12408_f6ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাচনে ১৯ দল সমর্থিত জামায়াতের ভাইস চেয়ারম্যানপ্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা মোস্তফা কামাল গণসংযোগকালে অপহরণ করে ব্যাপক নির্যাতন চালিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় অপহরণের পর এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ দু’ঘণ্টা পর আওয়ামী লীগ অফিস থেকে তাকে উদ্ধার করে। অপহরণকালে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ১০ জন গণসংযোগকারী আহত হন। একই সঙ্গে ৫টি মোটরসাইকেলে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ব্যাপারে ভিকটিম অভিযোগ করলেও থানা পুলিশ কোন মামলা নেয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে উপজেলার ঘোষের হাটের লঞ্চঘাট এলাকায় মোস্তফা কামাল নির্বাচনী গণসংযোগে বের হন। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জনের একটি গ্রুপ তার গণসংযোগে হামলা চালায়। তারা মোস্তফা কামালকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। পরে তাকে ঘোষের হাট এলাকা থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনার পরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসীর চাপে পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে ব্যাপক অভিযান চালায়। পরে দুপুর ১টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ উপজেলার নীলকোমল ইউনিয়নের দুলার হাট আওয়ামী লীগ অফিস থেকে তাকে উদ্ধার করে তাকে বাড়ি পৌঁছিয়ে দেয়। তবে এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করেনি। সূত্র জানিয়েছে, ওই আওয়ামী লীগ অফিসে অপহৃত ভাইস চেয়ারম্যানপ্রার্থী মোস্তফা কামালের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়। তাকে দিয়ে জোরপূর্বক ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়ানো হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মীর শরিফ হোসাইন বলেন, আমি নিজেও গণসংযোগে অংশগ্রহণ করেছি। আওয়ামী লীগের হামলায় আমিও গুরুতর আহত। তারা গণসংযোগে অতর্কিত হামলা করে আমাদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা কামালকে অপহরণ করে। চরফ্যাশন থানার ওসি আবুল বাশার এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এদিকে এ ঘটনায় ভিকটিম অভিযোগ করলেও থানা মামলা নেয়নি।
জামায়াতের প্রতিবাদ: এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াত ও ১৯ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থীদের হয়রানি, গণগ্রেপ্তার, জুলুম-নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় চাঁপাই নবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৯ দলীয় জোট সমর্থিত চেয়ারম্যানপ্রার্থী মোজাম্মেল হক চুটুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মহেশপুর উপজেলায় জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার  ১৯ দলীয় জোট সমর্থিত ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা মোস্তফা কামালকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী অপহরণ করে। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় যৌথবাহিনী জামায়াত-শিবিরের ১০ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। তিনি বলেন, সরকার ১ম দফা উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত হওয়ায় বেসামাল হয়ে জুলুম এবং নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাচনে জনগণের ভোটে পরাজিত হয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জামায়াত ও বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করছে। এসব ঘটনায় প্রতীয়মান হয় যে, আওয়ামী সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। জনগণের ন্যায্য ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে সরকারদলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য প্রশাসনকে নগ্নভাবে ব্যবহার করছে। আমরা সরকারের এসব অপকর্মের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে জুলুম, নির্যাতন, গণগ্রেপ্তার ও অপহরণ বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।