দৈনিক বার্তা -০৭ জুলাই, ২০১৪ : ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মিরপুর এলাকার উন্নয়নমূলক প্রকল্পের দরপত্রের বিতর্কিত ১৬টি মূল্যায়ন রিপোর্টই গায়েব করে ফেলা হয়েছে। দুর্নীতির প্রমাণ আড়াল করতে গিয়েই দরপত্রের গুরুত্বপূর্ণ এই রিপোর্ট কৌশলে সরিয়ে ফেলা হয় বলে ধারণা করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এর ফলে ডিএনসিসির এ সদস্যের তদন্ত কমিটি ২৭টি দরপত্রের অনিয়ম-দুর্নীতির পূর্ণাঙ্গ চিত্র তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করতে পারেনি।
এদিকে ১৬টি দরপত্রের মূল্যায়ন রিপোর্ট ছাড়াই ২৯ জুন ডিএনসিসির প্রশাসক ফারুক জলিলের কাছে ৪১ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, দরপত্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ঘষামাজা করার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হিসেবে ৫ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী তদন্ত কমিটির কাছে লিখিত জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়াও সবগুলো দরপত্রের নথির গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ঘষামাজার প্রমাণ পায় কমিটি। প্যাকেজভিত্তিক এসব প্রকল্পের মধ্যে ১৭টির দরপত্র বাতিল করে পুনঃদরপত্র আহ্বানের সুপারিশ করা হয়েছে। দরপত্রের নথিতে জালিয়াতির ঘটনায় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর) আহম্মদ আলী শাহ ও নির্বাহী প্রকৌশলী (বরখাস্ত) মোল্লাহ মোহাম্মদ নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে পেশাগত অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি যেসব ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়।
কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন ডিএনসিসির পরিবেশ, জলবায়ু, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ড. তারিক বিন ইউসুফ। কমিটির অপর দুজন হলেন ডিএনসিসির পরিকল্পনা ও নকশা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেম ও ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম।
যেভাবে রিপোর্ট গায়েব :
দরপত্রের ১৬টি মূল্যায়ন প্রতিবেদন সরিয়ে ফেলার বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অফিস আদেশের ভিত্তিতে গত বছরের ১৬ নভেম্বর আহ্বানকৃত সব দরপত্র এবং আনুষঙ্গিক কাগজপত্র তলব করা হয়। এ সময় দরপত্রের ২৭টি প্যাকেজের মধ্যে ১১টি প্যাকেজের পূর্ণাঙ্গ নথিপত্র সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে পাওয়া যায়। অবশিষ্ট ১৬টি প্যাকেজের নথিপত্র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরতউল্লাহর অফিস থেকে পাঠানো হয়। তবে এই ১৬টি প্যাকেজের মধ্যে ১৫টি প্যাকেজের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষরিত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর কাছে জানতে চাওয়া হলে বলা হয়, মূল্যায়ন প্রতিবেদন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহম্মদ আলী শাহর কাছে রয়েছে। এ পর্যায়ে প্রতিবেদন চেয়ে আহম্মদ আলী শাহকে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু প্রতিবেদন দেয়া দূরের কথা, তিনি কোনো জবাবই দেননি। বিষয়টি তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল খায়েরকে অবহিত করা হলে তিনি আহম্মদ আলী শাহকে মূল্যায়ন প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন। তারপরও এই রিপোর্ট তদন্ত কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়নি।
বাতিলে চিঠির সুপারিশ : ২৭ টেন্ডারে নথির গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ঘষামাজার প্রমাণ পেলেও তদন্ত কমিটি ১০টি প্রকল্পের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে কর্তৃপক্ষের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। অবশিষ্ট ১৭টি প্রকল্পের দরপত্র বাতিল করে পুনঃদরপত্র আহ্বানের সুপারিশ করা হয়েছে। অপর ১০টি প্রকল্পের বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রশাসক কাজের অনুমতিপত্র প্রদান করায় কাজগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ প্রশাসনিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। দরপত্র বাতিলের সুপারিশকৃত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- মিরপুর সেকশন ১২-এর বি-ব্লকের ৪/৪ নং লেনের ক্রস ড্রেন এবং ত-ব্লকের ২ নং লেনের মধ্যবর্তী খালের ক্রস ড্রেন মেরামত কাজ, একই এলাকার ডি-ব্লকের ২৫/ডি রোডের ১নং হোল্ডিং থেকে সংযোগ সড়ক পর্যন্ত নর্দমাসহ সড়ক উন্নয়ন কাজ, একই এলাকার বি-ব্লকের ১২নং রোডের ২২১নং হোল্ডিং থেকে ২১২নং হোল্ডিং পর্যন্ত নর্দমাসহ সড়ক উন্নয়ন কাজ, মিরপুরের উত্তর পল্লবী এলাকার ১৪নং রোডের উন্নয়ন কাজ, মিরপুরের ১২নং সেকশনের এ-ব্লকের ৮নং রোডের ১২নং হোল্ডিং থেকে ২২নং পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন কাজ, একই এলাকার বি-ব্লকের ৭/২ নং রোডের ১নং হোল্ডিং থেকে ৮ পর্যন্ত নর্দমা নির্মাণসহ সড়ক উন্নয়ন কাজ, ডি-ব্লকের ২৭নং রোডের ২নং হোল্ডিং থেকে ২৪নং হোল্ডিং পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন কাজ, সি-ব্লকের ৪নং রোডের নর্দমাসহ সড়ক উন্নয়ন কাজ, ধ-ব্লকের ১৭নং হোল্ডিং থেকে ধ-ব্লক মেইন রোড পর্যন্ত নর্দমাসহ সড়ক উন্নয়ন কাজ, মিরপুর ১০নং সেকশনের সি-ব্লকের ২১নং রোডের উন্নয়ন কাজ, একই এলাকার এ-ব্লকের ২৫নং রোডের মসজিদ থেকে খাল পর্যন্ত নর্দমাসহ রাস্তার উন্নয়ন কাজ, মিরপুর ১১নং সেকশনের এ-ব্লকের এভিনিউ ৩ রাস্তা উন্নয়ন কাজ, মাটিকাটা প্রধান সড়ক নতুন রাস্তায় আরসিসি পাইপ নর্দমাসহ রাস্তা উন্নয়ন কাজ, বাইশটেকী রাস্তা ও নর্দমা নির্মাণ কাজ, মিরপুরের ১১নং সেকশনের ডি-ব্লকে ৭নং রোডে নর্দমাসহ সড়ক উন্নয়ন কাজ, একই ব্লকের ৮নং রোডে নর্দমাসহ সড়ক উন্নয়ন কাজ এবং দেওয়ানপাড়া খাল পর্যন্ত বাইলেনের আরসিসি পাইপ নর্দমা নির্মাণসহ রাস্তা উন্নয়ন কাজ।
শীর্ষ তিন কর্মকর্তার জবাব মেলেনি : দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি ব্যাখ্যা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম এনামুল হক, সদ্য বিদায়ী প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল খায়ের এবং অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরতউল্লাহর কাছে দরপত্রের নথির গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ঘষামাজার বিষয়ে জবাব চেয়েও পায়নি তদন্ত কমিটি। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির গুরুত্বপূর্ণ এই তিন কর্মকর্তার জবাব ছাড়াই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ৪১ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান প্রকৌশলীর জবাব না দেয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫ সদস্যবিশিষ্ট দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি-২ (টেক-২) ১৯টি প্যাকেজ এবং ৬ সদস্যবিশিষ্ট দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি-১ (টেক-১) ৮টি প্যাকেজে প্রাপ্ত দরপত্রগুলো মূল্যায়ন করেন। টেক-২ সদস্যরা হলেন, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম এনামুল হক, সদ্য বিদায়ী প্রধান প্রকৌশলী ব্রি. জেনারেল আবুল খায়ের, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহম্মদ আলী শাহ, নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল আলম এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী (বরখাস্ত) মোল্লাহ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান। এর মধ্যে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দরপত্রের নথির গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ঘষামাজা ও জালিয়াতির বিষয়ে অবহিত করা হয়। কিন্তু কোনো সদস্যই এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রশ্নের জবাব দেননি। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, বারবার তাগিদ দেয়া সত্ত্বেও ১৫টি দরপত্রের মূল্যায়ন প্রতিবেদন পায়নি তদন্ত কমিটি। কারণ মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদনেও জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয়েছিল। যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিবেদন গায়েব করা হয়। তিনি বলেন, দরপত্র জালিয়াতির সঙ্গে মূল্যায়ন কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের সংশ্লিষ্টতা ছিল। যে কারণে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান প্রকৌশলীর কাছে জবাব চেয়েও পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, এই অনিয়ম, দুর্নীতি ও জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতরা সিটি কর্পোরেশনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। বিপরীতে তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন তাদের অধীনস্ত জুনিয়র কর্মকর্তা। যে কারণে অনিয়ম-দুর্নীতির অনেক তথ্য পাওয়া গেলেও তদন্ত প্রতিবেদনে কারও নাম উল্লেখ করে কিছুই বলা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, আসলে এই তদন্ত কমিটি মন্ত্রণালয় থেকে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে করা প্রয়োজন ছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএম এনামুল হক বলেন, দরপত্রে অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়া গেছে। এর ভেতরে কী লেখা হয়েছে তা তিনি পড়ে দেখেননি। দরপত্র থেকে কমিশন পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রশ্নই আসে না। এ ধরনের অন্যায় কাজে জড়িত থাকার প্রমাণ জীবনে কেউ দিতে পারবে না।
নথির গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ঘষামাজার সাক্ষী : দরপত্রে নথির গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ঘষামাজা করার বিষয়ে তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন টেন্ডার ওপেন শিট প্রস্তুতকারী ৫ জন সহকারী প্রকৌশলী। এরা হলেন অঞ্চল ২-এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমিনুর রহমান চৌধুরী, শেখ মুজিবুর রহমান, মোঃ বরকতুল্লাহ, মোঃ মিজানুর রহমান এবং ফজলে বারী। আমিনুর রহমান চৌধুরী তার জবানবন্দিতে বলেন, তার লেখা দরপত্রের ২২নং প্যাকেজের টেন্ডার ওপেনিং শিটে ডিসকাউন্ট পরিবর্তন করা হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমান জবানবন্দিতে বলেন, সংশ্লিষ্ট দরপত্র খোলার দিন তিনি ৩/৪টি ওপেনিং শিট প্রস্তুত করেছিলেন। তদন্তকারী কর্মকর্তারা এ সময় তাকে ২৭টি শিট দেখান। এ থেকে শেখ মুজিবুর রহমান ১২ এবং ২১নং প্যাকেজের জন্য তৈরিকৃত শিট তার নিজের হাতের লেখা বলে শনাক্ত করেন। এই উপ-সহকারী প্রকৗশলীর লেখা কয়েকটি শিট পরিবর্তন করার তথ্য পায় তদন্ত কমিটি। বরকতুল্লাহ জবানবন্দিতে বলেন, দরপত্র খোলার দিন তিনি ৫টি শিট প্রস্তুত করেছিলেন। তার লেখা ২৭নং প্যাকেজে ৩০ ভাগ নিুদরে দরপত্র জমা পড়ে। তবে নথিতে ১.৩ ভাগ নিুদরে বৈশাখী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়েছে। আর ৩০ ভাগ নিুদরে দরপত্র দাখিলকারী রায় এন্ড কোম্পানির নথিতে কোনো ডিসকাউন্ট নেই উল্লেখ করে টেন্ডার ওপেনিং শিট প্রস্তুত করা হয়। পরে সেটিই রায় এন্ড কোম্পানির নথিতে সংরক্ষণ করা হয়। মিজানুর রহমান তার জবানবন্দিতে বলেন, ৯নং প্যাকেজে ১ম এবং দ্বিতীয় দরদাতার মধ্যে ২০ ভাগ এবং ১৩ ভাগ ডিসকাউন্টের কথা উল্লেখ ছিল। তার লেখা ৯নং প্যাকেজের টেন্ডার ওপেনিং শিটে ২০ ভাগ ডিসকাউন্টের স্থানে ২ দশমিক ০ এবং ১৩-এর স্থানে ১ দশমিক ৩ ভাগ হিসেবে পরিবর্তন করা হয়েছে। ফজলে বারী তার জবানবন্দিতে বলেন, তার লেখা ২৫নং প্যাকেজের টেন্ডার ওপেনিং শিটের ডিসকাউন্ট ওভাররাইটিং করা হয়েছে।
শাস্তির সুপারিশ : ২৭টি প্যাকেজের তদন্ত প্রতিবেদনের প্যারায় প্যারায় দুই প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এরা হলেন ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর) আহম্মদ আলী শাহ ও মিরপুর অঞ্চল-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোল্লাহ মোঃ নুরুজ্জামান। এর আগে মোল্লাহ নুরুজ্জামানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে পেশাগত অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ১৫টি দরপত্রের মূল্যায়ন রিপোর্ট তদন্ত কমিটির কাছে হস্তান্তর করেননি আহম্মদ আলী শাহ। এছাড়া এসব কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশে দরপত্রের গুরুত্বপূর্ণ নথি পরিবর্তন করায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে পিপিআর অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়।
প্রশাসকের বক্তব্য : ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ফারুক জলিল বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত ২০১৩ সালের ১৬ নভেম্বর রাজধানীর মিরপুর এলাকায় ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ১২ কোটি টাকা। ২৭টি প্রকল্পের অনুকূলে ১৯৬টি দরপত্র জমা হয়। ২৩ জানুয়ারি টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটি (টেক) ঠিকাদারদের দেয়া কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে। এরপর সর্বনিু দরদাতার সঙ্গে চুক্তিপত্র করে কার্যাদেশও দেয়া হয়। পরে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্রের গুরুত্বপূর্ণ নথিতে ঘষামাজার (ওভার রাইটিং) অভিযোগ এনে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেয়। এ নিয়ে ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়। ১৮ জুন দৈনিক যুগান্তরে ২৭ টেন্ডারে দুর্নীতি, গুরুত্বপূর্ণ কাগজে ঘষামাজার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছাপা হয়।