আমি লজ্জিত, অপহরণে জড়িত থাকলে আমার স্বজনরাও ছাড় পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, ‘নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পাশাকে অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনায় আমার স্বজনরা জড়িত থাকলে তারাও ছাড় পাবেন না। এ ঘটনায় আমি বিব্রত, লজ্জিত, দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের সুষ্ঠু বিচার হবে। কেউ ছাড় পাবে না।’
আজ শুক্রবার সকালে দেলোয়ার হোসেনকে দেখতে রামেক হাসপাতালে যান সিংড়ার সংসদ সদস্য জুনাইদ আহমেদ পলক। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেন।
দেলোয়ার হোসেন বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৭ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন। জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিব রুবেলের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় দেলোয়ার হোসেন পাশাকে অপহরণ করে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, অপহরণকারীদের সবাই প্রতিমন্ত্রী পলক ও তার শ্যালক রুবেলের ঘনিষ্ট অনুসারী। বিষয়টি গণমাধ্যমে এলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। আওয়ামী লীগ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, এমপি-মন্ত্রীদের স্বজনদের কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না।
পলক বলেন, ‘আমি বিদেশে থেকেও ঘটনার খোঁজ নিয়েছি। বৃহস্পতিবার রাত ১টায় দেশে ফিরেছি। ভাবতেও পারিনি, নাটোরের মাটিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে। প্রধানমন্ত্রী এ ঘটনার খোঁজ-খবর রাখছেন। এ ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের সুষ্ঠু বিচার হবে। কেউ ছাড় পাবে না।’
গত সোমবার পলকের শ্যালকের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় নাটোর জেলা প্রশাসক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রথমে দেলোয়ার হোসেনের ভাইসহ তিনজনকে অপহরণ করে জিম্মি করা হয়। পরে বিকেলে দেলোয়ারকে অপহরণ করে তার ভাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সন্ধ্যার পর নির্যাতন করে অচেতন অবস্থায় ফেলে দেওয়া হয় দেলোয়ারকে। এরপর তাকে নাটোর হাসপাতাল থেকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। এক রাত আইসিইউতে রাখা হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, লুৎফুল হাবীব রুবেল আমার আত্মীয়, তা অস্বীকার করব না। তবে আত্মীয়তার সুবাদে বা রাজনৈতিক কারণে কেউ বাড়তি সুবিধা পাবেন না। বরং এমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যা এমপি–মন্ত্রীর স্বজনদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ব্যাপারে আমরা দলের পক্ষ থেকেও খুব অল্প সময়ের মধ্যে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
দেলোয়ার হোসেনের ভাই এমদাদুল হক বলেন, আমার ভাইয়ের অবস্থা এখন কিছুটা ভালো, কথা বলতে পারছে। তবে তার চোখের অবস্থা খুবই খারাপ। চোখ মেলতে পারছে না। চোখে ঝাপসা দেখছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। মন্ত্রী আমার ভাইকে দেখতে এসেছিলেন। তিনি বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। এখন দেখা যাক মন্ত্রী কি করেন?