ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্রী হলে ছাত্রলীগের নারী নেতা-কর্মীরা মারামারি করেছেন। হলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শীর্ষস্থানীয় নেতারা আলোচনায় বসেছেন।
হলের ছাত্রী এবং ছাত্রলীগের নেত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি খাদিজাতুল কোবরাকে সভাপতি এবং শেখ মারুফা নাবিলাকে সাধারণ সম্পাদক করে ওই হলের ছাত্রলীগের কমিটি করা হয়। এর মধ্যে হলের একজন আবাসিক শিক্ষক সীমা ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়। এই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিতা রিজওয়ানা রহমানের পদত্যাগের দাবিতে ছাত্রলীগের খাদিজার সমর্থকেরা সকাল থেকে স্লোগান দিতে থাকেন।
ওই স্লোগান শুনে সাধারণ সম্পাদক মারুফার কর্মীরা প্রাধ্যক্ষের পক্ষে পাল্টা স্লোগান দেন। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। এতে কয়েকজন ছাত্রী আহতও হন। হলের ছাত্রীরা জানিয়েছেন, প্রাধ্যক্ষের সামনেই এ ঘটনা ঘটলেও তিনি কোনো পক্ষকেই শান্ত করতে পারেননি।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য সহিদ আক্তার হোসাইন (প্রশাসন), ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আমজাদ আলী এবং ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেহেদি হাসান ও সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ ঘটনাস্থলে যান। পরে তাঁরা পরিস্থিতি শান্ত করেন।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, নতুন সভাপতি খাদিজা হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিশোরীর অনুসারী। আর সাধারণ সম্পাদক মারুফা সাবেক সভাপতি নীপার অনুসারী। গত মঙ্গলবার সরস্বতী পূজায় রাতের অনুষ্ঠানে প্রাধ্যক্ষের পাশে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নীপা বসার সুযোগ পেলেও হলের আবাসিক শিক্ষক সীমা ইসলাম বসার জায়গা পাননি। এ নিয়ে গতকাল বুধবার রাতে সীমা ইসলাম এবং প্রাধ্যক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর সীমা ইসলামকে আবাসিক শিক্ষক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
ওই ঘটনার পর হল প্রাধ্যক্ষ সাবিতা রিজওয়ানা নীপার পক্ষে এবং সীমা ইসলাম মিশোরীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
হলের কর্মচারীরা জানিয়েছেন, গত বছরের সেপ্টেম্বরে অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রিজওয়ানা প্রাধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন। এরপর হলে ছাত্রী ওঠানোসহ বিভিন্ন ব্যাপারে তিনি কড়াকড়ি আরোপ করেন। কিন্তু সেই কড়াকড়ি অমান্য করে ছাত্রলীগের দুপক্ষই নিজেদের ছাত্রী ওঠাতে থাকে। এতে প্রাধ্যক্ষ ক্ষুব্ধ হয়ে মিশোরীকে হলে থাকতে নিষেধ করেন। তবে নীপাকে হলে থাকতে দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদ করেন সীমা ইসলাম।
ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আমজাদ আলী জানিয়েছেন, সমস্যার সমাধানে আলোচনা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ জানান, ‘নিজেদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝিকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে। আমরা আলোচনায় বসেছি। সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।’