1দৈনিক বার্তা: প্রবীণ সাংবাদিক এ বি এম মূসা শাসকগোষ্ঠীর সমালোচনা করে  শেষ বয়সে তাদের  রোষাণলের শিকার হয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রবীণ সাংবাদিক ও কলামিস্ট এ বি এম মূসা গণতন্ত্র ও সাধারণ মানুষের জন্য কলম ধরেছিলেন বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

শুক্রবার বিকালে জাতীয়  প্রেস ক্লাবে এবিএম মূসা স্মৃতি মঞ্চে আয়োজিত ‘সপ্তাহব্যাপী   প্রেস ক্লাব বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে মির্জা আলমগীর বইমেলার প্রতিটি স্টল পরিদর্শন করেন। বই মেলা আসা সকল পাঠককে বই কেনার উৎসাহ দেন।মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রকে ফিরে আনার জন্য মানুষের যে আকুতি ছিল তা তিনি তার লেখা ও বক্তব্যের মধ্যে তুলে এনেছিলেন। তার চলে যাওয়ার এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।

এদিকে, শুক্রবার বিকেলে জাতীয়  প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত সাংবাদিক এবিএম মূসা স্মরণসভায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর হস্ত ক্ষেপের কারণে  লোর প্রধান নির্বাহী রিজওয়ানার স্বামী ফিরে এসেছেন। তাহলে তো বলাই যায়,  চৌধুরী আলম, ইলিয়াস আলীদের উদ্ধারের  ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করেননি প্রধানমন্ত্রী। এসব কারণে একটি বিষয় স্পষ্ট, একজন মানুষের করুণার ওপর দেশের মানুষ বেঁচে আছে।

মান্না বলেন, রিজওয়ানার স্বামী অপহৃত আবু বকর সিদ্দিককে ফিরিয়ে দেয়া হলো। কিন্তু কী কারণে কারা তাকে অপহরণ করেছিল, তা আমরা এখনো জানি না। আবার আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, গত চার বছরে সাড়ে চার শর বেশি মানুষ অপহৃত হয়েছে।

স্মরণ সভায় গবেষক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, অপহরণকারীরা রিজওয়ানার স্বামীকে অপহরণের পর ছেড়ে দিয়েছে। আবার তার পকেটে ৩০০ টাকাও দিয়েছে। তাতে সন্তুষ্ট হয়ে অপহরণকারীদের ভালো মানুষ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বিষয়টি চাপা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত তিনি কী কারণে অপহৃত হয়েছেন, তা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বের করা।

আমি উপস্থিত থাকলেও নির্বাচন পরিস্থিতি এ রকমই হতো- ছুটি থেকে ফিরে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই বক্তব্য তুলে ধরে আবুর মকসুদ বলেন, এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনার জীবনের সবচেয়ে বড় সত্য কথাটি বলেছেন। এই বক্তব্যের মাধমে তার আসল পরিচয়ও ফুটে উঠেছে। এর মানে হলো, ভবিষ্যতে  যে নির্বাচনগুলো হবে, সেগুলোর অবস্থাও পূর্ববর্তীগুলোর মতোই হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, হুমায়ূন আহমেদের নাটকের ‘তুই রাজাকার’-এর মতো করে মূসা সাহেব এই সরকারকে ‘তুই  চোর’ বলে সম্বোধন করেছেন। এই কারণে সরকারের ভেতরকার চোরেরা মূসা সাহেবকে জড়িয়ে নানা কুৎসা রটনা করেছে, তাকে রাজাকার বলার চেষ্টাও করেছে। এমনকি মৃত্যুর পর তাকে প্রাপ্য সম্মানটুকু পর্যন্ত দেয়নি।

‘নিউ এজ’ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির বলেন, সামাজিকভাবে সর্বস্ত রের মানুষ রিজওয়ানার স্বামী অপহরণের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া  দেখানোয় অপহরণকারীরা বুঝতে  পেরেছিল, এটি তারা সামলাতে পারবে না। এই কারণেই হয়তো তাকে ছেড়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যদি এ  ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করে থাকেন, তবে তাকে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাতে হবে। তবে কী কারণে এ বি সিদ্দিককে অপহরণ করা হলো, তা  বের করার প্রয়োজন আছে।

মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন  দৈনিক মানবজমিন-এর সম্পাদক মতিউর রহমান  চৌধুরী, সুশাসনের জন্য নাগরিক্-সুজনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু প্রমুখ।