thai-electionথাইল্যান্ডের বিরোধী দলবিহীন বিতর্কিত নির্বাচন আজ। এ নির্বাচন প্রতিহত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ইংলাকবিরোধীরা। অনেক এলাকায় ব্যালট বাক্স পরিবহনে বাধা দিচ্ছে তারা। ব্যাংককে তৃতীয় এবং শেষ দফার কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একত্র হয়েছে কয়েক লাখ বিক্ষোভকারী।

এ ছাড়া ব্যাপক গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে নির্বাচনপন্থি ও বিরোধীদের মধ্যে। ফলে যে কোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নির্বাচনের নিরাপত্তায় ৯৩ হাজার ভোটকেন্দ্রে ১ লাখ ৩০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ব্যাংককে ১০ হাজার পুলিশ ও ৫ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। দেশব্যাপী নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এর মধ্যে থাইল্যান্ডে গোলাগুলি, বিস্ফোরণ এবং সরকারবিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খবর :এএফপি ও রয়টার্স অনলাইন।

থাইল্যান্ডজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। শনিবার ব্যাংককের অদূরে এরওয়ান শহরে সরকারপন্থি ও বিরোধীদের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ১০ জন আহত হয়েছে বলেও জানা গেছে। এ ছাড়া এদিন ব্যাংককে কমপক্ষে দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে হতাহতের খবর সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ব্যালট পেপার সরবরাহ বন্ধের চেষ্টায় গতকাল শনিবার থেকে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী বেশ কয়েকটি সরকারি ভবন অবরুদ্ধ করে। তাদের অবরোধের মুখে অনেক এলাকায় পেঁৗছাতে পারেনি ব্যালট বাক্স। ব্যালট পেপার সরবরাহ ঠেকাতে ইতিমধ্যেই সারাদেশে ডাকঘরসহ অনেক সরকারি ভবন ঘেরাও করে রেখেছে তারা।

নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্র ঘেরাও কর্মসূচি রয়েছে তাদের। যে কোনো মূল্যে তারা ভোট দিতে আসা মানুষকে ভোটদানে বিরত রাখতে চাইছে। এক নির্বাচন কমিশনার বিবিসিকে বলেন, বিক্ষোভকারীদের বাধার কারণে আজ হয়তো ১০ শতাংশ ভোটকেন্দ্র খোলাই যাবে না।

বিরোধী নেতা সুথেপ থাউগসুবান নির্বাচনে বাধা দেওয়া হবে না বলে সম্প্রতি যে ঘোষণা দিয়েছিলেন বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের কর্মকাণ্ডে তার বিপরীত চিত্র প্রতিফলিত হচ্ছে। রোববার থাইল্যান্ডে বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা সুথেপ থাউগসুবান।

তিনি বলেন, জনগণকে এই একতরফা নির্বাচন বয়কট করতে বলছি আমরা। ইংলাক সরকার শক্তি প্রয়োগ করে ভোট কিনে নিয়েছে। তবে থাই নাগরিকদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা। তিনি জানান, জনগণ যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে তার সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘জনগণ যেন নিরাপদে ভোট দিতে পারে তার সব ব্যবস্থাই করেছি। এটা জনগণের অধিকার। গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে এই ভোট দেওয়াটা প্রয়োজন।’ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার শ্যামদেশটিতে দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বলতে যা বোঝায় তা কখনও আসেনি। বর্তমানে সমগ্র দেশ দু’ভাগে বিভক্ত।

একদিকে সরকারপন্থি মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত সংগরিষ্ঠদের সমর্থিত লাল শার্ট। অন্যদিকে অভিজাত শ্রেণী সমর্থিত বিরোধী দল হলুদ শার্ট সমর্থকরা। ২০১১ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসা ইংলাক সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে গত বছর নভেম্বরে বিক্ষোভ শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন ইংলাক।

কিন্তু বিরোধীরা নির্বাচন বয়কট করে সরকার পতনের দাবিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, বিরোধীরা গত ২২ বছর ধরে থাই নির্বাচনে জিততে পারেনি। তারা নির্বাচনে অংশ নিলেও প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার বিজয় সুনিশ্চিত বলেই মনে করেন অনেকে।

 @রেজওয়ান