মিজানুর রহমান/দৈনিক বার্তা: ঘুষ দাবি ও ভুয়া বাদি সাজিয়ে সাজানো ছিনতাই মামলাসহ ১০ টি মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগে বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) , বরগুনা সদর থানার ওসিসহ (তদন্ত) পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দাযের করা হয়েছে। বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে গতকাল বুধবার সকালে বরগুনা সদর উপজেলার কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের রতাবাড়িয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য মোখলেসুর রহমান বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিচারিক হাকিম মঈনুদ্দিন নোমান মামলাটি গ্রহণ করে আদেশের জন্য অপেক্ষমান রাখেন।
পুলিম সুপার শ্যামল কুমার নাথ, বরগুনা সদর থানার ওসি (তদন্ত) পুলক চন্দ্র রায়, উপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুল ইসলাম, সহকারি উপপরিদর্শক (এএসআই) বাদল মৃধা, উপরিদর্শক জাফর হোসেন ।
যোগাযোগ করা হলে পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ গতকাল দুপুরে বলেন, একটু ভুল বোঝাবুৃঝির কারণে এটি হয়েছে। বিষয়টি আমরা নিরসনের চেস্টা চালাচ্ছি।
মাামলার অর্জিতে বাদি অভিযোগ করেন, বরগুনার পুলিশ সুপার ও বরগুনা সদর থানার ওসি (তদন্ত) কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তাঁর এবং তাঁর ভাই-ভাগ্নে, ভাইয়ের ছেলেসহ অন্য আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামরা দায়ের করে তাঁদের হয়রানি ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন। এরইমধ্যে তাঁদের বিরুদ্ধে দশটি মামলা দায়ের করে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার মারধর ও জেল খাটিয়েছেন। গত ৪ মার্চ তাঁর ছোট ভাই রেজাউল করিমকে একটি মামলায় পুলিশ সন্দেহমূলকভাবে গ্রেপ্তার করে । এরপর আসামীরা তাঁদের কাছে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর ভাইকে জিআর ৪৫১/২০১৩ , জিআর ৮/২০১৪ ও জিআর ৯/২০১৪ তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠায় । তিনটি মামলায় ১৪ দিন হাজতবাসের পর আদালত থেকে ৯ থেকে ১৮ মার্চ পৃথকভাবে মামলাগুরোতে জামিনে মুক্তি পান। এসব মামলায় তদ্বির করার অপরাধে তাঁকে (বাদি) ও তাঁর ভাই নিজাম উদ্দিকে ২৯ মার্চ বিকাল ৪ টার দিকে তাঁদের বাড়ি থেকে আটক করে এবং তাঁদের দুই ভাইকে পিছমোড়া করে কোমড়ে রশি বেঁধে মারধর করতে করতে থানায় নিয়ে আসে। এরপর ভুয়া বাদি সাজিয়ে একটি ি আমাদের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা ছিনতাই মামলা দায়ের করে। এরপর এই মামলায় তাঁদের ( বাদি ও তাঁর ভাই) জেলহাজতে পাঠায়। পরে ওই মামলায় তাঁরা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে জামিন আবেদন করলে বিচারিক হাকিম গত ৯ এপ্রিল তাঁদের জামিন দেন এবং বাদিকে আদালতে হাজির করার জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। এরপর পুলিশ বাদিকে হাজির করতে না পেরে আমাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। একইভাবে তাঁর আরেক ভাই রেজাউল করিম, ভগ্নিপতি মো. শাহজাহান, ভাগ্নে আল আমিন ও ফুফাতো ভাই আক্কাস হোসেন, ভাইয়ের ছেলে ইমরান হোসেনকে গত ৩১ মার্চ আরেকটি মামলায় আসামী করে হয়রানি করা হয়। এইভাবে তাঁর (বাদি) এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ১০ টি মামলায় আসামী করা হয়। এসব মামরার পিরিস্তিও আদালতে পেশ করেন বাদি।
মামলার বাদি মোখলেচুর রহমান বলেন, পুলিশ সুপার ডেকে নিয়ে আমার পরিচয় জানার পর বললেন আপনি আমাদের বিপদের মধ্যে ফেললেন। মামলার প্রত্যাহারের ব্যাপারে বলেন,আপনি যদি মামলা প্রত্যাহার করেন তাহলে আপনার এবং আপনার ভাইদের বিরুদ্ধে যে সব মামলা আছে তা আমি প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করব।
বরগুনার পাবলিক প্রসিকিউটর(পিপি) ভ’বন চন্দ্র হাওলাদার মামলার হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বিচারক শুনানি শেষে মামলাটি আদেশের জন্য রাখেন।