বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থামবে না বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। আজ সোমবার দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ৮ মহানগরে করা সমাবেশে এসব কথা বলেল তারা।

আজ সকালে গাজীপুর জেলা ও মহানগর, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর, খুলনা জেলা ও মহানগর, বরিশাল মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা, রাজশাহী জেলা ও মহানগর, রংপুর জেলা ও মহানগর, ফরিদপুর জেলা ও মহানগর, ময়মনসিংহ মহানগর, কুমিল্লা উত্তর ও দক্ষিণ জেলা এবং মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এই সমাবেশ হয়।

গাজীপুরের সমাবেশে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজকে আপনাদের মাঝে কীসের ভয়? দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে যে আন্দোলন হবে, তাতে কি আপনারা ভয় পাবেন? এদেশের যদি টগবগে তরুণ-মানুষ এগিয়ে না আসে তাহলে দেশের গণতন্ত্র চিরদিনের জন্য মুছে যাবে, এদেশের স্বাধীনতা চিরতরে মুছে যাবে। অনেক রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করেছি, কারো দাসত্ব করার জন্য নয়। রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধীনতা রক্ত দিয়েই রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশের ওপর হায়নার লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে। এ লোলুপ দৃষ্টি যাতে কেউ দিতে না পারে, সেজন্য অন্ধ করে দিতে হবে। এ জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা দরকার।’

সমাবেশে জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা ছাইয়েদুল আলম বাবুল, শওকত হোসেন সরকার, হাসান উদ্দিন সরকার, রিয়াজুল হান্নান, ওমর ফারুক সাফিন প্রমুখ।

নারায়ণগঞ্জের সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের নেত্রী, আধিপত্যবাদবিরোধী নেত্রী এবং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক। গণতান্ত্রিক বিশ্বের মানুষ বিশ্বাস করে মাদার অব ডেমোক্রেসি খালেদা জিয়া। বিরুদ্ধে মিথ্যা ভুয়া অভিযোগ এনে মামলা করে খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হয়েছে। এর একমাত্র কারণ তাদের (আওয়ামী লীগ) যে গুরুদেব আছে, যারা তাদের ক্ষমতায় রাখছে তাদেরকে সন্তুষ্ট করতে। সব অধিকার থেকে বঞ্চিত করে আমরা আজ স্বাধীন দেশে পরাধীন নাগরিক হিসেবে বসবাস করছি।’

তিনি বলেন, ‘গত সাত বছর ধরে দেশত্রেী বেগম খালেদা জিয়া কোনো কথা বলতে পারছেন না। তাকে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা না করে বন্দী রেখে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হচ্ছে।’

চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে সরকারের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘জনগণের ভোট চুরি করেছেন, এখন তা ফেরত দেন।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন থামবে না। আমরা কেউ বড় না, আমরা সবাই সমান। রাজপথে তা আমাদের প্রমাণ করতে হবে।’

মহানগর বিএনপির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন, বেনজির আহমেদ টিটো, নজরুল ইসলাম আজাদ, মাহমুদুর রহমান সুমন, আবু আল ইউসুফ খান টিপু প্রমুখ।

ময়নসিংহের সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘যেভাবে আপনারা নির্বাচন বর্জন করেছেন, ঠিক সেভাবে এই আন্দোলনও একযোগে ঐক্যবদ্ধভাবে সফল করবেন।’

সরকারকে হুঁশিয়ারি তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে এর পরিণতি ভালো হবে না।’

সমাবেশে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শিরিন সুলতানা, শাহ ওয়ারেস আলী মামুন, আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ, ডা. মাহাবুবুর রহমান লিটন, এনায়েত উল্লাহ কালাম, জাকির হোসেন বাবলু প্রমুখ।

বরিশাল সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে কারাগারের চেয়েও খারাপ অবস্থায় আছেন। তার সঙ্গে চাইলেই আমরা দেখা করতে পারি না, ওনার কোনো আদেশ-নির্দেশ পাই না। তিনি এখন হাউজ অ্যারেস্ট অবস্থায় আছেন।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে এ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা মজিবর রহমান সরোয়ার, বিলকিস জাহান শিরীন, আকন কুদ্দুসুর রহমান, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, আবুল হোসেন, মেজবাহউদ্দিন ফরহাদ প্রমুখ।