দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, নিজেকে দোষী বা নির্দোষ ভাবতে নারাজ তিনি। অভিযোগ প্রমাণ হলে কি করবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘যখন প্রমাণিত হবে তখন ভাবব।’
আজ রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে বেলা ১১টা থেকে দুপুর দুইটা ২৫ মিনিট পর্যন্ত মাহবুবুর রহমানের জিজ্ঞাসাবাদ চলে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কার্যালয় থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। পটুয়াখালীর সাবেক এই সাংসদের বিরুদ্ধে অপ্রদর্শিত সম্পদের খোঁজ পেয়েছেন দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা। এ বিষয়ে আজ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
হলফনামার তালিকা ধরে বিভিন্ন সাংসদের অতিরিক্ত সম্পদ বিষয়ে দুদকের এ অনুসন্ধানকে ‘ভেরি পজিটিভ’ (খুবই ইতিবাচক) দৃষ্টিতে দেখছেন সাবেক এ সাংসদ।
গত ১২ জানুয়ারি কক্সবাজার-৪ আসনের সাংসদ আবদুর রহমান বদিসহ সাত সাবেক সাংসদ ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের হঠাত্ বেড়ে যাওয়া সম্পদের বৈধতা খুঁজতে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমানের হলফনামায় জনৈক বিপুল হাওলাদারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা ধারের কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে এ অর্থ বিপুল হাওলাদার ধার দেননি বলে দুদকের অনুসন্ধান দলের কাছে লিখিতভাবে স্বীকার করেছেন বিপুল। তাই এ অর্থকে ‘কালোটাকা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন অনুসন্ধান কর্মকর্তারা।
দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত সূত্র আরও জানায়, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গেছে, সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী প্রীতি হায়দার স্বামীর চেয়ে বেশি অর্থের মালিক। তাঁর স্ত্রী বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন বলে জানান অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপপরিচালক খায়রুল হুদা।
দুদক সূত্র জানায়, মাহবুবুর রহমানের স্ত্রীর আয়কর বিবরণীতে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আন্ধারমানিক এন্টারপ্রাইজ ও গঙ্গামতি এন্টারপ্রাইজের কথা উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে এর অস্তিত্ব নেই। অথচ প্রতিষ্ঠান দুটির মাধ্যমে গত পাঁচ বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে ১০০ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে নথিপত্র নিয়ে এসেছে অনুসন্ধান দল।
এ ছাড়া প্রীতি ও বিপুল হাওলাদার, প্রীতি ও পৌর মেয়র এস এম রাকিবুল আহসান এবং প্রীতি ও রুহুল আমিনের নামে তিনটি ইটভাটার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। স্ত্রীর নামেও প্রচুর জমির নথিপত্র পেয়েছে দুদক।
হলফনামা সম্পর্কে গণমাধ্যম ভুল তথ্য দিচ্ছে মন্তব্য করে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান মুঠোফোনে দৈনিক বার্তাকে বলেন, এসব ভুল তথ্য নিয়েই দুদক দৌড়াচ্ছে। স্ত্রীর সম্পদ সম্পর্কে তিনি বলেন, এ সম্পর্কে দুদক কোনো প্রশ্ন করলে তাদের উত্তর দেব। এ নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে চাই না।