দৈনিক বার্তা:পয়লা বৈশাখের পর থেকে রাজধানীতে কমেছে মাংসের দাম। রাজধানীর খুচরা বাজারে শুক্রবার ছুটির দিনে তরিতরকারী বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। শুক্রবার চাহিদা বেশি থাকায় আগের দিনের তুলনায় বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা।এদিকে ক্রেতারা জানান ব্যবসায়ীরা শুক্রবার অতিরিক্ত চাহিদার কথা বলে ইচ্ছে করেই দাম বাড়িয়ে দেয়। পাইকারি বাজারে সরবরাহ বাড়ায় মাংসের দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। খুচরা বাজারে কিছুটা বেড়েছে টমেটো আর পেপের দাম। অন্যান্য সবজি স্থিতিশীল রয়েছে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও ক্রেতার উপস্থিতি একেবারেই কম পলাশী বাজারে। এখানে প্রতি কেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০, টমেটো ৫০, গাজর, বেগুন ও শশা ৩০ থেকে ৪০, করলা ৩০, আলু ১৪ থেকে ১৬ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, দাম আগের মতোই আছে। তবে ক্রেতাদের রয়েছে পাল্টা অভিযোগ।
ক্রেতারা বলছেন,আগের থেকে দাম অনেক বেশী রাখছে। প্রতিটি জিনিস এর উপর ৪ থেকে ৫ টাকা বেশী রাখছে।এদিকে,দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ২৬ টাকা প্রতিকেজি। বিক্রেতারা বলছেন, আদার দাম কিছুটা বাড়তি।
গ্রীষ্মকালীন তরকারি পটল এখনও বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২টাকায়।চাহিদা কম থাকায় বৈশাখের ইলিশ নেমে এসেছে তার স্বাভাবিক দরে। গত চার দিনে দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে জানান বিক্রেতারা। তবে তরকারীর দাম কমতে আরো কিছু দিন সময় লাগবেবলে জানান তারা।কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঝিঙ্গা ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা,আলু ১৫ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা,বিক্রি হচ্ছে।এদিকে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ২৮ থেকে ৩০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ২৮ টাকা থেকে ৩০,দরে বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পয়লা বৈশাখের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রতিকেজি গরুর মাংসের দাম কমেছে ৪০ টাকা, ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগির দাম কমেছে ২০ টাকা। বাজারে গরুর মাংস ২৮০ টাকা, ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।মাংস ব্যবসায়ী মো. আফজাল হোসেন বলেন, পয়লা বৈশাখের পর পাইকারি বাজারে গরুর দাম কমায় বাজারে মাংসের দাম কমেছে।
বাজারে গরুর মাংস ২৮০ টাকা,খাসির মাংস ৪৮০ টাকা, দেশী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৪৫ টাকা থেকে ১৪০, লেয়ার মুরগি ১৪০ টাকা থেকে ১৫০, হাঁস ৩৫০ টাকা, ভেড়া ও ছাগীর মাংস ৪৫০ টাকা এবং কবুতরের বাচ্চা ২৬০ টাকা জোড়া হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বাজারে ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ দুই হাজার ৮০০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ টাকা, চায়না পুঁটি ১৩০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, চিংড়ি (বড়) এক হাজার ২০০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ টাকা, সিলভার কার্প ১৩০ টাকা, শিং মাছ ৮৫০ টাকা, বজরি টেংরা ৩৫০ টাকা, নলা মাছ ২৫০ টাকা, আইড় মাছ ৭০০ টাকা, কার্ফু মাছ ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।তবে বাজারে কাঁচা মরিচ, বেগুন, করলা, পেপেসহ সবজির দাম কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।
কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি দেশী শসা ৫০ টাকা, আমদানি শসা ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৬০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, ঝিঙ্গা ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, আলু ১৫ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, উস্তা ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, কচুর লতি ৫০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, ক্যাপসিক্যাম ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া, প্রতিটি ফুলকপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৪০ থেকে ১০০ টাকা ও লাউ ৩০ টাকা, জালি কুমড়া ২৫ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে এবং প্রতিহালি কাঁচকলা ৩০ টাকা ও লেবু ২০ টাকা থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।এছাড়া, বাজারে লালশাক, ডাটা, পুঁইশাকের আঁটি ২০ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে এবং লেটুস পাতা প্রতিটি ১৫ টাকা, পুদিনাপাতা ১০০ গ্রাম ২০ টাকা, ধনেপাতা প্রতি ২৫০ গ্রাম ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজ ২৮ থেকে ৩০ টাকা, আমদানি পেঁয়াজ ২৮ টাকা থেকে ৩০, চায়না বড় রসুন ৭৫ টাকা, দেশি রসুন ৬০ টাকা, একদানা রসুন ১২০ টাকা, চায়না আদা ২৬০ টাকা, আমদানি আদা ২০০ টাকা, শুকনা মরিচ ১৬০ টাকা , হলুদ ১২০ টাকা, হলুদের গুঁড়া ১৮০ টাকা, মরিচের গুঁড়া ২৫০ টাকা, ধনিয়া ১০০ টাকা, আটা (২ কেজির প্যাকেট) ৭০ টাকা, ময়দা ( দুই কেজির প্যাকেট) ৮৫ টাকা, দারুচিনি ৩০০ টাকা, এলাচি এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৭০০ টাকা, জিরা ৩৫০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা, ভেশন ৬০ টাকা, দেশি মশুর ডাল ১১০ টাকা, ভারতীয় মশুর ডাল ৮০ টাকা, খেসারি ডাল ৫০ টাকা, মুগ ডাল ১৩০ টাকা, ছোলা ৬০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৫০ টাকা, মাসকলাই ৯০ টাকা,খোলা চিনি ৪৪ টাকা, প্যাকেট চিনি ৪৮ টাকা ও প্রতি লিটার সয়াবিন খোলা ১০৫ টাকা ও বোতলজাত সয়াবিন ১১৫ টাকা হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
আর খুচরা বিক্রেতারা দায় চাপালেন পাইকারী বিক্রেতাদের ওপর। প্রতি কেজি চায়না আদা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকায়। দেশি আদা ১৯০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় পেঁয়াজ, আলুসহ সবজির দাম কমেছে, চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চায়না আদা সংকটের কারণে দেশি আদার দাম বেড়ে গেছে।
চালের বাজারে প্রতিকেজি নাজিরশাইল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা, মিনিকেট ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, লতা আটাশ ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা, মোটা চাল ৩৫ টাকা, জিরা নাজির ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, পাইজাম ৪০ টাকা, চিনি গুড়া ১০০ টাকা, পারিজা ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা, বিআর-২৮-৪৪ টাকা, বিআর-২৯-৪২ টাকা, হাসকি ৪২ টাকা, স্বর্ণা ৩৫ টাকা থেকে ৩৬ টাকা, লাল বিরই ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতি হালি ফার্মের মুরগির লাল ও সাদা ডিম ২৬ টাকা, হাঁসের ডিম ৩৫ টাকা, পাকিস্তানি মুরগির ডিম ৪০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ৪০ টাকা হালি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।