1দৈনিক বার্তা: সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং’র (র) হাতে পাকিস্তানি  গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টিলিজেন্স’র (আইএসআই) সদস্য আটকের বিষয়ে সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার জাতীয়  প্রেসক্লাবে এক সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান।  স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খানের মুক্তির দাবিতে  স্বেচ্ছাসেবক দল এ সমাবেশের আয়োজন করে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন বলেন, ভারতের ইংরেজি  দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি খবর আজ প্রথম আলোতে প্রকাশ হয়েছে।  সেখানে বলা হয়েছে আইএসআইয়ের একজন এজেন্টকে বিমানবন্দর  থেকে র ধরে নিয়ে  গেছে। তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাই। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এ খবরটি সঠিক কি না, এ  ক্ষেত্রে সরকারের বক্তব্য কি? এই সংবাদ সঠিক হলে একটি বিদেশি  গোয়েন্দা সংস্থা কীভাবে এ  দেশ  থেকে একজনকে নিয়ে যায়। আরেকটি  গোয়েন্দা সংস্থার  লোকই বা কীভাবে এ  দেশে প্রবেশ করে।মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমে র-আইএসআই নিয়ে যে খবর প্রকাশ  পেয়েছে তা সঠিক নাকি মিথ্যা, এ ব্যাপারে সরকারের ব্যাখ্যা  দেওয়া উচিত।

দেশে এখন হীরক রাজার রাজত্ব চলছে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, সরকার চায় দেশে কারও চিন্তার অধিকার থাকবে না, কারও ভিন্নমত থাকবে না।দেশে এখন অঘোষিত একদলীয় শাসন চলছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা বিরোধী দলের ওপর নির্যাতনের খড়গ চালিয়ে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে ঘায়েল করার  চেষ্টা করছে।তিনি বলেন, ভিন্নমত সহ্য করতে না পারা গণতন্ত্র ও দেশের জন্য অশনি সংকেত।গণতন্ত্রবিরোধী সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান ফখরুল।

সম্প্রতি দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও বঙ্গবন্ধুর প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের  জের ধরে বিএনপির সিনিয়র ভাইস  চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগের এক  জ্যেষ্ঠ  নেতার  দেওয়া বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন ফখরুল।তারেক রহমান ইতিহাসের বিভিন্ন বইপত্র  থেকে কিছু সত্য উচ্চারণ করেছেন বলে আবারও দাবি করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, তারেক রহমান নিজের ব্যক্তিগত  কোনো মত তুলে ধরেননি। তিনি ইতিহাস  থেকে তথ্য নিয়ে কথা বলেছেন। যারা তার সমালোচনা করেন তারা সঠিক ইতিহাসে বিশ্বাস করেন না। তাদের কাছে সঠিক ইতিহাস থাকলে তারা পাল্টা  সেটা উপস্থাপন করতে পারতেন। কিন্তু  সেটা না করে তারা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অশালীন বক্তব্য রাখছেন। এটা সুস্থ রাজনীতির পরিচয় বহন করে না। পবিত্র সংসদে একজন রাজনীতিককে নিয়ে যে ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয়েছে সেটা একেবারেই অনভিপ্রেত।বিএনপি অবৈধ সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেন, ৭৫-এর বাকশাল গঠনের পর  দেশে একটি মাত্র দল ছিল, তা হলো বাকশাল। পরবর্তীকালে জিয়াউর রহমান যখন বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছেন, তখন আওয়ামী লীগের নতুন করে জন্ম হয়।

তিনি বলেন, এমন বক্তব্য  দেওয়ার আগে আওয়ামী লীগের জন্ম কখন  সেটাও প্রধানমন্ত্রীর ভাবা উচিত ছিল। বাকশাল  থেকে আওয়ামী লীগকে পৃথক হয়ে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারই। কিন্তু সে ইতিহাস তারা ভুলে  গেছেন।

এছাড়া, সম্প্রতি আওয়ামী লীগের এক  নেতা বিএনপিকে শত্র“ বলে উল্লেখ করায় তার সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা বিএনপিকে বাংলাদেশেই থাকতে দিতে চান না। তাদের  কেউ  কেউ এ  দেশকে নিজেদের বাপের তালুকদারি মনে করেন।

বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন, মিথ্যা মামলা দিয়ে    গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের গলা টিপে হত্যার চরিত্র তাদের এখনকার নয়। স্বাধীনতার পরও তারা বিরোধী মত দলন–পীড়ন করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে  চেয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় তারা এখনও বাকশাল কায়েমের অপচেষ্টায় লিপ্ত। তবে জনগণ সঠিক সময়ে এর করুণ জবাব  দেবে।

স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনির  হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের ভূঁইয়া,  স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী খান সপু, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল বারী বাবু, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা শিরিন সুলতানা প্রমুখ।