বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয়ের (বাউবি) আইন প্রোগ্রামের সনদ জালিয়াতি, ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে দুর্নীতি, ২০০৫ এ চালু হওয়া ‘স্কুল অব ল’ স্থগিতকরণ এবং অদ্যবধি পর্যন্ত আটকে রাখাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তাদেরকে অনতিবিলম্বে স্থায়ী বহিষ্কার ও তদন্ত করে শাস্তির দাবী জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বাউবি শাখা। বৃহষ্পতিবার সকালে ছাত্ররা এসব দাবীতে গাজীপুরের বোর্ডবাজারের মূল ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে। এসময় বক্তব্য রাখেন, রিতু, আকলিমা আক্তার হ্যাপি, লিটন হোসেন, খান মোহাম্মদ আরমান, মাসুদুর রহমান, সালমান ফারসি প্রমূখ।

ছাত্ররা জানান, বিশ^বিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দুই শিক্ষক অধ্যাপক নাহিদ ফেরদৌসী ও সহকারী অধ্যাপক বায়েজিদ হোসেন আইন বিভাগের সনদ জালিয়াতি, ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে দুর্নীতি, কর্তব্যে অবহেলা ও ছাত্রনিপীড়নে জড়িত। তারা এসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে বিওজি কর্তৃক স্বচ্ছ নিরপেক্ষ বিভাগীয় তদন্ত পরিচালনা সাপেক্ষে অব্যাহতি এবং স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবী জানান।

আইন প্রোগ্রামের ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের এ দুইজন শিক্ষক বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের উপর হুমকি-ধামকি ও ভয়-ভীতি দেখাত। সেমিস্টার ফাইনালে তারা আমাদেরকে টার্গেট করে নি¤œ সিজিপিএ প্রদান করে। ব্যাচভিত্তিক গড় সিজিপিএ ২.৫০ থেকে ২.৮০ করে রাখে যা সম্পূর্ণভাবে অন্যায় এবং বেআইনী।

মুক্তা ফাতেমা নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, মাত্র ৭০ হাজার টাকায় সনদ জালিয়াতির ঘটনায় আমাদের সিনিয়র ভাই-বোনদের ইন্টিমেশন সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম বার কাউন্সিল স্থগিত রেখেছে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোন ইতিবাচক উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সনদ জালিয়াতির ঘটনার দায়ভার এই দুইজন শিক্ষক কোন ভাবেই এড়াতে পারে না। অনতিবিলম্বে আমাদের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে এবং এখন থেকেই আইন প্রোগ্রামের সকল কার্যক্রম থেকে এই দুই জনকে অব্যাহতি দিতে হবে। এটা আমাদের প্রতিটা শিক্ষার্থীর দাবী।

৯ম ব্যাচের শিক্ষার্থী তাহসান বলেন, বাউবিতে ২০০৫ সালে ”স্কুল অব ল’ চালু করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে কোন কারণ ছাড়াই ”স্কুল অব ল’ সামাজিক বিজ্ঞান মানবিক ও ভাষা স্কুলের অধীনে দেওয়া হয়, যা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং অযৌক্তিক। এমনকি পরবর্তীতে সামাজিক বিজ্ঞান মানবিক ও ভাষা স্কুল থেকে ‘স্কুল অব ল’ আলাদা করার সুপারিশ করা হয়। কিন্তু অধ্যাপক নাহিদ ফেরদৌসী ও সহকারী অধ্যাপক বায়েজিদ হোসেন দায়িত্ব গ্রহণ না করে ”স্কুল অব ল’ আটকে রাখে। কেননা তারা বাউবিতে শিক্ষা প্রদানে সময় দেন না। সপ্তাহে মাত্র ১ দিন সময় দেন। তারা অন্যান্য জায়গায় কাজ করে এবং বাউবিকে পার্ট টাইম জবের অংশ মনে করে।