দৈনিক বার্তাঃ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র স্থপতি, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পূণ:প্রবর্তনকারী, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ কালজয়ী দর্শনের প্রবর্তক, আধুনিক বাংলাদেশের রুপকার,সফল রাষ্ট্রনায়ক,শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৩তম শাহাদৎবার্ষিকী শুক্রবার।এ মহান নেতার শাহাদৎবার্ষিকী সর্বস্তরে ব্যাপকভাবে যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের জন্য দল, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহসহ ব্যাপক কমূসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপি।
কর্মসুচির মধ্যে রয়েছে৩০ মে সকাল ১০ টায় বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি’র জাতীয় নেতৃবৃন্দ দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজারে পু¯পমাল্য অর্পন ও মাজার জিয়ারত করবেন। পরে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের উদ্যোগে মাজার প্রাঙ্গণে দোয়া মাহফিল এবং ডক্টরস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর উদ্যোগে স্বেচছায় রক্তদান ও সকাল থেকে নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সম্মুখে মেডিকেল ক্যা¤প ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে। এছাড়া শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে ভোর ৬টায় দলের নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।
অনুরূপভাবে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের ৩৩তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে সারাদেশে জেলা ও মহানগরীসহ সকল ইউনিট এবং উক্ত ইউনিট সমূহের অধীনস্থ সকল ইউনিট কার্যালয়ে ৩০ মে ভোর ৬ টায় দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন এবং নিজ নিজ এলাকার সুবিধা অনুযায়ী আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও তবারক বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হবে।
জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দেওয়া শেষে খালেদা জিয়া শেরেবাংলা নগরস্থ রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ও মোহাম্মাদপুর টাউন হলের সামনে গরীব-দু:খীদের মাঝে খাবার বিতরণ করবেন।
পরবর্তী দু’দিনের খাবার বিতরণ কর্মসূচি কোথায় কখন অনুষ্ঠিত হবে তা এখনো জানা যায়নি। দলীয় সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৩ তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে এক বানীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। শহীদ জিয়ার অম্লান আদর্শ, দর্শন ও কর্মসূচি আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা রক্ষা, বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং দেশীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির নিশ্চয়তা।
তিনি আরো বলেন, তাঁর জীবিতকালে জাতির চরম দুঃসময়গুলোতে জিয়াউর রহমান দেশ ও জনগণের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। মহান স্বাধীনতার বীরোচিত ঘোষণা, স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য ভূমিকা এবং রাষ্ট্র গঠনে তাঁর অনন্য কৃতিত্বের কথা আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। ৭১’ সালে সারা জাতি যখন স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, যখন রাজনৈতিক নেতৃত্বের সিদ্ধান্তহীনতায় দেশের মানুষ দিশেহারা ঠিক সেই মুহুর্তে ২৬শে মার্চ মেজর জিয়ার কালূরঘাট বেতার কেন্দ্রে স্বাধীনতার ঘোষনা সারা জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের অভয়মন্ত্রে উজ্জীবিত করে, ফলশ্র“তিতে দেশের তরুণ, যুবকসহ নানা স্তরের মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। স্বাধীনতাত্তোর দমনমুলক শাসন শোষনের যাঁতাকলে মানুষের প্রাণ হয় ওষ্ঠাগত, দেশের মানুষের একের পর এক গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা হরণ করা হয়, দেশ একদলীয় সামন্ততান্ত্রিক শাসনের নিষ্ঠূর কবলে পড়ে পিষ্ট হতে থাকে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করে মানুষের বাক ও চিন্তার স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়। সেই সময় দেশের সর্বত্র বিভৎস অরাজকতা নেমে আসে। গণতন্ত্র হত্যা ও অরাজকতার অমানিশার দুর্যোগের মুখে দেশের সিপাহী-জনতার মিলিত শক্তির মিছিলে জিয়াউর রহমান জাতীয় রাজনীতির পাদপ্রদীপের আলোয় উদ্ভাসিত হন। ফিরিয়ে দেন বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং সংবাদপত্র ও নাগরিক স্বাধীনতা। তিনি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা করেন। উৎপাদনের রাজনীতির মাধ্যমে দেশীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশালী করেন। বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির আখ্যা থেকে খাদ্য রপ্তানীকারক দেশে পরিণত করেন।
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই মহান জাতীয়তাবাদী নেতার জনপ্রিয়তা আধিপত্যবাদী শক্তি কখনোই মেনে নিতে পারেনি। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই দেশী-বিদেশী চক্র তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। এই চক্রান্তকারীরা ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে। এই মর্মান্তিক ঘটনার মধ্য দিয়ে একজন মহান দেশপ্রেমিককে দেশবাসী হারায়। তবে চক্রান্তকারীরা যতই চেষ্টা করুক কোন ক্ষণজন্মা রাষ্ট্রনায়ককে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিলেই তিনি বিস্মৃত হন না বরং নিজ দেশের জনগণের হৃদয়ে চিরজাগরুক হয়ে অবস্থান করেন। জাতীয় জীবনের চলমান সংকটে শহীদ জিয়ার প্রদর্শিত পথ ও আদর্শ বুকে ধারণ করেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং জাতীয় স্বার্থ, বহুমাত্রিক গণতন্ত্র এবং জনগণের অধিকার সুরক্ষায় ইস্পাতকঠিন গণঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, রণাঙ্গনের অনন্য মুক্তিযোদ্ধা, নির্ভিক নির্মোহ রাষ্ট্রনায়ক শহীদ জিয়ার বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী শক্তির ক্রমাগত বিদ্বেষপূর্ণ আক্রমনের পটভূমিতে তাঁর অম্লান স্মৃতিকে বুকে ধারণ করে এবার ৩০ মে মহান নেতার শাহাদৎবার্ষিকী সর্বস্তরে ব্যাপকভাবে যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের জন্য দল, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহসহ সকল স্তরের জনগণের প্রতি আমি উদ্বাত্ত আহবান জানান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ।