ)/৪ডি-৯৬(পার্ট-১৩-৩)/২০১১/৭৭৮, তারিখঃ ১৫-১১-২০১১ইং) দেন৷ ওই পত্রে তিনি উলেস্নখ করেন, জাম্বুরী চলাকালীন সময়ে গাছপালা ও জীব বৈচিত্রের ৰতি সাধন না করার শর্তে স্কাউট কতর্ৃপৰের আবেদনের প্রেৰিতে ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করা যেতে পারে৷
সর্বশেষ চলতিমাসে প্রধান বন সংরক্ষক (চঃ দাঃ ) মোঃ ইউনুছ আলী শর্ত সাপেৰে প্রসত্মাবিত বনভ্থমি বাংলাদেশ স্কাউটসকে ব্যবহারের জন্য অনুমতি প্রদানের বিষয়ে বিবেচনা করা যেতে পারে বলে মনত্মব্য করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে অপর এক পত্র (পত্র নং-২২.০১.০০০০.০১১.(প্রঃ).৪ডি-৯৬(পার্ট-১৩-৩).২০১৪.৪৩৯, তারিখঃ ১৩-০৭-২০১৪ইং) দেন৷ এর প্রেৰিতে এলাকাবাসীর মাঝে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে৷
এদিকে জমি স্থায়ী বন্দোবসত্ম নেওয়ার উদ্দ্যোগের প্রতিবাদে সোমবার দুপুরে দৰিণ মৌচাকে মো. আয়েশ আলী সরকারের সভাপতিত্বে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ বাস্তুভিটা উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির উদ্দ্যোগে আয়োজিত ওই প্রতিবাদ সভায় আব্দুল আজিজ, আশরাফুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বারসহ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন৷ সভাশেষে একটি বিৰোভ মিছিল এলাকা প্রদৰিণ করে৷
সভায় বক্তারা বলেন, প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও একটি মহল নিজেদের বিশেষ স্বার্থে এ উদ্দ্যোগ নিয়েছে৷ তাদের এ পরিকল্পনা বাসত্মবায়ন হলে ওই এলাকার প্রায় ৮হাজার পরিবার গৃহহীন হওয়াসহ আশেপাশের এলাকার লোকজন ৰতিগ্রস্থ হবে৷ ইতোমধ্যেই স্কাউট কর্তর্ৃপৰ লীজ নেয়া জমির বন সম্পদ ধ্বংস করেছে৷ এতে পরিবেশ ও জীব বৈচিত্রের ৰতি সাধন হচ্ছে৷ এছাড়াও এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য বনভ্থমিতে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা নালাগুলোতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে৷ ফলে স্থানীয়রা নানা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে৷ বক্তারা এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হসত্মৰেপ কামনা করেছেন৷
এব্যপারে স্কাউটস সূত্র জানায়, দেশের প্রায় ১৩ লাখ স্কাউটের জন্য বছর ব্যাপী নানা প্রশিৰণের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে এ প্রশিৰণ কেন্দ্র৷ স্কাউট প্রশিৰণ কেন্দ্রের জন্য বনবিভাগের ওই জমি বন্দোবসত্মের উদ্দ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ এখানে বন সৃজন করা হবে৷
এব্যাপারে কালিয়াকৈর বনবিভাগের চন্দ্রা রেঞ্জ কর্মকর্তা জানান, স্কাউট কতর্ৃপৰের আবেদনের প্রেৰিতে আমরা তদনত্ম করেছি৷ তবে জমি বন্দোবসত্ম দেয়ার বিষয়টি উধর্্বতন কর্তৃপৰের ব্যাপার৷