সাভারের স্থানীয় সিপিএম কম্পোজিট নামের তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় পুলিশের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষে ১১ জন গুলিবদ্ধিসহ শতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভের চেষ্টার সময় পুলিশ তাতে বাধা দিলে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বকেয়া বেতন আদায়ের দাবিতে সিপিএম কম্পোজিটের শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় এলাকাজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। ভয়ে নিজ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় স্থানীয়রা।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, পর্যাপ্ত কাজের কার্যদেশ না থাকায় শ্রমিকদের সময় মতো বেতন পরিশোধ করতে পারেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে দফায় দফায় বেতন প্রদানের তারিখ দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত বেতন না পেয়ে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে শ্রমিকরা। এর মাঝে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে- এমন কথাও শোনা যায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে শ্রমিকরা।
শ্রমিকরা আজ কারখানায় কাজে আসার পর তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার থেকে বের হয়ে রাস্তার নামে। তারা কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং সিপিএম কম্পোজিট নিট ওয়ার লিমিটেড পোশাক কারখানায় ব্যাপক ভাঙচুর করে। এসময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ১১ শ্রমিক গুলিবদ্ধিসহ শতাধিক শ্রমিক আহত হয়।
আহত শ্রমিকদের মধ্যে- সালমা বেহম (৪৫), লিমা আক্তার (২৫), মোমেনা বেগম (২০), নাদিয়া পারভিন (২০), সেলিনা আক্তার (২০), সেলিম আহম্মেদ(৩৩), মোশারফ হোসেন(২৭), সাদেকুল (২১), জিন্নাত আরা (২৫), সামাদ মিয়া (৫০), মিজানুর রহমানকে ফাইলেরিয়া অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে এবং বাকিদের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনার পর কারখানার পরিচালক জুলফিকার হায়দার শ্রমিকদের সাথে জরুরি আলোচনায় বসে আগামীকাল বুধবার সকাল ১০টায় বকেয়া বেতন প্রদানসহ কর্তৃপক্ষকে উপস্থিত করা হবে- এমন আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়।
এ ব্যাপারে শিল্প পুলিশের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানায়, বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর করলে শ্রমিকদের লাঠিচার্য, রাবাট বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। এছাড়া যে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছে।