রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারী দলের সংসদ সদস্যরা যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গ ত্যাগ করে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে জনতার কাতারে আসার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে তাঁরা বলেন, জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও তাঁর দুর্নীতিবাজ পুত্র দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর খুনী জিয়াউর রহমানকে ‘প্রথম রাষ্ট্রপতি’ বানানোর চেষ্টা হাস্যকর হলেও এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, অধ্যাপক ডা. এম আমানউল্লাহ, শামসুল হক দুদু, মনিরুল ইসলাম, এ্যাডভোকেট নাভানা আখতার, এ্যাডভোকেট মমতাজ বেগম, হোসনে আরা বেগম, শিরীন নাহিদ, সফুরা বেগম, মোছাম্মৎ সেলিনা জাহান রিটা, বেগম রহিমা আখতার, শামসুন্নাহার, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সলিম উদ্দিন প্রমুখ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, স্বাধীনতা ও বাংলাদেশ বিনির্মাণের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৭ মার্চেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, আর ২৫ মার্চ গণহত্যা চালানোর পর ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এটা সারাবিশ্বেই স্বীকৃত। খালেদা জিয়া-তারেক রহমানদের স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর জিয়াকে প্রথম রাষ্ট্রপতি বানানোর চেষ্টা হাস্যকর হলেও এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। যারা গণহত্যা করেছিল, মা-বোনের ইজ্জত হরণ করেছিল সেই যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। দিশেহারা হয়ে বিএনপি-জামায়াতরা এখন জাতির মধ্যে বিভ্রান্ত এবং দেশের অগ্রগতি নস্যাত করার জন্যই এসব বিকৃতরুচির মন্তব্য করছে। যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গ ত্যাগ করে তাদের উচিত জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে জনগণের কাতারে এসে দাঁড়ানো।
তিনি বলেন, দেশ আজ মুক্তিযুদ্ধের ধারায় উন্নতি-অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে আধুনিক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে একটি অগ্রগামী শক্তি গড়ে তুলতে হবে। আর সেই শক্তি হচ্ছে নতুন প্রজন্ম। প্রচলিত শিক্ষা দিয়ে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলা যাবে না। আমরা চাই যুগের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন প্রজন্মকে বিশ্বমানের শিক্ষা, বিশ্বমানের প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে। সে জন্যই ইতিহাসের প্রথম জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছি। শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বিশৃঙ্খলা, দুর্নীতি ও জঞ্জাল দূর করে একটি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, চার কোটি পরীক্ষার্থীর জীবনকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিতে বিএনপি-জামায়াত জোট লাগাতার হরতাল-অবরোধের নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকা- চালিয়েছে। শত ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবেলা করে হরতাল-অবরোধের মাধ্যমে সারাদেশে ১৬ হাজার ৪২টি ট্রাকের মাধ্যমে ৩১ কোটি বই পহেলা জানুয়ারির মধ্যে সব স্কুলে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি। শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি এবং দুর্নীতিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে চিরতরে নির্মূল করতে চাই। নতুন প্রজন্মকে আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে গড়ে তুলবই।
এ্যাডভোকেট নাভানা আখতার বলেন, দেশের মানুষ শান্তিতে থাকলে অশান্তিতে ভোগেন খালেদা জিয়া। জেনারেল জিয়া একজন খুনী। দেশের জনগণ খালেদা জিয়া-তারেক রহমান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। জাতির কাছে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ক্ষমা না চাইলে দেশের জনগণই তাদের সমুচিত জবাব দেবে।