দৈনিক বার্তা: রাজধানীর ধানমন্ডি মাঠ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। বৃহস্পতিবার সিটি করপোরেশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে ধানমন্ডি মাঠ উন্মুক্ত করে দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দেন বলে জানা গেছে।
গণপূর্ত বিভাগের মালিকানাধীন মাঠটি একসময় সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। তবে ২০০৯ সালে ধানমন্ডি ক্লাবের নাম পরিবর্তন করে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব লিমিটেড করার পর মাঠটি ঘিরে দেয়া হয়। দুই বছর ধরে মাঠে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে থাকা ওই মাঠে গত মার্চে দুটি ব্যাডমিন্টন কোর্ট, দুটি টেনিস কোর্ট ও একটি বাস্কেটবল কোর্ট নির্মাণ শুরু হয়। নির্মাণকাজ করছিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটউট (আইএবি) খেলার মাঠের অব্যবস্থাপনা, অবৈধ স্থাপনা এবং যথেচ্ছ ব্যবহারের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৪ সালে হাইকোর্টে একটি রিট দাখিল করে। ২০০৪ সালে হাইকোর্ট মাঠ রক্ষায় ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেন।
পরবর্তীতে ১৫ মার্চ, ২০১১ হাইকোর্ট মাঠ রক্ষায় চূড়ান্ত আদেশ দেন। আদেশে হাইকোর্ট ধানমন্ডি মাঠে খেলার জন্য অপ্রয়োজনীয় সকল অবৈধ স্থাপনা ১৫ দিনের মধ্যে অপসারণ করে উক্ত মাঠ সবার জন্য উন্মুক্ত রাখার জন্য ঢাকা সিটি কর্পোরেশন, রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুস্পষ্ট আদেশ দেন। এই আদেশ উপেক্ষা করে মাঠে স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু হলে গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন এর প্রতিবাদ জানায়।
ধানমন্ডি খেলার মাঠ রক্ষায় নির্দেশনা চেয়ে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন হয়। স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ইকবাল হাবিব ও স্থানীয় বাসিন্দা ফারজানা শাহনাজসহ ছয়জন রিট আবেদনটি করেন। তার আগে মাঠে ঢুকে আন্দোলন করার জন্য মোবাশ্বের হোসেনসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করে মাঠ কর্তৃপক্ষ। ওই চারজন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।
এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বাংলাদেশ স্থপতি ইন্সটিটিউট (আইএবি), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), গ্রিন ভয়েস, সবুজ পাতা, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, ঢাকা যুব ফাউন্ডেশন, আদি ঢাকাবাসী ফোরাম, পুরান ঢাকা পরিবেশ উন্নয়ন ফোরাম, বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোশিয়েশন, সিডাস, সেবা, পিস, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্ট, পরিবর্তন চাই, আইন ও শালিস কেন্দ্র, সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ, নিজেরা করি, নাগরিক উদ্যোগ, সুন্দর জীবন, বিআইপি, সুজন, ব্লু প্ল্যানেট ইনিশিয়াটিভ, সিটিজেন রাইটস মুভমেন্ট, বারসিক, জাতীয় অধূমপায়ী ফোরাম, সার্চ স্কেটিং ক্লাব, ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (ডেন), মাস্তুল, রক্ত সৈনিক, মেঘ রোদ্দুর খেলাঘর আসর, ছাত্র ইউনিয়নসহ ২০-২৫টির অধিক পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠন।