জামায়াতে ইসলামীর ডাকে আজ বৃহস্পতিবার সারাদেশে চলছে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল। দলের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় ফাঁসির রায় প্রদানের প্রতিবাদে জামায়াত এই হরতালের ডাক দেয়। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের গঙ্গাস্নানের কারণে চাপাইনবাবগঞ্জ জেলা হরতালের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে।
হরতালের সমর্থনে রাজধানীর শাহজাহানপুর, বাড্ডা, হাজারীবাগ, মগবাজার এলাকায় মিছিল করেছে জামায়াত কর্মীরা। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় মিছিল ও সড়ক অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে। পাবনায় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে জামায়াত কর্মীরা। লক্ষ্মীপুরে গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করা হয়। গাইবান্দায় মিছিল করেছে জামায়াত-শিবির কর্মীরা।
হরতালে রাজধানীতে অন্যান্য দিনের চেয়ে রাজধানীতে গণপরিবহণ চলাচল খুবই কম। ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করছে না। ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও যাত্রী কম থাকায় শিডিউল অনুযায়ী এ যানগুলো ছেড়ে যাচ্ছে না।
এদিকে হরতাল মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনী। দুপুরের পর থেকেই রাজধানীতে মোতায়েন করা হয় বিপুল পুলিশ ও সাদা পোশাকের পুলিশ। বাড়ানো হয় র্যাবসহ গোয়েন্দা সংস্থার টহল। বিভিন্ন স্থানে প্রস্তুত রাখা হয় রায়টকার, এপিসি, প্রিজন ভ্যান, জলকামানসহ নানা সরঞ্জাম।
শান্তিপূর্ণভাবে সর্বাত্মক হরতাল পালন করার জন্য দেশবাসীর প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান।
তিনি বলেছেন, সরকার জামায়াতের আমির ও সাবেক মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য বেছে বেছে জামায়াত ও ১৯ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের হত্যা করছে। দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার আজ ভূলুণ্ঠিত। মিছিল, সভা-সমাবেশের আয়োজন করলেই সরকার গুলি চালাচ্ছে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা শিাঙ্গনে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর শিাজীবন ধ্বংস করছে। সরকারের সব অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড ও জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে হত্যার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ সর্বাত্মক হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
এ হরতাল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করার জন্য জামায়াতের সব পর্যায়ের জনশক্তি ও সংগ্রামী দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মপ্রাণ তীর্থযাত্রীগণ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার তর্ত্তিপুর নামক স্থানে গঙ্গাস্নানের জন্য গমন করবেন। জেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের স্বার্থে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হরতালের আওতামুক্ত থাকবে। হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্স হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।