1দৈনিক বার্তা: ভীষণ বিব্রতকর অবস্থায় মনমোহন সিং। পর পর দু’টি বই বেরিয়েছে। এতে দাবি করা হয়েছে, মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকারের প্রধান ছিলেন নামমাত্র। আসল কলকাঠি নেড়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। প্রথম বইটি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সাবেক মিডিয়া উপদেষ্টা সঞ্জয় বারু। বইটির নাম ‘দ্য এক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’। এ বই নিয়ে তোলপাড় হয় চারদিকে। কারণ, ভারতে নির্বাচন শুরু হয়েছে। এ সময়ে কোন রাজনৈতিক ব্যক্তি বা সরকারের দোষগুণ যদি প্রকাশ হয়ে পড়ে, তাও আবার বই আকারে তাহলে তাতো প্রতিপক্ষ লুফে নেবেই। সঞ্জয় বারু তার বইয়ে দাবি করেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সরকারপ্রধান। কিন্তু তার স্থান অলিখিতভাবে দখল করেছেন ইউপিএ চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধী। স্পর্শকাতর এসব কথাবার্তা নিয়ে যখন চারদিকে শোরগোল ঠিক তখন কয়লাবিষয়ক সাবেক সচিব পিসি পারাখ প্রকাশ করেছেন আরেকটি বই। এর নাম ‘ক্রুসেডার অর কনসপিরেটর: কোয়েলগেট অ্যান্ড আদার ট্রুথস’। এ বইয়ে বলা হয়েছে, মনমোহন সিং যে সরকারের প্রধান সে সরকারে তার নিয়ন্ত্রণ ছিল না বললেই চলে। পিসি পারাখ তার বইয়ে দাবি করেছেন, টুজি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি ও কয়লা বরাদ্দ দুর্নীতি মারাত্মকভাবে প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তিতে আঘাত করেছে। ফলে গতকাল প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের দিকে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন বিজেপি’র সিনিয়র নেতা অরুণ জেইটলি। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার বেশির ভাগই অনুমোদিত হতো কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী কর্তৃক। পারাখের বইটি দেখিয়ে দিয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী নামের প্রতিষ্ঠানটি ছিল সংকুচিত অবস্থায়। ওদিকে সঞ্জয় বারুর বইটিকে একটি সস্তা ফিকশন আখ্যা দিয়েছে কংগ্রেস পার্টি। তারা বলেছে, বারু তার দায়িত্বের বাইরে গিয়ে লিখেছেন। তার কাজ নেই। তবে অরুণ জেইটলি বলেছেন, তিনি দু’দিন ধরে বইটি পড়েছেন এবং মনে করেন বারু সরকারের একজন প্রত্যক্ষদর্শী। এ বইয়ের ভিত্তিতে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস পার্টিকে ঘায়েল করেছেন বিজেপি’র আরেক সিনিয়র নেতা এলকে আদভানি। তিনি প্রধানমন্ত্রী প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন এমন কথা প্রকাশ হওয়া বিস্ময়ের কিছু নয়। প্রধানমন্ত্রী যাকে মিডিয়া উপদেষ্টা করেছিলেন তিনি যথার্থভাবেই লিখেছেন। ফলে সাধারণ মানুষ অনেক অনেক কিছু জানতে পারছে। ওই বইয়ে আরও বলা হয়েছে, দুর্নীতি, অর্থনৈতিক মন্থরগতি সত্ত্বেও ইউপিএ সরকার মনমোহন সিংকে অবসরে পাঠায় নি। এর একটাই কারণ, তা হলো বার বারই কংগ্রেস ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধীর ব্যর্থতা। বইটি প্রকাশ হওয়ার পর সঞ্জয় বারুর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে কংগ্রেস। বলেছে, লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বারু বিজেপির রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছেন।