বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অভিযোগ করে বলেছেন, দেশে গণতন্ত্র নেই, এক ব্যক্তির স্বৈরশাসন চলছে। তিনি বলেন সারাদেশে তিন’শ এর বেশি বিএনপি নেতাকর্মীকে গুম ও হত্যা করা হয়েছে। তারা অবৈধ সরকারকে প্রলম্বিত করছে।
আজ বিকেল ৪ টায় রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন।
খালেদা জিয়া বলেন, দেশে তামাশার নির্বাচন করে আওয়ামীলীগ ৩০০ আসনে ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছে। নির্বাচনের আগেই ১৫৩ আসন জনগণের ভোট ছাড়াই ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছে।
তিনি বলেন, সংসদে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার এরা কেউ জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। এই থেকে বোঝা যায় নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার কতটা প্রয়োজন ছিল।
খালেদা জিয়া বলেন, যারা সংবিধান নিজেদের ইচ্ছে মত পরিবর্তন করে গায়ের জোরে নির্বাচন করে অবৈধ সরকার গঠন করেছে তারাই আবার গণতন্ত্রের কথা বলছে।
তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ সমস্ত চক্ষুলজ্জাকে বিসর্জন দিয়ে দেশে সঙ্কটকে প্রলম্বিত করছে। তারা বিরোধীদলকে নির্মূল করতে সারাদেশে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের তালিকা তৈরি করে তাদের হত্যা করছে।
খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলনে ঠাকুরাগাঁও, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, লাকসামে বিএনপি নেতাকর্মীদের খুন ও গুমের তালিকা তুলে ধরেন। এছাড়া দেশের প্রধান সংবাদপত্রের খুন হত্যা ও দেশের মানবধিকার লংঘনের খবর তুলে ধরেন।
তামাশার নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সরকারের বেশির ভাগ মন্ত্রী-এমপি জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এটি অবৈধ সংসদ। সুতরাং এই সরকারের মুখে জনগণের কথা শোভা পায় না। আজ মঙ্গলবার বিকালে মিনিটে রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে বেগম জিয়া এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই । গণতন্ত্রকে হত্যা করে এই ক্ষমতায় বসেছে। তারা প্রতিদ্বন্দ্বী সকল দলকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ৫ ভাগ ভোটও পড়েনি দাবি করে বেগম জিয়া বলেন, এই নির্বাচনে যারা অংশ নিয়েছে তাদের মধ্যে আগেই আসন ভাগাভাগি হয়েছে। আমাদেরকেও আসন দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা তা চাইনি। বেগম জিয়া বলেন, আমরা চেয়েছিলাম একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। তিনি বলেন, এই সংসদের নেতা, উপনেতা, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার কেউ-ই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। সুতরাং এই সরকার ও সংসদ অবৈধ।
প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি একতরফা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ১৫ জানুয়ারি হোটেল ওয়েস্টিনে সংবাদ সম্মেলন করেন খালেদা জিয়া। সেদিন তিনি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এর পর তিনি গত ২০ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত রয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আর এ গনি, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার, লে.জে.(অব) মাহবুবুর রহমান, ব্রি.জে. (অব) আ স ম হান্নান শাহ, বেগম সারওয়ারী রহমান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড.আবদুল মঈন খান।
১৯ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে উপস্থিত আছেন জাতীয় পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ, জামায়াতের শূরা সদস্য মশিউল আলম, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য আবদুল হালিম, ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ নেজামী, এনপিপি চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু, খেলাফত মজলিস সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, জাগপা’র শফিউল আলম প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান,এনডিপি চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা, বাংলাদেশ ন্যাপ সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, ইসলামিক পার্টির এমএ মবিন, ন্যাপ ভাসানির শেখ আনোয়ারুল হক, মুসলিম লীগের কামরুজ্জামান খসরু, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন মনি।