1
ব্যাট কথা বলল ক্যালিসের

দৈনিক বার্তা: শুরু দেখে শেষ বোঝা যায় না ৷ তাই নতুন বাংলা বছরের দ্বিতীয় দিনে কেকেআর-এর জয় দেখে এখনই বলা যাচ্ছে না এবারের আইপিএল তারাই জিতবে ৷ তবে এই দলে বেশ মশলা রয়েছে এটা বলাই যায় ৷ এই দলে দুটো ঘোড়া রয়েছে, যাঁরা যে কোনও মুহূর্তে ম্যাচের গতিপ্রকৃতি বদলে দিতে পারে ৷ একজন জ্যাক ক্যালিস ৷ অন্যজন সুনীল নারায়ণ৷যেদিন এই দু’ জন ছুটতে শুরু করেন, সেদিন কলকাতা নাইট রাইডার্স রোলস রয়েস ৷

কথায় বলে,মঙ্গলে ঊষা, বুধে পা ৷ বুধেই জয়ে পা দিল কেকেআর ৷তা-ও আবার সুদূর আবুধাবিতে ৷যত কাণ্ড আইপিএল নিয়ে ৷আইপিএলে ম্যাচগড়াপেটা নিয়ে কোথাকার জল কোথায় গড়িয়েছে ৷শ্রীনিবাসন বোর্ডের তখত থেকে সরেছেন ৷মহেন্দ্র সিং ধোনিকে নিয়ে কত জল্পনা ৷ সে সব ঘটনা পুরনো হতে না হতেই শুরু হয়ে গিয়েছে এবারের আইপিএল ৷মরুশহর ক্রিকেটজ্বরে আক্রান্ত ৷

আগের বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ৷ এই ম্যাচটার আগে নাইটদের কাছে জয় ভিক্ষা করেন শাহরুখ খান ৷সেই সৌরভ গঙ্গাপাধ্যায়ের সময় থেকেই কিং খান ছেলেদের বলেন, ‘আমি আর কিছু চাই না৷ শুধু এই ম্যাচটায় আমাকে জয় এনে দাও ৷’ তাঁর নাইটরা এবার কথা শুনেছেন ৷আইপিএলের প্রথম  ম্যাচেই মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে পত্রপাঠ উড়িয়ে দিয়ে দামামা বাজিয়ে শুরু করল গৌতম গম্ভীরের কলকাতা ৷ শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে আইপিএলের সপ্তম সংস্করণের প্রথম ম্যাচে মুম্বইয়ের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে কলকাতা নির্ধারিত ২০ ওভারে তোলে ৫ উইকেটে ১৬৩। কিন্তু মুম্বইয়ের ইনিংস যে এমন বিলম্বিত লয়ে কলকাতার রান তাড়া করবে কে জানত ! শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারের শেষে মুম্বই থেমে যায় সাত উইকেটে ১২২ রানে ৷এবারের আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে গৌতম গম্ভীরের কলকাতা ৪১ রানে জিতে ভালই শুরু করল অভিযান ৷
যদিও অধিনায়ক গম্ভীরের ব্যাট এদিন কথা বলল না ৷ দ্বিতীয় ওভারে খাতা না খুলেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন কলকাতা অধিনায়ক ৷ শুরুর এই ধাক্কা বেশ ভালভাবেই সামলে দেন বহুযুদ্ধের ঘোড়া জ্যাক ক্যালিস ৷ সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন  মণীশ পান্ডেকে ৷ এই জুটি ৯২ বলে ১৩১ রান তুলে কলকাতার জয়ের ভিত গড়ে দেয় ৷যদিও একসময় ক্যালিস খুবই ধীরগতিতে ব্যাট করতে থাকেন ৷ মনে হচ্ছিল বড় রান তুলতে পারবে না কলকাতা ৷  যদিও শেষপর্যন্ত ৪৬ বলে ৭২ করে মালিঙ্গার বলে ফেরেন ক্যালিস। ৫৩ বলে ৬৪ করা পান্ডেও দ্বীপরাষ্ট্রের বোলারেরই শিকার ৷ শাকিব আল-হাসান করেন  মাত্র ১ রান ৷ রবিন উত্থাপ্পা দ্রুত রান তুলতে দক্ষ৷ তিনি করেন মাত্র এক রান ৷ শেষ দিকে সূর্যকুমার যাদব চালিয়ে খেলে ৫ বলে ১৩ করেন ৷ সব মিলিয়ে কলকাতা ভদ্রস্থ জায়গায় পৌঁছয় ৷ ঘটনা হল, শেষ ৬ ওভারে কলকাতা তোলে  ৭৩ রান। মুম্বইয়ের হয়ে মালিঙ্গা ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট পান।

শেষ ছ’ওভারে ঝড় তোলে কলকাতার ব্যাটসম্যানরা ৷আর মুম্বইয়ের ব্যাটসম্যানরা শেষ ছ’ ওভারেই পথ হারিয়ে ফেলে ৷জিততে হলে শেষ ছ’ ওভারে মুম্বইকে তুলতে হত ৭৮ রান ৷সেই রান তুলতে তারা ব্যর্থ ৷ সুনীল নারায়ণের স্পিনের মোকাবিলা করতেই তারা বেসামাল ৷নারায়ণের বলের উত্তর খুঁজে পেতে হিমসিম খাওয়ার জোগাড় অনেকেরই ৷ নারায়ণ এখনও মিস্ট্রি বোলার৷ নারায়ণের স্পিনের রহস্য ভেদ করতে না পারে মুম্বই থেমে যায় ১২২ রানে ৷শুরুতেই মাইক হাসিকে ফেরান সুনীল নারায়ণ৷ আদিত্য তারে ভালই এগোচ্ছিলেন ৷শাকিব তাঁকে ফেরান ৷ রোহিত শর্মা ও অম্বতি রায়ডু মুম্বইয়ের ইনিংসকে গড়ছিলেন ৷ রোহিতকে ব্যক্তিগত ২৭ রানে থামতে হয় ৷ রায়ডুকে প্যাভিলিয়নের রাস্তা ধরান সেই নারায়ণই ৷হরভজন, করি অ্যান্ডারসনের মতো বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ক্যারিবিয়ান স্পিনারেরই শিকার ৷নারায়ণকে যোগ্য সাহায্য করেন মর্নি মর্কেল ৷দক্ষিণ আফ্রিকান বোলার আগুন ধরান মরুশহরে ৷ শেষপর্যন্ত মুম্বই সাত উইকেট হারিয়ে থেমে যায় ১২২ রানে ৷দু’ দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেন নারায়ণ ৷চার-চারটি উইকেট নেন তিনি ৷ তবে ম্যাচের সেরা ক্যালিস ৷ কে বলবে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানানো ‘বুড়ো’ ক্যালিস এখনও কোনও দলের ঘোড়া ৷

কলকাতা নাইট রাইডার্স : ১৬৩-৫ (২০ ওভার) ক্যালিস ৭২, মণীষ ৬৪৷ মালিঙ্গা ৪-২৩

মুম্বই ইন্ডিয়ান্স : ১২২-৭ (২০ ওভার) অম্বতি রায়ডু ৪৮ ৷ সুনীল নারায়ণ ৪-২০