দৈনিক বার্তা – রাজীবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কাঁঠালের মতো নারিকেলে ব্যবসা করতে পারলেন না কুড়িগ্রামের রাজীবপুর ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী কর্মকতর্া) আব্দুল লতিফ খান৷ গতকাল সোমবার বিকাল ৩টার দিকে গাছ থেকে নারিকেল পেরে তার ব্যবহৃত সরকারি গাড়িতে ভর্তি করতে থাকেন৷ উদ্দেশ্য ছিল ওইসব নারিকেল তিনি তার ঢাকার বাসায় নিয়ে যেতেন৷ কিন্তু তার আগেই সাংবাদিকরা গাড়িতে নারিকেল ভর্তি করার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে৷ সাংবাদিকদের ক্যামেরা বন্দি করার খবর পেয়ে ইউএনও আব্দুল লতিফ খান পাওয়ার পর তার মাথা নষ্ট হয়ে যায়৷ পরে ইফতারের আগ মুহুর্তে নারিকেল গুলো ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার ও উপজেলা চত্ত্বরের আবাসিক কোয়াটর্ারের অবস্থানকারি সরকারি কর্মকতর্াদের মাঝে ভাগ বন্টন করে দেন৷
এর আগে গত ২৬ জুন তারিখে উপজেলা চত্ত্বরের শ’ খানেক কাঁঠাল গাছের ৫শ’ থেকে ৬শ’ কাঁঠাল পি-আকাপ ভ্যান ভর্তি করে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছেন ওই ইউএনও৷ জানা গেছে, ঢাকায় নিয়ে ওইসব কাঁঠাল বিক্রি করেন৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি এক কর্মচারী বলেন, ‘এটা কিবা ইউএনও রে বাবা৷ আমগর একটা ফলও খাবার দেয় না৷ কাঁঠালের মতো নারিকেল গুলোও ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল ইউএনও স্যারের৷ কিন্তু সাংবাদিকরা ছবি তুলে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি আর নিতে পারলেন না৷ মেলা ইউএনও দেখেছি ওনার মতো ইউএনও জীবনে দেহি নাই৷’
এদিকে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরের সরকারি বিভিন্ন প্রজাতির ফল গাছের ফল ইউএনও ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করায় প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকতর্া-কর্মচারীদের মাঝে তীব্র ৰোভের সৃষ্টি হয়েছে৷ ইউএনও’র ওই আচরণ নিয়ে এলাকবাসির মাঝেও নানা ৰোভ আর গুঞ্জন চলছে৷ ইউএনও উপজেলার মধ্যে বড় কর্মকতর্া বলে কেউ প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করে না৷ সবাই মুখ বুজে সহ্য করছে৷ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকতর্া-কর্মচারীদের সঙ্গে বলে ওই তথ্য জানা গেছে৷
সরকারি নিয়ম অনুসারে উপজেলা ক্যাম্পসের বিভিন্ন ফল পরিপক্ক হলে প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করে ওই টাকা উপজেলার রাজস্ব ফান্ডে জমা করতে হবে৷ যেহেতু গাছের ফল সে কারনে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকতর্া-কর্মচারী ও উপজেলা আবাসিক কোয়াটর্ারে যারা অবস্থান করে থাকেন তাদের মাঝেও ভাগবন্টন করা যেতে পারে৷ কিনত্ম ইউএনও সাহেব তা না করে সব গুলো কাঁঠাল একই ভোগ করবে এটা কেমন বিচার৷ এর আগে একই ভাবে নারিকেল গুলো বাড়িতে নিয়ে গেছেন তিনি৷ কথা গুলো জানাচ্ছিলেন আবাসিক কোয়াটর্ারে অবস্থানকারি এক কর্মকতর্া৷
রাজীবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিউল আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই৷ আমি ইউএনও সাহেবকে বলেছি কাঁঠাল গুলো সব দপ্তরের কর্মকতর্া কর্মচারীদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার জন্য৷’ এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘আমি কাঁঠাল ঢাকায় নিয়া বিক্রি করছি, এটা মিথ্যা কথা৷ আর নারিকেল গুলো তো সবার মাঝে ভাগ বন্টন করে দিয়েছি৷ আপনাকে যদি কেউ বলে থাকে তা মিথ্যা বলেছে৷’
রম্নহুল সরকার-রাজীবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি