দৈনিক বার্তাঃ শ্যুটিং-এ প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকায় দেশের মাটিতে নাইটদের ম্যাচ মাঠে এসে দেখার সময় হচ্ছে না টিম মালিক শাহরুখ খানের৷ বৃহস্পতিবার কিন্তু ইডেনের ৬৫ হাজার দর্শক সমেত বাংলার সমস্ত মানুষই ভেবেছিলেন ইডেনে খেলা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্যালারি থেকে দলের হয়ে গলা ফাটাতে দেখা যাবে কিং খানকে৷ কিন্তু উথাপ্পাদের ইনিংসের ১০ ওভার হয়ে যাওয়ার পরেও যখন শাহরুখের গাড়ি ইডেনের গেটে ঢুকতে দেখা গেল না, তখন স্বভাবতই বেশ হতাশ হয়ে পড়েছিলেন কেকেআর সমর্থকরা৷ কারণ ইডেনে নাইটদের খেলা দেখতে যাওয়া মানেই ম্যাচের সঙ্গে এসএআরকে দর্শন ‘ফ্রি’৷ কিন্তু এদিনও শাহরুখ না আসাতে খুব বেশি দুঃখ পেতে হল না ইডেনের দর্শকদের৷ কারণ তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উথাপ্পা, নারিনরা যে ‘ফুল এন্টারটেনমেন্ট’ উপহার দিলেন, তা দেখে ঘোর নাইট বিরোধীরাও তাদের সমর্থক হয়ে যাবেন৷ বিরাটদের ৩০ রানে উড়িয়ে দিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই প্লে অফ খেলা নিশ্চিত করলেন গম্ভীররা৷ এখন বাকি একটাই কাজ, লিগ টেবলে প্রথম দুইয়ের মধ্যে শেষ করা৷ সব কিছু ঠিকঠাক চললে হয়তো ২৭ তারিখ ইডেনে প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলার সুযোগও পেয়ে যেতে পারেন উথাপ্পারা৷
বৃহস্পতিবার ম্যাচটা ছিল দু’দলের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷ কারণ লিগ টেবলের চার নম্বর জায়গাটা পাওয়ার দৌড়ে ছিল একাধিক দল৷ নাইটরা যেমন সব ম্যাচ জিতলে আরও ভাল জায়গায় পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে৷ অন্য দলগুলির জন্য তা একেবারেই নয়৷ চার নম্বরে জায়গা পাকা করার জন্যই এখন তীব্র লড়াই চালাতে হচ্ছে অন্তত তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ৷ বৃহস্পতিবারের পর এই দৌড় থেকে ছিটকে গেল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স৷ প্লে অফে ওঠার আশা তাদের এদিনই শেষ৷ টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার পর কিন্তু দিনটা কিন্তু খারাপ শুরু করেননি বিরাটরা৷ শুরুতেই নাইট অধিনায়ক গম্ভীরের (৪) কট বিহাইন্ড হওয়া৷ তারপর অল্প সময়ের মধ্যে মনীশ পাণ্ডে ১৩ রান করে প্যাভিলিয়ানে ফেরত৷ ইডেনে হঠাৎই যেন আরসিবি হাওয়া৷ কিন্তু ব্যস ওই পর্যন্তই৷ এবারের টুর্নামেন্টে অত্যন্ত খারাপ শুরু করার পর হঠাৎই যেন নিজের সেরা ফর্ম ফিরে পেয়েছেন রবিন উথাপ্পা৷ আর যেদিনই তিনি রান পাচ্ছেন, সেদিনই ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার ছিনিয়ে নিচ্ছেন তিনি৷ দলও পাচ্ছে সহজ জয়৷ এদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি৷ চলতি আইপিএল সেভেনে উথাপ্পার ম্যান অফ দ্য ম্যাচ পুরস্কার সংখ্যা এদিনের পর দাঁড়াল চারে৷ ৫১ বলে অপরাজিত ৮৩ রান করে ম্যাক্সওয়েলকেও বৃহস্পতিবার টপকে ‘অরেঞ্জ ক্যাপ’ পেয়ে গেলেন এই কর্ণাটকি খ্রীষ্টান ব্যাটসম্যান৷ তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিলেন শাকিব আল হাসান ( ৩৮ বলে ৬০)৷ তবে নাইটরা এদিন ১৯৫ রান করার পরও এদিন নিজেদের জয় সম্পর্কে একেবারে নিশ্চিত হতে পারছিলেন না, কারণ অবশ্যই বিপক্ষ দলের ব্যাটিং লাইন-আপ৷ কিন্তু গেইলরা যখন ব্যাট করতে নামলেন, তখন অন্য দৃশ্যই দেখা গেল৷ গেইল (৬), কোহলি (৩৮), ডেভিলিয়ার্স (১৩) কেউই সেভাবে রান পাননি এদিন৷ মাঝে যুবরাজ ১২ বলে ২২ রান করে কিছুটা মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছিলেন৷ কিন্তু লং অনে বিনয় কুমারের হাতে তিনি জমা পড়তেই সব আশা শেষ হয়ে যায় আরসিবির৷ এদিন আবার ছিল শাহরুখ খানের মেয়ের জন্মদিনও৷ ম্যাচ শেষে টুইট করেই বলিউড বাদশা নিজেই জানালেন, মেয়ের জন্য যতো উপহার তিনি এদিন কিনেছিলেন, তার থেকে অনেক বেশি উপহার আজ গম্ভীররা তাঁকে দিলেন৷
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৯৫/৪ (২০ ওভার)
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু: ১৬৫/৫ (২০ ওভার)