দৈনিক বার্তা : শেন জার্গেনসেনের বিকল্প খোঁজার কথাই ভাবছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। তার পদত্যাগের পর নতুন কোচ নেয়ার ব্যাপারে ভাবছেন বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান।ক্রিকেট সংবাদের ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি বলেন, যে চলে যেতে চায়, তাকে আটকে রাখার পক্ষে নন তিনি। কেউ যদি চলেই যেতে চায়, তাকে ধরে রাখার কোনো কারণ নেই। কারণ সে এখানে আর তার শতভাগ দিতে পারবে না।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর নিজের দেশ অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলেন জার্গেনসেন। সেখান থেকে ই-মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচ।জার্গেনসেনের পদত্যাগপত্র পেয়েছেন জানিয়ে গত সোমবার বিসিবির গণমাধ্যম ও যোগাযোগ কমিটির সভাপতি জালাল ইউনুস সাংবাদিকদের বলেন, জুনে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ পর্যন্ত থাকার কথা বলেছেন কোচ।
এই সময়টাকে নতুন কোচ খুঁজতে কাজে লাগাতে চাইছে বিসিবি। নাজমুল হাসান বলেন, সম্ভবত আগামী সপ্তাহেই আমরা বোর্ড-সভায় বসব। তাকেই রাখব, নাকি বিকল্প খুঁজব; এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। তবে এটা নিশ্চিত যে, আমরা নতুন ক্চো খুঁজছি।
তবে কোচ পদত্যাগ করার পর বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছিলেন অন্য কথা। নতুন কোচের কথা মোটেই ভাবছেন না জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, তাকে বোঝাতে চেষ্টা করব এবং পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে ফেরাতে চাইব। বিষয়টি নিয়ে মুশফিক বিসিবি সভাপতির সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানিয়েছিলেন।
অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরে কোচ জার্গেনসেনও বলেছিলেন, বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করেই তবে পদত্যাগের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের ব্যর্থতা দেখে বিসিবি সভাপতি ‘নতুন করে সবকিছু ঢেলে সাজানোর কথা বলেছিলেন। এরপর কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন কোচ খুঁজছে বাংলাদেশ। অনেকেরই ধারণা, এই বিষয়গুলোর কারণেই জার্গেনসেন কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।ইউনুস সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তার ধারণা, কোচ আবেগতাড়িত হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।তবে কোচ দেশে ফিরে বলেছিলেন, আবেগতাড়িত হয়ে সিদ্ধান্ত নেননি। ভেবে চিন্তেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
বিসিবি সভাপতি অবশ্য বুঝতেই পারছেন না জার্গেনসেন হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত কেন নিলেন।আমি বলেছিলাম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর দলে ওলটপালট হবে। দলের ভালোর জন্য ওই ওলটপালটের মধ্যে টিম ম্যানেজমেন্টও পড়বে বলেছিলাম। এ বিষয়টি সবাই জানত।
নাজমুল হাসান বলেন, আমার মনে হয় দলের বাজে পারফরম্যান্স তাকে পদত্যাগে উদ্বুদ্ধ করে থাকবে। অথবা কিছু পরিচালকের মন্তব্যে সে নিজেকে অনিরাপদও মনে করে থাকতে পারে।
তবে বিসিবি থেকে তাকে কোনো প্রকার বার্তা দেয়া হয়নি বলেই জানান হাসান। কোনো টুর্নামেন্টে দলের পারফরম্যান্স মানের সঙ্গে বেমানান হলে সাধারণত কোচ পরিবর্তন হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দল ব্যর্থ হলে কোচ পরিবর্তন হয়, কিছু ক্ষেত্রে কোচ নিজেই সরে দাঁড়ায়। কিন্তু জার্গেনসেন কেন সরে দাঁড়াল, সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। বোর্ড তাকে এমন কোনো বার্তাও দেয়নি যে, সে বরখাস্ত হতে পারে।
টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৮ জন বিদেশি কোচ নিয়োগ দিয়েছে। এর মধ্যে তিন জন নিজে থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। স্টুয়ার্ট ল আর রিচার্ড পাইবাসের পর নিজে থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন জার্গেনসেন। ২০১৫ বিশ্বকাপের আর বেশি বাকি নেই। জুন মাসে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের পরপরই হয়ত বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করে দেবে বাংলাদেশ। এই অল্প সময়ের মধ্যে কী বিদেশি কোনো ভালো কোচ পাবে বিসিবি? যদি না পায়, তাহলে দেশের কোচদের ওপরেই আস্থা রাখার কথা জানালেন নাজমুল হাসান।
যদি জার্গেনসেনের বিকল্প খুঁজে না পাই, প্রয়োজন হলে আমরা দেশের কোচদের ওপরই দায়িত্ব দেব। একমাত্র বিদেশি কোচ খুঁজে না পেলেই দেশের কোচদের দায়িত্ব দেয়া হবে। তবে আমি এটা নিশ্চিত, দলের পারফরম্যান্স এর চেয়ে আর খারাপ হবে না।