দৈনিক বার্তা : নিলামে উঠতে যাচ্ছে ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর তিনটি চিঠি। এই চিঠির প্রাপক পুত্র হরিলাল। কড়া ভাষায় তার প্রতি নিজের বিদ্বেষ উগরে দিয়েছেন গান্ধীজি।
১৯৩৫ সালের জুন মাসে ছেলেকে উদ্দেশ্য করে চিঠি তিনটি লেখেন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। চিঠিগুলির প্রতিটি ছত্রে ছেলের প্রতি নিজের উষ্মা ও ঘৃণা গোপন করেননি তিনি। একটি চিঠিতে হরিলালের চালচলন নিয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি লিখেছেন, তোমার জানা উচিত, তোমাকে নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা এই মুহূর্তে স্বাধীনতা আন্দোলনের চেয়েও আমার কাছে বেশি জটিল।
আরেকটি একটি চিঠিতে গান্ধী লিখেছেন, মনু আমার কাছে তোমার সম্পর্কে বেশ কিছু ভয়ঙ্কর কথা বলেছে। সে জানিয়েছে, তার আট বছর বয়েস হওয়ার আগে তুমি তাকে ধর্ষণ করেছিলে। ঘটনায় ও এতোই জখম হয় যে চিকিৎসার প্রয়োজন দেখা দেয়।
প্রসঙ্গত, হরিলালের মেয়ে মনু সবরমতী আশ্রমে তার ঠাকুর্দা মোহনদাসের কাছে এই সময় কিছু দিন কাটিয়েছিলেন। বোঝা যায়, তখনই জীবনের চরম লজ্জাজনক অধ্যায়টি গান্ধীজির কাছে তিনি প্রকাশ করেন।মহাত্মার তিনটি চিঠিই গুজরাটি ভাষায় লেখা। চিঠিগুলি গান্ধী পরিবারের কোনও একটি শাখা সূত্রেই ইংল্যান্ডের শ্রপশায়ারের নিলাম সংস্থা মুলকস অকশনার্স কর্তৃপক্ষের হাতে আসে। নিলামকারী সংস্থার দাবি, প্রতিটি চিঠির দাম আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ হাজার পাউন্ড ছুঁতে পারে।
বাবার মতোই ইংল্যান্ডে গিয়ে ব্যারিস্টারি পড়ার ইচ্ছে ছিল হরিলাল গান্ধীর। কিন্তু সেই সময় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করায় গান্ধীজির মানসিকতা তাতে সায় দেয়নি। ইংল্যান্ড যেতে সে কারণেই হরিলালকে তিনি অনুমতি দেননি। এরপর থেকেই বাবা-ছেলের সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত ১৯১১ সালে পরিবারের সঙ্গে সব সম্পর্ক ত্যাগ করেন গান্ধীপুত্র। আমৃত্যু নিজের পিতৃ বিদ্বেষ বজায় রেখেছিলেন হরিলাল।
নিলামে ওঠা একটি চিঠিতে ছেলেকে গান্ধীর আকুল প্রশ্ন, দয়া করে আমাকে একদম সত্যি কথাটা জানাও, তুমি কি এখনও মদ্যপান আর ভ্রষ্টাচার নিয়ে মেতে আছো? মদ্যপানের প্রতি এই আকর্ষণের চেয়ে তোমার মৃত্যুই আমার কাছে অধিক কাম্য।