দশম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের দলীয় তালিকা নির্ধারণ নিয়ে টালবাহানা শুরু করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ।
স্বামী-স্ত্রী দুজন দুটি তালিকা ঠিক করেছেন। অবশ্য এ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই দলের মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও প্রেসিডিয়াম সদস্য জি এম কাদেরের।
এরশাদের একটি ঘনিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ৬ প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করেছেন পার্টির চেয়ারম্যান। তালিকায় যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন এরশাদের প্রেসসচিব সুনীল শুভ রায়ের স্ত্রী কনিকা রায়, এরশাদের ছোট বোন মেরিনা রহমান, জি এম কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদের, ব্যবসায়ী ইব্রাহিম মোর্শেদের স্ত্রী মেহজাবিন মোর্শেদ, জাপার নারায়ণগঞ্জের নেতা শাহজাহানের স্ত্রী সানজিদা বেগম, সাবেক সেনা কর্মকর্তা গিয়াউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী মাহমুদা চৌধুরী।
এর আগে এরশাদের তালিকায় তার পালিত কন্যা বলে পরিচিত অনন্যা ইসলাম মৌসুমী ও ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকারের নামও ছিল। রওশনের চাপে এই দুজনের নাম বাদ দিয়েছেন তিনি।
তবে উল্লিখিত ছয়জনের নামও পুরোপুরি গ্রহণ করতে রাজি নন বেগম রওশন।
রওশনের ঘনিষ্ট সূত্র জানায়, এরশাদের দেয়া তালিকা থেকে মাত্র তিনটি নাম গ্রহণ করতে পারেন রওশন। তারা হলেন মেহজাবিন মোরশেদ, মেরিনা রহমান ও শেরিফা কাদের।
যদিও মেরিনা রহমান ও শেরিফা কাদেরের ব্যপারে জোর দ্বিমত ছিলো রওশনের। আর বাকি তিনজনের ব্যপারে সিদ্ধান্ত দেবেন রওশন নিজেই। রওশনের ঘনিষ্টরা জানান, বিরোধী দলের নেত্রীর পছন্দের তালিকায় আছেন নুরই-হাসনা লিলি চৌধুরী, রওশনারা মান্নান, খুরশিদা হক।
তবে শেষ পর্যন্ত কাদের নাম চূড়ান্ত করা হবে এ নিয়ে বিভ্রান্তির ঘোর কাটেনি এখানো। নির্বাচন কমিশনে চূড়ান্ত তালিকা যাওয়ার আগ পর্যন্ত এ বিভ্রান্তি থেকেই যাবে।
এ ব্যাপারে জাপার দপ্তর সম্পাদক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, তালিকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাও পুরোপুরি সঠিক নয়। ম্যাডাম (রওশন) নিজেই তালিকা চূড়ান্ত করে নির্বাচন কমিশনে পাঠাবেন।
এ বিষয়ে দলের মুখপাত্র ববি হাজ্জাজ বলেন, তালিকা চূড়ান্ত। খুব শিগগিরই নাম প্রকাশ করবেন এরশাদ।
এ সম্পর্কে জাপা মহাসিচব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, স্যার (এরশাদ) এবং ম্যাডাম (রওশন) একসাথে বসে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো মতবিরোধ নেই। তারা এক ও অভিন্ন।
জাতীয় সংসদের নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ৫০টি। সংসদের প্রতি ৬ আসনের বিপরীতে সংরক্ষিত আসনে একজন করে নারী হিসাবে জাপার ভাগে পড়েছে ৬টি আসন। এই ৬ আসনের বিপরীতে গত ১৭, ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি মোট তিন দিনে ৯৬টি মনোনয়নপত্র বিক্রি করে দলটি। প্রতিটি ফরমের মূল্য ছিল ৫ হাজার টাকা। এতে জাপার ফান্ডে জামা হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
তবে এ নিয়ে মনোনয়স বাণিজ্য হচ্ছে বলেও কানাঘুষা চলছে। এ বিষয়ে দলের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, স্যার (এরশাদ) অযথাই মনোনয়নপত্র বিক্রি করে টাকা নিচ্ছেন। যাদের মনোনয়ন দেয়া হবে তা আগ থেকে ঠিক করা আছে।