1দৈনিক বার্তা: দুর্যোগ  মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতির প্রশংসা করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন। ১৭ এপ্রিল নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক সভায় তিনি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।গত ২০ বছরে বাংলাদেশের ১৩  কোটি ৫০ লাখ মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান জাতিসংঘ মহাসচিব।

তিনি বলেন,  দেশটির গ্রামীণ পর্যায়ে সরকারি উদ্যোগে ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান এবং যে কোনো দুর্যোগের পর দ্রুত সাড়া দিতে ২৫ হাজার কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রাখা সত্যিই দুর্যোগ প্রবণ বিশ্বের অন্য  দেশগুলোর জন্য অনুসরণীয় হতে পারে।

জাতিসংঘের মানবিক ও জরুরি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ বিশ্বব্যাপী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এ সভার আয়োজন করে।সভায় তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান-কি মুন।

তিনি বলেন, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের পাশাপাশি ২০১৫ পরবর্তী উন্নয়ন এজেন্ডার রূপরেখা  তৈরি এবং বিশ্বে জলবায়ূ পরিবর্তনের ওপর একটি সর্বজনীন আইনি চুক্তি গ্রহণ করতে হবে।এছাড়া দুর্যোগ কবলিত মানুষের অস্থিরতা ও দুর্ভোগ কমাতে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে প্রিভেন্টিভ ব্যবস্থা নেয়ারও সুপারিশ করেন তিনি।

ব্রিফিংয়ে উপস্থিত বাংলাদেশ মিশনের মান্যবর স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, জলবায়ুজনিত ঝুকির কারণে বাংলাদেশের মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে বাঁচে। সেই সংগ্রামে জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতি তাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। যে কোন দুর্যোগ মোকাবেলায় বর্তমান সরকারের তাৎক্ষণিকভাবে ঝাপিয়ে পড়ার বিষয়টি তিনি তুলে ধরেন।ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব তিনটি বিশেষ পরামর্শ দেন। পরামর্শ তিনটি হচ্ছে- আমাদেরকে এমডিজির লক্ষ্যপূরণ করতে হবে,  পোস্ট ২০১৫ উন্নয়ন এজেন্ডার রূপরেখা তৈরী করা এবং বিশ্বে জলবায়ূ পরিবর্তনের উপর একটি সর্বজনীন আইনি চুক্তি গ্রহন করা।

তিনি দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রিভেন্টিভ ব্যবস্থার সুপারিশ করেন। যার ফলে মানুষের অস্থিরতা ও কস্ট অনেকাংশে কমে যাবে।জাতিসংঘের প্রধান বলেন, জনসংখ্যার ঘনত্বের বিচারে বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে জনাধিক্যের দেশ। গত ২০ বছরে দেশটির ১শ’৩৫ মিলিয়ন লোক প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবলিত হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্র¯‘তির ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, দেশটির গ্রামীণ পর্যায়ে সরকারী উদ্যোগে ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান এবং যে কোন দুর্যোগের পর দ্রুত সাড়া দিতে ২৫ হাজার কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রাখা সত্যিই দুর্যোগ প্রবন বিশ্বের অন্য দেশগুলোর জন্য অনুসরণীয় হতে পারে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের এই মূল্যায়নে তাকে ধন্যবাদ জানান ব্রিফিংকালে সভামঞ্চে উপস্থিত বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন। প্রসঙ্গক্রমে ড. এ কে আব্দুল মোমেন সভায় উপস্থিত সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বাংলাদেশে কোন মানবিক সঙ্কট নেই। সরকার যে কোন ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ঘটনার বিরুদ্ধে অসম্ভব দ্রুততায় পরিস্থিতি মোকাবেলায় ঝাপিয়ে পড়ে।

মহাসচিব ড. এ কে আব্দুল মোমেনের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে সাম্প্রতিক আশুলিয়ায় তাজরিন গার্মেন্টসে অগ্নিকান্ড ও রানা প¬াজা ধ্বসের পর সরকারের ভুমিকা বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের বিষয়টি তুলে ধরে বাংলাদেশকে দুর্যোগ মোকাবেলায় বিশ্বের দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপন করেন।