1দৈনিক বার্তাঃ বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার বলেছেন, আওয়ামী লীগ গায়ের  জোরে ক্ষমতায় এসে সংবিধান পরিবর্তন করেছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে যে সংবিধান রচনা করা হয়েছে তা  কোনো সভ্য  দেশের সংবিধান হতে পারে না। ১৬  কোটি মানুষ  ভোট দিলেও এ সংবিধান  বৈধ হবে না। জনগণের সরকার আসলে এ সংবিধানকে ছুড়ে  ফেলা হবে। জনগণ এই সংবিধানকে সংশোধন করবে।

সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আয়োজনে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ  প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

এম  কে আনোয়ার বলেন, জনগণ  ভোটাধিকার থেকে শুরু করে প্রত্যেক ক্ষেত্রে তাদের ন্যায্য অধিকার  থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়-  সেনাপ্রধান, স্বয়ং  শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেতাসহ  দেশের বরেণ্য ব্যক্তিরাও তাদের  ভোটাধিকার  থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

বিএনপির প্রবীণ এ নেতা বলেন, সরকার দেশের রাষ্ট্রায়াত্ত্ব প্রতিষ্ঠান লুটপাট করে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। দলীয় ঠিকাদারদের সরকারি কাজ পেতে এখন আর অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না। অভিজ্ঞতা ছাড়াই সর্বোচ্চ দুই  কোটি টাকা পর্যন্ত কাজ পান তারা। এসব অনিয়মের ম্ধ্যামে যাকে যেভাবে ইচ্ছা রাষ্ট্রের সম্পদ ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে।

ত্বকী হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের ত্বকী হত্যা বিচারের চার্জশিট দিতে প্রধানমন্ত্রী বাধা দিচ্ছে। আর এ কথা ত্বকীর বাবা নিজের মুখে স্বীকার করেছেন।

তিনি আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে বলেন, আওয়ামী লীগের কিছু নামধারী পণ্ডিত আছে। যারা তাদের বইয়ে লিখেছেন- বঙ্গবন্ধুর পক্ষে জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতার  ঘোষণা দেন, আবার এ পণ্ডিতরাই তা অস্বীকার করেন। এরা দ্বিমুখী আচরণ করছেন।

বঙ্গবন্ধুর শাসনামলের কথা উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন,  শেখ সাহেব মুক্তিযুদ্ধের সময় ৩০ লাখ মানুষকে কবর দিয়ে গেছেন। তার আমলে এমন দূর্ভীক্ষ ছিল যে, মানুষ কলাপাতা, মাছ ধরার জাল দিয়ে নিজেদের লজ্জা নিবারণ করেছে। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে তিনি ব্যর্থ ছিলেন।

শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনিও ব্যর্থ পরিবারের একজন ব্যর্থ সদস্য। যা ইতিমধ্যে আপনার জবরদস্তি কাজের মধ্যে নিজেই প্রমাণ করেছেন।

ঢাকাবাসীদের আহ্বান জানিয়ে দুদু বলেন,ঢাকা শহরে দুই কোটিরও অধিক মানুষ বসবাস করে। আপনাদের আহ্বান জানাই, আপনারা যদি মাত্র একদিনের জন্য রাস্তায় নেমে আসেন- তাহলে এ দুর্নীতিবাজ আর লুটেরা পদদলিত হবে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন,আপনারা নারায়ণগঞ্জের ৭ হত্যাকাণ্ডের আসামিদের ধরতে পারেন না। আর আপনারা বিএনপির লোকদের বিনা কেসে  গ্রেপ্তার করে নিয়ে যান।

আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। তবে বাটি চালান দিয়ে কিংবা টর্চ দিয়ে খুঁজলেও মুজিব পরিবার, আত্মীয় স্বজন বা আওয়ামী লীগের বড় বড়  নেতাদের মধ্যে কোনো বীরউত্তম পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেন যুবদলের সভাপতি অ্যাড.মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।আলাল বলেন, আওয়ামী লীগের নিজেদের  কোনো অলঙ্কার  নেই, তাই অন্যের বিরুদ্ধে বলে। তারা অন্যের অলঙ্কার ঢাকার জন্য ইতিহাস বিকৃত করে। মুক্তিযুদ্ধের লাল সালুর মাজার বানিয়ে ব্যবসা করছে। এর জবাব জনগণকে দিতে হবে।

জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার  ঘোষক দাবি করে আলাল বলেন, ৭ই মার্চ যদি   শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দিত তাহলে  কেন ৮ মার্চ  থেকে যুদ্ধ শুরু হল না?  কেন ২৫ মার্চ পর্যন্ত আলোচনার চেষ্টা করা হয়েছে?

তৎকালীন পিপলস ভিউ নামে একটি ইংরেজি পত্রিকার বরাত দিয়ে যুবদল নেতা বলেন, পত্রিকায় ২৭ মার্চ  শেখ মুজিব হরতাল দিয়েছিল এর প্রমাণ থাকলেও, সেখানে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার কোনো তথ্য তাদের কাছে ছিল না।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ,ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর (র‌্যাব) ঘটানো ঘটনাগুলো আমাদের রক্ষী বাহিনীর কথা মনে করিয়ে দেয়।

জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শামসুরজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- যুবদলের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাবেক মেয়র আব্দুল মজিদ, সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তকদির হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য মেহেদি আহাম্মেদ রুমি, সংগঠনের সদস্য এম এ হান্নান প্রমুখ।