সাবেক স্বামীর ফাঁদে পা দিয়েছিলেন বিউটি খাতুন (২০)। বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাঁকে করা হয় ধর্ষণ। আর সেই ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে দেওয়া হয় ইন্টারনেটে। লজ্জায় অপমানে বিউটি আত্মহত্যা করেছেন।
শনিবার রাত ৯টার দিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পিরোজপুর বারোবাজারে বিউটির বাবার বাড়ি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সাবেক স্বামী মিঠু ও শাশুড়িসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এ ব্যাপারে নারী নির্যাতন আইনে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনির উদ্দীন মোল্লা জানান, বারোবাজার গ্রামের ভ্যান চালক শহিদুল ইসলামের কন্যা বিউটি খাতুনের সঙ্গে ২০১০ সালে একই উপজেলার আমবাগান গ্রামের মোহাম্মদ আলী পুত্র মিঠু মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে হৃদয় মিয়া নামের এ্কটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। দেড় বছর আগে বিউটিকে তালাক দেয় মিঠু মিয়া। সন্তানসহ বিউটি তাঁর পিতার বাড়িতে বসবাস করতে থাকে।
গত জানুয়ারি মাসে পুরোনো স্বামী মিঠু মোবাইল ফোনে বিউটিকে আবারও বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং চট্টগ্রামে নিয়ে যায়। তিনি আরো জানান, সম্ভবত ধর্ষণের ভিডিওটি চট্টগ্রামে করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। বিউটি ঘটনাটি জানতে পেরে লজ্জায় শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পিরোজপুর গ্রামে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে।
তবে বিউটির বড় ভাই মোঃ মিঠুন ইসলাম জানান, দশ দিন আগে বিউটির সাবেক স্বামী মিঠু মিয়া বিউটিকে আত্মীয় বাড়ীতে বেড়াতে যাওয়ার নাম করে কালীগঞ্জ উপজেলার কোলা গ্রামে নিয়ে যায়। তিনি আরো জানান, কোলা গ্রামের বারোভূঁইয়া মাঠে নিয়ে বিউটির আড়াই বছরের শিশু পুত্র হৃদয়ের গলায় ছুরি ধরে সাবেক স্বামী মিঠু মিয়াসহ ৬ জন তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। সে ঘটনার ভিডিওচিত্র মোবাইলে ধারণ করে ইন্টারনেটে চিত্র ছড়িয়ে দেয়। বিউটি এ কথা জানতে পেরে লজ্জায় আত্মহত্যা করে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ থানায় উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেখ মুজিবর রহমান জানান, ঘটনার পর থেকে বিউটির সাবেক স্বামী মিঠু মিয়া ও তার মাসহ অন্যান্য আসামিরা পালাতক রয়েছে। এই আত্মহত্যার ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় নারী নির্যাতন আইনের ৯ (ক)/৩০ ধারায় একটি মামলা (মামলা নং-৯, তারিখ ১৫/০২/২০১৪) হয়েছে বলে জানান। তিনি আরো জানান, ইন্টারনেট ও বিভিন্ন মোবাইলে ধর্ষনের চিত্র ধারণকারী ধর্ষকদের আটক করার জন্য পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।
