bsagor67
বঙ্গোপসাগরে ৫৫ জেলে অপহৃত, ট্রলারে গণডাকাতি

বঙ্গোপসাগরে ফিশিং ট্রলারসহ ৫৫ জন জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে জলদস্যুরা। তাদের ছেড়ে দিতে দেড় কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে দস্যুরা। গত তিন দিনে অর্ধশতাধিক ফিশিং ট্রলারে এসব অপহরণ ও গণডাকাতির ঘটনা ঘটে। দুর্ধর্ষ বনদস্যু জাহাঙ্গীর বাহিনীর সদস্যরা জেলেদের মারধর ও লুটপাট শেষে ১টি ফিশিং ট্রলারসহ ৫৫ জন জেলেকে অপহরণ করে।
জলদস্যুদের কবলে পড়া এসব ট্রলারগুলি বাগেরহাটের শরণখোলা, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার তুষখালী, বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলা সদর, জ্ঞানপাড়া, চরদোয়ানী, বাদুরতলা ও জিয়ানগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় সাগরে মৎস্য আহরণরত জেলেদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
শরণখোলা উপজেলা মৎস্যজীবী সমিতি সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি সাগরের ফেয়ার বয়ার পশ্চিমে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জাহাঙ্গীর বাহিনীর সদস্যরা দ্রুতগামী ট্রলারে এসে হামলা ও লুটপাট চালায় ওই সব ফিশিং ট্রলারে। এ সময় জেলেরা আতঙ্কিত হয়ে ট্রলারগুলি নিয়ে পালিয়ে যাবার চেষ্টা চালায়।
সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন জানান, অপহৃতদের মধ্যে শরণখোলা উপজেলার চার জেলে রয়েছে বলে তিনি খবর পেয়েছেন। এদের মধ্যে, রাজৈর গ্রামের রোকা মিয়ার এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের শাহীন, জামাল হাওলাদারের এফবি আল আমিন ট্রলারের আলম, কদমতলা গ্রামের কালাম মিয়ার এফবি বিধান ট্রলারের মাঝি শাজাহান ও নলবুনিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের এফবি উর্মি ট্রলারের জাকিরের নাম তিনি তাৎক্ষনিকভাবে জানান।
পিরোজপুরের পারেরহাট মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহীন জানান, তাদের  এলাকার এ পর্যন্ত তিন জেলে অপহরণের খবর পাওয়া গেছে। এরা হচ্ছে, চরখালীর জাহাঙ্গীর হাওলাদারের এফবি আরিফ ট্রলারের মাঝি, রাজা মিয়ার এফবি রাজা-২ ট্রলারের মাঝি ও বেতবুনিয়ার বারেক মাঝি। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার তুষখালীর জেলে সূত্র জানায়, অপহৃতদের মধ্যে তুষখালীর হরিনপালা এলাকার পাঁচ জেলে রয়েছে।
এদের মধ্যে হারুন মিয়ার মালিকানাধীন এফবি আল্লা মালিক, এফবি বেলায়েত, বাদশা মিয়ার, রুহুল আমিন ও আকব্বর মিয়ার ট্রলারের মাঝি রয়েছে। পাথরঘাটা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আঃ মান্নান জানান, ওই উপজেলার সদর, বাদুরতলা, চরদোয়ানী ও জ্ঞানপাড়া এলাকার কমপক্ষে ২০ জেলেসহ পাথরঘাটা সদরের মিরাজ কমিশনারের মালিকানাধীন এফবি আব্দুল্লাহ নামে একটি ফিশিং ট্রলার অপহৃত হয়েছে।
অপহৃতদের মধ্যে তিনি পাথরঘাটা সদরের খালেক, নাছির ও রফিক মাঝির নাম জানান। এ ছাড়া অন্যান্য এলাকার আরো ২০ জেলে ওই তিন দিনে জাহাঙ্গীর বাহিনীর হাতে অপহৃত হয়েছে বলে জেলে বিভিন্ন সংগঠন সুত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে কোস্টগার্ডের পশ্চিম জোনের (মংলা) অপারেশন স্টাফ অফিসার লে. কমান্ডার মহিউদ্দিন জানান, বিষয়টি জানার পর অপহৃতদের উদ্ধারে পেটি অফিসার আজমল হোসেন ও মো. মুনসুরের নেতৃত্বে কচিখালী সুপতি কন্টিনজেন্ট ইতিমধ্যে অভিযান শুরু করেছে।