দৈনিক বার্তা : নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনার পর অবসরে পাঠানো র্যাবের তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারে ব্যবস্থা নেওয়ার যে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট, পুলিশ তা পালন করবে। আজ রোববার নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার মুহিদ উদ্দিন এ কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বলেন, উচ্চ আদালত যে নির্দেশ দেবেন; সেটা অবশ্যই পালন করতে হবে। এ নিয়ে আর কোনো কথা বলার সুযোগ নেই।
জেলা পুলিশ সুপার ব্রিফিংয়ে সাত খুনের ঘটনায় তদন্ত-সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় নোয়াখালী থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১২ দিন হলো বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে। এত বড় ঘটনার তদন্ত এত অল্প সময়ে শেষ করা সম্ভব নয়। তবে পুলিশ সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিষয়টি তদন্ত করছে। তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে গণমাধ্যমকে এখনই সে সম্পর্কে বলা সম্ভব নয়।
আজ হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ অবসরে পাঠানো র্যাবের তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারে তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন। দণ্ডবিধি বা বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া না গেলে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করতে বলা হয়েছে।
সেই তিন কর্মকর্তা হলেন র্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের সাবেক প্রধান লে. কমান্ডার এম এম রানা। তিন কর্মকর্তার মধ্যে সেনাবাহিনীর দুজনকে অকালীন এবং নৌবাহিনীর একজনকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়।
সংবিধানে প্রদত্ত মৌলিক অধিকার রক্ষায় ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করে নিহত বা খুনের শিকার আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের পক্ষে নির্বাহী সভাপতি মাহবুবুর রহমান ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রিট আবেদন করেন।
রিটে সাতজনকে অপহরণের পর খুনের ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্তি অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আল আমিন সরকার।
গত ২৭ এপ্রিল দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহূত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। এর তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যায় একে একে ভেসে ওঠে সাতজনের মরদেহ। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে মামলা করেছে নজরুলের পরিবার।