গাজীপুরে তিনদিন ব্যাপী কর্মবিরতি, বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন শেষে বৃহষ্পতিবার কাজে যোগ দিয়েছে আন্দোলনরত বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়ায় কারখানাগুলোতে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এদিন বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল। এছাড়াও বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য রোধে বিএনপি ও যুবদলের নেতা-কর্মী সহ শ্রমিক-মালিক ও এলাকাবাসী মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় পিকেটিং, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে।

পুলিশ, শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানান, কারখানাগুলোতে নারী-পুরুষ শ্রমিক নিয়োগে বৈষম্য দুর করে সমহারের ভিত্তিতে পুরুষ শ্রমিক নিয়োগ ও চাকুরিচ্যুতদের পুনর্বহাল, শ্রমিকদের বেতনভাতা বৃদ্ধি, শ্রমিকদের সাথে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহার এবং পুরুষ শ্রমিকদেরকে বিনা নোটিশে অযৌক্তিক কারণ দেখিয়ে ছাঁটাই বন্ধসহ বিভিন্ন দাবীতে বেকার শ্রমিকসহ বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকদের নিয়ে গত তিনদিন ধরে আন্দোলন করে বাংলাদেশ বেকার সংগঠণ নামের একটি সংগঠণের সদস্যরা। এসময় তারা বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি করে। গত তিনদিন ধরে তারা নানা অজুহাতে সড়ক অবরোধ, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ, হামলা ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এতে পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন কারখানা বন্ধের উপক্রম হয়। শ্রমিক বিক্ষোভের এ পরিস্থিতিতে জেলার শতাধিক কারখানা পর্যায়ক্রমে ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এরপ্রেক্ষিতে শিল্প কারখানায় বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য প্রতিরোধ করতে বুধবার বিএনপি ও যুবদলের নেতা-কর্মী সহ স্থানীয় শ্রমিক-মালিক ও এলাকাবাসী মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় পিকেটিং ও সমাবেশ করলে আন্দোলনকারীরা পিছু হটে। বৃহষ্পতিবার সকালে প্রায় সব শ্রমিক কাজে যোগ দিলে কারখানাগুলোতে কর্মচাঞ্চল্য পুনঃরায় ফিরে আসে। এদিন শ্রমিক আন্দোলনের খবর পাওয়া যায় নি। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এদিন বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্য সকাল থেকে মোতায়েন ছিল। তারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দিনভর কারখানা এলাকায় টহল দেয়।

এদিকে কল-কারখানায় চলমান বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য রোধে বৃহষ্পতিবারেও বিএনপি ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা মহানগরীর বিভিন্নস্থানে পিকেটিং ও সমাবেশ করেছে। তারা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন কল-কারখানার সামনে ও আশেপাশের এলাকায় প্রহরা বসিয়েছে। এসব টিমে নেতৃত্ব দেন গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সুরুজ আহমেদ, বাসন থানা বিএনপির সভাপতি তানভীর সিরাজ ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনির, গাজীপুর মহানগর কৃষক দলের আহ্বায়ক মোঃ আতাউর রহমান, বাসন থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত হোসেন বাবু , যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, মিজানুর রহমান নয়া মন্ডল, রফিকুল ইসলাম রাতা, প্রমূখ।

এছাড়াও বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য রোধে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় দিনভর পিকেটিং করেছে শ্রমিক-মালিক ও এলাকাবাসী। সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মহানগরীর মালেকের বাড়ি এলাকায় মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে আব্দুল হামিদ, হাজী কফিল উদ্দিন ও শাহজাহানসহ শতাধিক এলাকাবাসী। এসময় তাদের সঙ্গে যোগ দেন আশেপাশের একাধিক কারখানার মালিক-শ্রমিক ও বাড়ির মালিক। পরে তারা একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে এলাকায় টহল দিয়ে প্রহরা দেয়। এসময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের সহযোগিতা করে।