দৈনিক বার্তা-ঢাকা : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, অনেকে মনে করেন, ভারতে কংগ্রেস ক্ষমতায় না থাকলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে না। তারা আহম্মকের দল। যাদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা নেই তারা এ ধরনের কথা বলতে পারেন। আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস’র আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। আলোচনাসভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ। সৈয়দ আশরাফ বলেন, আমরা স্বাধীন। যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। কারো দয়ায় এই বাংলাদেশ স্বাধীন হয় নাই। এ স্বাধীনতা সেটা পার্শ্ববর্তী ভারত-নেপাল, দূরের আমেরিকা বা কোনো দেশের কাছে বন্ধক দেই নাই। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের রাষ্ট্রোচিত সম্পর্ক। আমরা চাই সব দেশের সঙ্গে মিলে বিশ্বের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করতে।
আওয়ামী লীগের এ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা ভারতের নিঃশেষ দেখতে চায়, তারা মোদীকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। এটা নরেন্দ্র মোদী ভালো করেই জানে, কারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। সম্প্রতি মিডিয়ায় প্রকাশিত আওয়ামী লীগ নেতাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ক্ষমতার লোভ-লালসা ত্যাগ করতে হবে। অনেকের ব্যাপারে অনেক সময় পত্র-পত্রিকায় লেখা হয়। এটা পাঠকের জন্য বা আমার জন্য সুখবর নয়। বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের এহেন কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা উচিত না, যাতে শেখ হাসিনা ও আমাদের দল আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়। আমাদের এ বিষয়ে আরো সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, আজকে ভারতের দিকে তাকান। সেখানে কংগ্রেস ভারতের স্বাধীনতা এনেছিলো। আজকে গণবিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে জনগণ তাদের জবাব দিয়েছে। এটা গণতন্ত্রের শিক্ষা। আপনি যতই ভালো কাজ করেন না কেন জনগণের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, ক্ষমতা নিয়ে মানুষের কাছে যেতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক দল জনগণ থেকে বিচ্যুত হতে পারে না। যদি কেউ বিচ্যুত হয়, তাদের চরম শাস্তি পেতে হয়।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাপান সফরে যাচ্ছেন। অচিরেই চীন সফরে যাবেন। আমরা চাই সব দেশের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করতে। পার্শ্ববর্তী ও দূরবর্তী সকলের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হোক আমরা চাই। সৈয়দ আশরাফ বলেন, যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার প্রয়োজন। হায়াত মউত আল্লাহর হাতে। তবে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। তার হাতকে আমাদের শক্তিশালি করতে হবে। তার পাশে থাকতে হবে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনটা আনন্দের ছিল না। অত্যন্ত চিন্তিত ছিলাম। বিমানবন্দরে তার উপরে হামলা করা হবে বলে গুজব ছিল। সকল ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন। সেদিন থেকেই তিনি স্বাধীনতার পক্ষের মানুষদের নিয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করেন।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। বক্তব্য রাখেন- দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাড. কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাহারা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ।