দৈনিক বার্তা :তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দাবিতে ঢাকা-তিস্তা লংমার্চ রংপুরে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার রাতে রংপুর শহরে পৌঁছায়। বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে এ লংমার্চে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। লংমার্চে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা রংপুরেই রাত যাপন করবেন। মির্জা ফখরুলসহ বেশ কিছু কেন্দ্রীয় নেতা শহরের হোটেল নর্থ ভিউ এ রাতযাপন করবেন।
বুধবার সকালে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশ শেষে লংমার্চ ফের যাত্রা করবে লালমনিরহাটের ডালিয়া অভিমুখে। ডালিয়া পৌঁছে সকাল ১১টায় তিস্তা ব্যারেজের সামনে অনুষ্ঠিত হবে চূড়ান্ত সমাবেশ। আর এ সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিএনপির ২ দিনের কর্মসূচি।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক সংলগ্ন স্থানীয় সাথী সিনেমা হলের সামনে অনুষ্ঠিত লংমার্চের পথসভায় মির্জা ফখরুল বলেন, অবিলম্বে তিস্তা চুক্তি করতে হবে। আমরা জানি এ দাবি করে কোনো লাভ হবে না। কারণ এ সরকার ভারতের তাবেদার। আওয়ামী লীগ সরকার এদেশের জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়। তারা মাত্র ৫ শতাংশ মানুষের ভোটের সরকার।
তাই দেশকে বাঁচাতে ও দেশের কৃষককে বাঁচাতে সবাইকে ঐক্য হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের পতন ঘটানোর আহ্বানও জানান তিনি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, অন্যায়ভাবে এ দেশের জনগণকে গুলি করে হত্যা করবেন না। ক্ষমতা কারো চিরস্থায়ী নয়।
বিকেল সোয়া ৫টায় গোবিন্দগঞ্জের চারমাথা মোড়ে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত পথসভায় মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকারের অন্যায় আচরণ আর মুখ বুঝে সহ্য করা হবে না। আন্দোলন করতে হবে। সরকারের নতজানু নীতির কারণে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে উত্তরবঙ্গকে মরুকরণের দিকে ঠেলে দিয়েছে ভারত। অথচ সরকার এর প্রতিবাদ করছে না।
এর আগে বিকেল পৌনে চারটায় সিরাজগঞ্জ থেকে বগুড়ার মাটিডালি বিমান মোড়ের পথসভা স্থলে পৌঁছায় লংমার্চের গাড়ি বহর। সেখানে তাদের স্বাগত জানান, বগুড়া জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল, সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন, সহ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আজগর হেনা, সহ সভাপতি সোনাতলা উপজেলা চেয়ারম্যান আহসানুল তৈয়ব জাকিরসহ অসংখ্য নেতাকর্মী।
সংক্ষিপ্ত এ পথসভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, উত্তরাঞ্চলের ৮ জেলার তিন কোটি মানুষ পানি সমস্যায় রয়েছে। ভারতের পানি প্রত্যাহারের ফলে ওই এলাকা মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। এ লংমার্চ ভারত সরকারের বিরুদ্ধে নয়, বরং বাংলাদেশের জনগণের ন্যায্য হিস্যা আদায়ের জন্য।
এর আগে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দাবিতে মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে উত্তরার আজমপুর মোড়ে আমির কমপ্লেক্সের সামনে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত পথসভার মধ্য দিয়ে শুরু হয় লংমার্চ কর্মসূচি। বেলা সোয়া ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কড্ডায় পৌঁছে। সেখানে পথসভা শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লংমার্চটি বগুড়ার উদ্দেশে রওয়ানা হয়।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আসাদুজ্জামান রিপন,খায়রুল কবীর খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ লংমার্চে রয়েছেন।