দৈনিক বার্তাঃ দেশের অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চলগুলোতে নারী উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৩০ শতাংশের বেশি বরাদ্দ দেয়া হবে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিডব্লিউসিসিআই) আয়োজিত বিডব্লিউসিসিআই প্রগ্রেসিভ অ্যাওয়ার্ড ২০১৩’ শীর্ষক সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পায়নের ক্ষেত্রে আমাদের নারীরা এখনও অনেক পিছিয়ে। তবে শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে নারীদের অবস্থানে এখন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এসেছে। দেশের অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চলগুলোতে নারীদের ৩০ শতাংশ নয়, আরও অগ্রাধিকার দেয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শিল্পকারখানা স্থাপনে নারী উদ্যোক্তাদের শিল্প মন্ত্রণালয় সর্বাত্মক সহযোগিতা দিবে। তবে এক্ষেত্রে নারী উদ্যোক্তাদেরও সামনে এগিয়ে আসতে হবে।
আমির হোসেন আমু বলেন, বাংলাদেশের নারীরা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে তাদের অর্জনের স্বীকৃতি পাচ্ছেন। এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।এ প্রেক্ষিতে নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে ২০১১ সাল থেকে বিডব্লিউসিসিআই’র সম্মাননা দেয়ার উদ্যোগকে তিনি সাধুবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিডব্লিউসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট সঙ্গীতা আহমেদ। এতে চেম্বারের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট এবং নরওয়ের অসলো বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড’ পাওয়া সেলিমা আহমাদও উপস্থিত ছিলেন।
সঙ্গীতা আহমেদ বলেন, প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে গত কয়েক দশকে নারী উদ্যোক্তারা অনেক এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং নীতিগত সহযোগিতার অভাবে নারী উদ্যোক্তারা প্রত্যাশিত মাত্রায় এগিয়ে যেতে পারছেন না।এ সময় তিনি শিল্পপার্ক ও অর্থনৈতিক জোনগুলোতে ৩০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ রাখার দাবি জানান।
সেলিমা আহমাদ বলেন, এ দেশের নারী নীতিমালা সারাবিশ্বে উদাহরণ হিসেবে কাজ করছে। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অবকাঠামোগত এবং কৌশলগত সুযোগ সুবিধা বাড়ানো জরুরি। কেননা ক্ষুদ্র, মাঝারি থেকে শুরু সব পর্যায়ের শিল্প স্থাপনে এটা সহায়ক হিসেবে ভূমিকা রাখবে।এতে সেলিমা আহমাদ নারী উদ্যোক্তাদের জন্য একক সংখ্যার ঋণসুবিধা প্রদান এবং ৬ মাস গ্রেস পিরিয়ড প্রদানেরও জোর দাবি তুলেন।
সফল সাত নারী উদ্যোক্তা পেলেন সম্মাননা: এ বছর দেশের সাত বিভাগ থেকে ব্যবসায় ও শিল্প উদ্যোগে সফলতার স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন নারী উদ্যোক্তাকে ‘বিডব্লিউসিসিআই প্রগ্রেসিভ অ্যাওয়ার্ড’ সম্মাননা দেয়া হয়েছে।
সম্মাননাপ্রাপ্ত সাতজনই বিডব্লিউসিসিআই’র সদস্য। এই সাতজন হলেন- বরিশাল বিভাগের আয়েশা আখতার, চট্টগ্রাম বিভাগের শামীম আরা লিপি, ঢাকা বিভাগের ফারজানা ফাতেমা বর্ণা, খুলনা বিভাগের তানজিমা জেসমিন, রংপুর বিভাগের চন্দনা ঘোষ, রাজশাহী বিভাগের মরিয়ম বেগম, এবং সিলেট বিভাগের ফরিদা আলম ।
এ ছাড়া প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার দুজন প্রতিনিধি এ সম্মাননা অর্জন করেন। তারা হলেন বৈশাখী টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার ইমতিয়াজ শাহরিয়ার ইমন এবং দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার শামসুল হক মোহাম্মদ মিরাজ।এতে সম্মাননা হিসেবে প্রত্যেককে একটি ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট এবং নগদ ১৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়।
সারা দেশের প্রায় ৩৫০ নারী উদ্যোক্তাসহ অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গ্রিনডেল্টা ইনস্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং সিইও ফারজানা চৌধুরী, ইফাদ গ্র“পের পরিচালক তাসফিন আহমেদ, বিডব্লিউসিসিআই’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রামের আহ্বায়ক মুনমুন রহমান প্রমুখ।