দৈনিক বার্তা : মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার দৌলতপুরের মেঘনা নদীর মোহনায় প্রায় তিনশ’ যাত্রী নিয়ে এম ভি মিরাজ-৪ নামে একটি লঞ্চ ডুবে গেছে। এতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বেলা পৌনে ৩টার দিকে কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে লঞ্চটি ডুবে যায়। লঞ্চটি ঢাকা থেকে শরিয়তপুরের সুরেশ্বর যাচ্ছিল।
লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার পর পর জেলে ও স্থানীয় লোকজন ট্রলার নিয়ে লঞ্চের যাত্রীদের উদ্ধারে নামে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ ১৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আটজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গজারিয়া নৌ-ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক (এসআই) বজলুল হক জানান, লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার পর পর আমরা ঘটনাস্থলে আসি। কিন্তু লঞ্চটি পুরো পুরো নদীতে তলিয়ে যাওয়ায় এবং প্রচন্ড স্রোত থাকায় সনাক্ত করতে পারেনি।
তিনি আরো জানান, আমাদের টিম এবং জেলে ও স্থানীয় লোকজন ট্রলারে করে মৃতদেহ গুলো ও আহতদের উদ্ধার করা হয়। আটজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া ৩০-৩৫ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বাকিরা লঞ্চে আটকা পড়ে থাকতে পারে বলে ধারাণা করা হচ্ছে।
এদিকে কোস্টগার্ডের একটি দল বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তলিয়ে যাওয়া লঞ্চটি সনাক্তে কাজ করে। সন্ধ্যা পৌনে ৭টা নাগাদ ডুবে যাওয়া লঞ্চটি সনাক্ত করা গেছে বলে কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এরপরই লঞ্চটি উদ্ধারে কাজ শুরু হয়।
মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক সাইফুল হাসান বাদল জানান, ডুবে যাওয়া লঞ্চ উদ্ধারে নারায়ণগঞ্জ থেকে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় সাড়ে ৬টায় ঘটনাস্থলে পৌছে। এছাড়া ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ডুবুরি দলও ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে।
ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া যাত্রী ইমতিয়াজ জানান, দুপুরে আকাশ কালো হয়ে ঝড়ের সম্ভাবনা দেখতে পেয়ে লঞ্চের সারেংকে আমরা যাত্রীরা বলি লঞ্চটি যেন নদীর পাড়ে কোথাও ভেড়ান। কিন্তু সারেং আমাদের কথা না শুনে মাঝ নদী দিয়েই লঞ্চটি চালিয়ে যান। এর পৌনে এক ঘন্টার মধ্যে ঝড়ের কবলে পড়ে লঞ্চটি ডুবে যায়।
এদিকে লঞ্চ ডুবিতে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান। তিনি রাত ৮টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে এ ঘোষণা দেন। এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটির চেয়ারম্যান।
গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ জানান, লঞ্চ ডুবির ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর পর ঊর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়। লঞ্চটিতে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ জন যাত্রী ছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি।