অন্ধ্র প্রদেশকে টুকরো করে পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠন-সংক্রান্ত বিলটি আজ বৃহস্পতিবার ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় উঠতে পারে। এই বিলের বিরোধী বেশ কিছু সাংসদ ইতিমধ্যে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন।
কংগ্রেস সূত্রের বরাতে আজ টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, রেল বাজেট পাসের পর তেলেঙ্গানা বিলটি পার্লামেন্টে উঠতে পারে। এ-সংক্রান্ত সার্বিক প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে।
তেলেঙ্গানা বিলবিরোধী বেশ কিছু সাংসদের আত্মহত্যার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে পার্লামেন্ট ভবনের ভেতরে ও বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
পার্লামেন্ট ভবন ও সংলগ্ন এলাকার ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা, মেটাল ডিটেকটরসহ নিরাপত্তা-প্রযুক্তিগুলোর কার্যকারিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। পার্লামেন্ট ভবনের প্রবেশমুখে বসানো হয়েছে স্ক্যানার। যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্টদের সরঞ্জামসহ সর্বোচ্চ সতর্ক রাখা হয়েছে।
তেলেঙ্গানা বিলটি পার্লামেন্টে ওঠা ঠেকাতে বেশ কিছু সাংসদ নিজেদের শরীরে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন। শাব্বাম হরি নামের এক সাংসদ নিম্নকক্ষের ভেতরে সায়ানাইড খাওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
অন্ধ্র প্রদেশকে টুকরো করে পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গতকাল বুধবার ভারতের পার্লামেন্টে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষুব্ধ পার্লামেন্ট-সদস্যরা প্ল্যাকার্ড-পোস্টার নিয়ে স্লোগান দেন, সভার কাগজপত্র ছিঁড়ে উড়িয়ে দেন, এমনকি পক্ষে-বিপক্ষের সদস্যদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিও হয়েছে।
পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্যকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিশৃঙ্খলার মধ্যে রেলমন্ত্রী অন্তর্বর্তী রেল বাজেট পেশ করলেও তা পড়া শেষ করতে পারেননি। বিরোধীদের ক্ষোভের হাত থেকে বাঁচাতে সোনিয়া গান্ধী, শারদ পাওয়ার, কমলনাথ, লাল সিং রেলমন্ত্রীকে আড়াল করে রাখেন। অধিবেশন মুলতবি করার পর প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বললেন, ‘আমার হূদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। গণতন্ত্রের পক্ষে আজ অত্যন্ত বেদনার দিন।’
তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের প্রশ্নে লোকসভার উভয় কক্ষই কয়েক দিন ধরে উত্তাল। দুই কক্ষের কোনোটিতেই কোনো কাজ হচ্ছে না। ২১ ফেব্রুয়ারি এই অধিবেশন শেষ হওয়ার কথা। এর মধ্যে তেলেঙ্গানা বিল দুই কক্ষে পাস করানো না গেলে রাজ্য ভাগ করা সম্ভব হবে না। কংগ্রেসদলীয় অন্ধ্র প্রদেশের পার্লামেন্ট সদস্যরাও এ বিষয়ে দলের বিরোধিতা করছেন।